× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

অ্যাকনে যখন মাথার ত্বকে

যাপিত জীবন ডেস্ক

প্রকাশ : ১৯ ডিসেম্বর ২০২২ ১৫:৫৫ পিএম

আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২২ ১৮:০৫ পিএম

অ্যাকনে যখন মাথার ত্বকে

মুখের মতো স্ক্যাল্পেও হতে পারে অ্যাকনে। আর তা বাড়িয়ে দিতে পারে চুল পড়ার সমস্যা। তবে ত্বকের মতো করে তো আর স্ক্যাল্পের যত্ন নেওয়া সম্ভব নয়। থাকছে কিছু সহজ টিপস্।

মুখের অ্যাকনে দেখেছেন, ব্যাকনের (পিঠের অ্যাকনে) কথা শুনেছেন কিন্তু স্ক্যাল্প? আশ্চর্যের বিষয় হলো, ‘স্ক্যাল্পনে’ বা স্ক্যাল্পের অ্যাকনে কিন্তু মোটেই নতুন কিছু নয়। সমীক্ষা বলে, প্রত্যেকেই কখনও না কখনও এ সমস্যায় ভুগেছেন। কিন্তু চুলের আড়ালে থাকে বলে যেহেতু এ ধরনের পিম্পল সচরাচর নজরে পড়ে না, তাই তা নিয়ে কেউই বিশেষ ভাবেন না। ভেবে দেখুন, মাথায় চিরুনি চালাতে গিয়ে হঠাৎ কোথাও খোঁচা বা ব্যথা লাগার সমস্যা সবারই কখনও না কখনও হয়েছে। কিন্তু তা নিয়ে সেভাবে মাথা ঘামাননি। আর তার মূল কারণ স্ক্যাল্পনে থেকেও যে চুলের ক্ষতি হতে পারে, তা অনেকের অজানা। অনেকেই হঠাৎ চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে যাওয়া নিয়ে অভিযোগ করেন। অথচ এর নেপথ্যে যে স্ক্যাল্পনের সমস্যাও থাকতে পারে, তা বুঝতে পারেন না। অ্যাকনে হোক বা পিম্পল, ত্বকের নির্দিষ্ট রন্ধ্রের মুখ আটকে গেলেই এ ধরনের সমস্যা হয়। তা থেকে ওই নির্দিষ্ট রন্ধ্রেরও বেশ ক্ষতি হয়। সুতরাং স্ক্যাল্পে এ ধরনের সমস্যা হলে হেয়ার ফলিকলের পুষ্টিতে বাধা পড়ে। যার ফলে চুল পড়ার সমস্যা, শুষ্কতা, নির্জীবতা বেড়ে যেতে পারে। অ্যাকনের প্রবণতা যার যত বেশি, তার চুলের ক্ষতির আশঙ্কাও তত বেশি।

স্ক্যাল্পনে কী?

মুখের তৈলাক্ত অংশে তেল, ধুলোবালি, মৃত কোষ, ঘাম ইত্যাদি জমে অ্যাকনে হয়। স্ক্যাল্পনেও ঠিক তেমনভাবেই মাথায় অর্থাৎ স্ক্যাল্পে হয়। অনেক ক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন থেকেও এ ধরনের পিম্পল হতে পারে। একে ফলিকুলাইটিস বা হেয়ার ফলিকলের ইনফ্ল্যামেশনও বলতে পারেন। এমনিতে চুলে ঢাকা থাকে বলে দেখা যায় না, তবে হাত দিলে ফুসকুড়ির মতো অনুভব করা যায়। অনেকের হেয়ারলাইন বরাবর হোয়াইটহেডসের মতোও দেখা যায়। কিছু পিম্পলে ব্যথা হয়, কিছু পিম্পল থেকে শুধু ইচিং হয়। দুই ধরনের স্ক্যাল্পনেই চুলের পক্ষে ক্ষতিকর। কারণ উভয় ক্ষেত্রেই হেয়ার ফলিকল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চুলের সার্বিক পুষ্টিতে বাধা দেয়। যাদের খুশকির সমস্যা রয়েছে বা ত্বক তৈলাক্ত প্রকৃতির, তাদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা বেশি হয়। আবার স্ক্যাল্প অতিরিক্ত শুষ্ক হলেও এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। স্ক্যাল্প এবং চুল কতটা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখছেন, তার ওপর নির্ভর করেও স্ক্যাল্পনের প্রবণতা বাড়তে বা কমতে পারে।

