যাপিত জীবন ডেস্ক
প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২২ ১৫:২৮ পিএম
আপডেট : ৩০ নভেম্বর ২০২২ ১৬:২১ পিএম
চলছে বিয়ের মৌসুম। বিয়ের নিমন্ত্রণে পোশাকের সঙ্গে চাই মানানসই সাজগোজ। ফাউন্ডেশন, আইলাইনার, আইশ্যাডো, কাজল কিংবা মাশকারা ছাড়া সাজ অসম্পূর্ণ। বিভিন্ন প্রসাধনী ব্যবহার করা হয় মেকআপের জন্য। কিন্তু এত কিছু একসঙ্গে নেওয়ার জন্য প্রয়োজন ত্বকের প্রস্তুতি।
এ প্রস্তুতির জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। কিন্তু সেগুলো সম্পর্কে অনেকেই ভাবেন না। অনেক সময় মেকআপ করার পর যতটা সুন্দর দেখায়, কিছুক্ষণ পর তা ম্লান হতে শুরু করে। এর কারণ, ত্বকের কোনোরকম প্রস্তুতি ছাড়াই মেকআপ করা। ত্বক পরিষ্কার করা, ময়েশ্চারাইজার লাগানোর মতো ধাপগুলো ত্বককে সুরক্ষিত রাখে। মেকআপ করার আগে স্কিনকেয়ার রুটিন এড়িয়ে গেলে দীর্ঘমেয়াদি ফল পাওয়া যাবে না।
মেকআপ দীর্ঘস্থায়ী করার কিছু নিয়ম
ধাপ ১ : স্কিনকেয়ার রুটিনে সবচেয়ে জরুরি হলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। অর্থাৎ ত্বকের উপযোগী ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোয়া।
ধাপ ২ : মুখের ত্বকের মৃত কোষ অপসারণ করার জন্য প্রয়োজন এক্সফোলিয়েট করা। তা না হলে ত্বকের ছিদ্রগুলো আটকে থাকতে পারে। এক্সফোলিয়েটিং শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রে খুব কার্যকর। দাগ দূর করতেও সাহায্য করে। তবে সংবেদনশীল ত্বক হলে কিছু এক্সফোলিয়েটিং ফরমুলা ত্বকের জন্য কঠোর হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ত্বকের একটি ছোট অংশে পরীক্ষা করে দেখতে হবে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় কি না। ত্বক পরিষ্কার করে তারপর এক্সফোলিয়েট করতে হবে। মুখ ধুয়ে ফেলার পর ত্বকে পছন্দের এক্সফোলিয়েটর দিয়ে মৃদুভাবে সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করতে হবে। তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। ঠোঁটও এক্সফোলিয়েট করা জরুরি। আর ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে তো বটেই।
ধাপ ৩ : রূপ রুটিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ টোনার। ত্বক শান্ত ও সুরক্ষিত করতে সাহায্য করে এটি। সঠিকভাবে টোনার কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, তা অনেকেই জানেন না। একটি তুলার ওপর অল্প পরিমাণে টোনার নিয়ে মুখের ত্বকে লাগাতে হয়। একই সঙ্গে ঘাড়েও আলতো করে বুলিয়ে নিতে হবে। ত্বকের ছিদ্রগুলো সংকুচিত ও ত্বক মসৃণ করতে টোনিং ভীষণভাবে সাহায্য করে। বাজারে অনেক ভালো মানের টোনার পাওয়া যায়। ত্বকের ধরন বুঝে কিনতে হবে। টোনিংয়ের জন্য ঠান্ডা পানির ব্যবহার ত্বকের ছিদ্র সংকুচিত করে। এ ছাড়া মেকআপের জন্য ত্বক প্রস্তুত করতে সাহায্য করে।
ধাপ ৪ : নিজের ত্বকের ধরন বুঝে বেছে নিতে হবে ময়েশ্চারাইজার। যেকোনো ঋতুতেই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। ফাউন্ডেশন ও অন্যান্য বেজ মেকআপ প্রোডাক্ট ত্বকের ওপর সুন্দরভাবে বসার জন্য প্রয়োজন ময়েশ্চারাইজিং করা। ত্বক তৈলাক্ত প্রকৃতির হলেও এটা এড়িয়ে যাওয়া যাবে না।
ধাপ ৫ : সানস্ক্রিনকে বলা যায় ত্বকের লাইফ সেভার। এর উপকারিতা আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই। গরম কিংবা শীত যেকোনো সময়ই এটা ব্যবহার করা উচিত। তবে ত্বকের ধরন বুঝে বিশেষজ্ঞের পরামর্শে কেনা উচিত।
ধাপ ৬ : ক্লিনজিং, এক্সফোলিয়েটিং, টোনিং ও ময়েশ্চারাইজিং ত্বকের যত্নের রুটিনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু যখন সারা দিনের জন্য মেকআপ করা হয়, তখন প্রাইমার প্রয়োগ করা সবচেয়ে প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে। প্রাইমার ত্বককে মসৃণ ক্যানভাস হয়ে উঠতে সাহায্য করে। এতে মেকআপ খুব সুন্দরভাবে বসে। মেকআপের জন্য ত্বক প্রস্তুত করা এবং আর্দ্র রাখার ক্ষমতা রয়েছে প্রাইমারের। এটি ত্বক ও ফাউন্ডেশনের মধ্যে প্রতিরক্ষামূলক স্তর হিসেবে কাজ করে। এজন্য মেকআপের কোনো দীর্ঘমেয়াদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
ফাউন্ডেশন, ব্লাশন, ব্রোঞ্জার ও অন্যান্য ফেস প্রোডাক্টের স্থায়িত্ব বাড়াতে পারে প্রাইমার। মেকআপ করার পর যাদের ত্বক কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তৈলাক্ত হয়ে যায়, তাদের জন্য ম্যাটিফাইং প্রাইমার ব্যবহার করা উচিত। অন্যদিকে শুষ্ক ত্বক যাদের, তারা হাইড্রেটিং প্রাইমার ব্যবহার করতে পারেন। তা হলেই মেকআপ হবে দীর্ঘস্থায়ী ও উজ্জ্বল।