প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৩ ১৪:০১ পিএম
আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৩ ১৪:২৭ পিএম
মিষ্টি আলুতে মিলবে নানান উপকারিতা। এটি হার্ট ও ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে, দৃষ্টিশক্তি সুরক্ষিত রাখে, টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায় এবং রক্ষা করে অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে। জানুন মিষ্টি আলুর উপকারিতা ও রান্নার পদ্ধতি।
পুষ্টি উপকারিতা : সব আলু পুষ্টিতে সমৃদ্ধ এবং স্বাস্থ্যকর বলে মনে করেন নিউট্রিশনিস্ট ও ডায়েটিশিয়ানরা। কিন্তু মিষ্টি আলুতে (কমলা, হলুদ ও পার্পল রঙের মিষ্টি আলু) গোল আলুর তুলনায় কম ক্যালরি ও কার্বোহাইড্রেট থাকে। এতে থাকে উচ্চমাত্রায় ভিটামিন এ, যা ইমিউনিটি বৃদ্ধি করে এবং সুস্থ ত্বক ও দৃষ্টি বজায় রাখতে সাহায্য করে। একটি মিষ্টি আলু দৈনিক ১০০ শতাংশের বেশি ভিটামিন এ সরবরাহ করে। এ ছাড়া আছে প্রচুর ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি৬; যা মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামেরও ভালো উৎস। ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে হার্টের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। একটি মিষ্টি আলুতে প্রায় ৪ গ্রাম উদ্ভিজ্জ ফাইবার রয়েছে; যা স্বাস্থ্যসম্মত ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং ক্রনিক রোগের ঝুঁকি কমায়। যেমন টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও উচ্চ কোলেস্টেরল।
স্টার্চি রুট সবজি হিসেবে মিষ্টি আলুতে নন-স্টার্চি সবজির (যেমন ব্রকলি) চেয়ে বেশি কার্বোহাইড্রেট থাকে। আধা বাটি মিষ্টি আলুতে প্রায় ১৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে, যেখানে সমপরিমাণ ব্রকলিতে থাকে প্রায় ৩ গ্রাম। এটি হতে পারে মিষ্টি আলু খাওয়ার অন্যতম কারণ, ভয় পাওয়ার নয়। নন-স্টার্চি সবজির তুলনায় মিষ্টি আলু দেয় বেশি শক্তির জোগান। যে কারণে এটি দৈনন্দিন কার্যক্রম ও অ্যাথলেটিক পারফরম্যান্সের জন্য একটি ব্যতিক্রমী জ্বালানি উৎস।
খাওয়ার উপায় : গাঢ় রঙের মিষ্টি আলু কিনুন। গবেষণায় পাওয়া গেছে, মিষ্টি আলুর রঙ (কমলা, হলুদ অথবা বেগুনি যে রঙেরই হোক না কেন) যত বেশি গাঢ় হবে, পুষ্টিগুণও হবে তত বেশি। খোসা না ছাড়িয়ে খাওয়ার চেষ্টা করুন। সব ধরনের আলু খাওয়ার সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর উপায় খোসাসহ খাওয়া। কারণ এতে থাকে প্রচুর ফাইবার। এ ছাড়া খোসায় প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও থাকে।
মিষ্টি আলু রান্নার উপায় : স্টিমিং, রোস্টিং, বেকিং অথবা বয়েলিং যেভাবেই মিষ্টি আলু খান না কেন পাবেন পুষ্টি। তাই রান্না করতে পারেন যেকোনো পদ্ধতিতে। সয়ামিল্ক, প্রোটিন পাউডার, দারচিনিসহ স্মুদিতে মিষ্টি আলু মেশাতে পারেন। ব্লেন্ড করেও যোগ করতে পারেন স্যুপে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ ডেজার্ট হিসেবে মিষ্টি আলুর ভর্তা চমৎকার। এতে যোগ করতে পারেন মধু ও আখরোট। মিষ্টি আলুকে বেশিক্ষণ রান্না করা যাবে না। কারণ দীর্ঘক্ষণ রান্না করলে পুষ্টিগুণ কমে যায়। ফ্যাটের কথা ভুলে যাবেন না। ভিটামিন এ-এর মতো ফ্যাট-সলিউবল ভিটামিন ফ্যাট সোর্সের সঙ্গে ভালোভাবে শোষিত হয়। তাই মিষ্টি আলুর সঙ্গে খেতে হবে অল্প পরিমাণে ফ্যাট। এর সঙ্গে ফ্যাট সমন্বয়ের একটি স্বাস্থ্যসম্মত উপায় হচ্ছে অলিভ অয়েল। বেকিংয়ের আগে আলুর ওপর অল্প পরিমাণে অলিভ অয়েল ছিটাতে পারেন। অন্য একটি উপায় হচ্ছে অ্যাভোক্যাডো, পিক্যান অথবা আখরোটের পাশাপাশি মিষ্টি আলু খাওয়া।
আরও পড়ুন: উপকারী সবজি বিট
মিষ্টি আলুর কেক
যা যা লাগবে : ময়দা ১ কাপ, কোকো পাউডার আধা কাপ, বেকিং সোডা ১ চা চামচ, লবণ ১/৪ চা চামচ, চকোলেট চিপস আধা কাপ, ডিম ২টি, তেল আধা কাপ, মাখন ৫০ গ্রাম, ব্রাউন সুগার ৩/৪ কাপ, ভ্যানিলা এক্সট্র্যাক্ট ১ চা চামচ, মিষ্টি আলু কোরানো ১ কাপ ও চকোলেট চিপস সাজানোর জন্য।
যেভাবে তৈরি করবেন : ওভেন ১৮০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে প্রি-হিট করে নিন। লোফ প্যানে মাখন লাগিয়ে নিন। মিষ্টি আলু গ্রেটারের সাহায্যে কুরিয়ে নিতে হবে। ময়দা, কোকো পাউডার, বেকিং সোডা আর লবণ একটি বড় বাটিতে মিশিয়ে নিন। আর অন্য বাটিতে ডিম ফেটিয়ে তার সঙ্গে ব্রাউন সুগার মেশান। ভালো করে ফেটিয়ে নিন। ফুলে উঠলে গলানো (ঠান্ডা করা) মাখনে তেল মিশিয়ে নিন। ভ্যানিলা এসেন্স দিন। এবার ধীরে ধীরে এতে মিষ্টি আলুর মিশ্রণ কাট অ্যান্ড ফোল্ড প্রক্রিয়ায় মিশিয়ে নিন। স্প্যাচুলা দিয়ে সমান করে নিন। লোফ প্যানে মিশ্রণ সমানভাবে ছড়িয়ে দিতে হবে। ওপরে চকোলেট চিপ ছড়িয়ে দিন। ওভেনে বেক হতে দিন ৪০ মিনিটের জন্য। টুথপিক ঢুকিয়ে দেখে নিন বেক হয়েছে কি না। ওভেন থেকে বের করে ওয়্যার র্যাকে রেখে ঠান্ডা করে নিন। তারপর কেটে পরিবেশন করুন।