যে কারণে হয়

  • মৃত কোষ বা অতিরিক্ত তেল হেয়ার ফলিকলের গোড়ায় জমে যাওয়া।
  • শ্যাম্পু, তেল, কন্ডিশনার, হেয়ার সেরামসহ বিভিন্ন হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্টের বিল্ডআপ।
  • চুল ভালোভাবে না ধোওয়া।
  • ওয়ার্কআউট করার পর বা গরমে ঘাম স্ক্যাল্পে বসতে দেওয়া।
  • টুপি বা অন্যান্য মাথা ঢাকা দেওয়ার জিনিস বেশি পরা।
  • অতিরিক্ত স্ট্রেস, হরমোনাল ইমব্যালান্সের মতো কারণ, যা আপাতভাবে অ্যাকনের সমস্যা বাড়ায়।
  • কেরাটিন বিল্ডআপ কিংবা খুশকির সমস্যা।

এ ছাড়া ইস্ট এবং স্ট্যাফাইলোকক্কাসের মতো বেশকিছু জীবাণু সংক্রমণ থেকে এ ধরনের পিম্পল হতে পারে। অনেক ডার্মাটোলজিস্ট মনে করেন, ডায়েটের ভূমিকা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। যারা শর্করা জাতীয় কার্বোহাইড্রেট বেশি পরিমাণে খান, তাদের মধ্যে এ সমস্যা সবচেয়ে কমন।

যা করবেন

সমস্যার কারণ একবার বুঝে গেলে সেই মতো সমাধানের পথ খুঁজে নিতে হবে। যেমন যদি অতিরিক্ত ঘাম থেকে এ ধরনের সমস্যা হচ্ছে বলে মনে হয়, সে ক্ষেত্রে স্ক্যাল্প যতটা সম্ভব শুকনো রাখার চেষ্টা করতে হবে। ডায়েট থেকে অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট বাদ দিয়ে দেখতে পারেন। পাশাপাশি স্ক্যাল্প পরিষ্কার এবং খোলামেলা রাখার চেষ্টা করতে হবে। অতিরিক্ত অয়েলি স্ক্যাল্প হলে এমন প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে পারেন, যা স্ক্যাল্পকে তেলমুক্ত রাখতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি কোনো ধরনের প্রোডাক্ট বিল্ডআপ যেন না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। নিয়মিত চুলের সংস্পর্শে যা যা আসছে, যেমন বালিশ, চিরুনি, চাদর, টুপি, হেয়ার অ্যাকসেসরিজ সবই পরিষ্কার রাখতে হবে। পারলে প্রতিদিন অ্যান্টিসেপটিক পানিতে ধুয়ে ফেলুন।

যা করবেন না

কিছু অভ্যাস আবার একেবারে বন্ধ করতে হবে। মুখের অ্যাকনের মতোই স্ক্যাল্পনে খোঁটাখুঁটি করবেন না। এতে ভেতরে জমে থাকা পুঁজ (পুঁজ না থাকলেও সেরাম জাতীয় পদার্থ) বেরিয়ে অন্যত্র অ্যাকনে হতে পারে। ইনফেকশনও হয়ে যেতে পারে, যা চুল পড়া, স্ক্যাল্পে ব্যথা এবং স্ক্যাল্পনের প্রবণতা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই ঘন ঘন স্ক্যাল্পে হাত দেওয়ার অভ্যাস থাকলে প্রথমেই তা কমাতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে চিরুনি চালানোর ব্যাপারেও। সরু চিরুনি বা ধারালো চিরুনির পরিবর্তে কাঠের মোটা চিরুনি ব্যবহার করুন। স্ক্যাল্প ব্রাশ করার সময় খুব ধীরে করুন এবং যতটা সম্ভব কম প্রেশার দিন। বালিশে স্যাটিনের কভার পরাতে পারেন। এতে স্ক্যাল্প ও চুলে ফ্রিকশন কম হবে।

শ্যাম্পুতে সমাধান

স্ক্যাল্প অ্যাকনে কমাতে মূলত শ্যাম্পুই যথেষ্ট। তবে বাজারচলতি যেকোনো শ্যাম্পু নয়। বেছে নিতে হবে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটারি মেডিকেটেড শ্যাম্পু। যাতে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড বা সালফার রয়েছে, এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। ভালোভাবে চুল এবং স্ক্যাল্পে ফেনা করতে হবে। একদিন ছাড়া ছাড়া এ ধরনের শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। অন্তত পাঁচ মিনিট স্ক্যাল্পে এই শ্যাম্পু লাগিয়ে রেখে তারপর ধুয়ে নিন। এ ধরনের শ্যাম্পু স্ক্যাল্পনের সঙ্গে সঙ্গে খুশকির (যদি থাকে) সমস্যাও কমাবে। স্ক্যাল্প তৈলাক্ত হলে সেই ধরনের চুলের জন্য বিশেষ শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন। তবে এ ধরনের শ্যাম্পু স্ক্যাল্প শুষ্ক করে খুশকির সমস্যা বাড়াতে পারে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। গ্লাইকলিক অ্যাসিড বা টি-ট্রি অয়েলে সমৃদ্ধ প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে পারেন। ভালো ফল পাওয়া যাবে। এ ছাড়া শ্যাম্পু কেনার সময় কয়েকটি জিনিস দেখে কিনতে পারেন। স্ক্যাল্পনের পক্ষে অ্যান্টি-অ্যাকনেজেনিক, অ্যান্টি-কমেডোজেনিক হেয়ার প্রোডাক্ট ভালো। শুধু শ্যাম্পুই নয়, চুলে যা-ই ব্যবহার করবেন, তা যেন পোরস ক্লগ না করে, সেটা খেয়াল রাখুন। এ ছাড়া মাসে একবার (বেশি করলে চুল অত্যন্ত রুক্ষ হয়ে পড়বে) ক্ল্যারিফাইং শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। এটি স্ক্যাল্প ক্ল্যারিফাই করতে এবং বিল্ডআপ সরাতে সাহায্য করবে। তবে একবার শ্যাম্পু করলেই যে উপকার পাবেন, তা নয়। যেকোনো শ্যাম্পু কাজ করতে অন্ততপক্ষে ছয় সপ্তাহ সময় নেয়। সমস্যার পরিমাণ অনুযায়ী কারও ক্ষেত্রে আরও বেশি সময় লাগতে পারে।

প্রিভেনশন ইজ বেটার দ্যান কিওর

  • আগে থেকেই যদি স্ক্যাল্পনে প্রতিরোধ করা যায়, তাহলে চুল পড়া এবং স্ক্যাল্পের সমস্যা দুই-ই আটকানো সম্ভব। আর প্রতিরোধের পথে প্রথম পদক্ষেপ হলো স্ক্যাল্প হাইজিন মেনে চলা।
  • কেমিক্যাল-ফ্রি, হাইপোঅ্যালার্জেনিক হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন।
  • অতিরিক্ত হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ, ডি ও ই রাখুন ডায়েটে। প্রয়োজনে সাপ্লিমেন্টসও নিতে পারেন।
  • স্ক্যাল্প ময়েশ্চারাইজড রাখুন। প্রয়োজনে কলা, ডিম, মধুর মতো নারিশিং উপকরণ দিয়ে বানানো হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন।
  • লেবু এবং অ্যাপল সিডার ভিনিগার খুশকি দূর করতে সাহায্য করে। স্ক্যাল্পনে প্রতিরোধেও সাহায্য করবে।
  • মাঝে মাঝে গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে চুলে জড়িয়ে রাখতে পারেন। পানির ভাপে ইনফেকশনের সমস্যা কমবে।
  • শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করার পর তা অবশ্যই ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে। কোনো রেসিডিউ যেন চুলে বা স্ক্যাল্পে না লেগে থাকে খেয়াল রাখুন।
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা