সুবর্ণা মেহ্জাবীন স্বর্ণা
প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৩ ১৩:২০ পিএম
মডেল : তামান্না; মেকআপ : শোভন মেকওভার; ছবি : ফারহান ফয়সাল
ঈদে চাই নতুন জামা। বাহারি সব ঈদ-পোশাক যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে। ফ্যাশন হাউসগুলো তাদের নিত্যনতুন ডিজাইনসংবলিত পোশাকের পসরা সাজিয়েছে। অনেকে দেশীয় এসব ব্র্যান্ড থেকে বেছে নিচ্ছেন পছন্দমতো পোশাক। আবার অনেকেই চান এমন পোশাক, যা হবে সবার থেকে আলাদা। তাই নিজের পছন্দের নকশা ও কাটে বৈচিত্র্যময় পোশাক বানাতে ছুটছেন দর্জিবাড়ি।
ঈদের পোশাকে নতুনত্ব কে না চায়। ফ্যাশন হাউসগুলোতে মিলছে নানা রঙের ও ঢঙের ঈদ-পোশাক। যেখানে প্যাটার্ন, মোটিফ ও ডিজাইনে রয়েছে নতুনত্ব। তবুও অনেকে আনস্টিচ থ্রিপিস কিংবা গজ কাপড় কিনে নিজে নকশা করতে ভালোবাসেন। এতে নিজের ইচ্ছেমতো ডিজাইন যেমন করা যায়, তেমনি পোশাকটি হয় অন্যদের থেকে আলাদা। তাদের গন্তব্য এখন দর্জিবাড়িতে। বাজার ঘুরে গজ কাপড়ের সঙ্গে মানানসই লেস বা ইয়ক কিনে করা যায় পছন্দমতো ডিজাইন। কখনও ক্যাটালগ দেখে, আবার কখনও নিজের পছন্দসই নকশায় অনেকে দর্জিদের থেকে বানিয়ে নিচ্ছেন পোশাক। দর্জিবাড়িগুলো ঘুরে দেখা যায়, মূলত শবেবরাতের পর থেকেই ঈদের অর্ডার আসা শুরু হয়েছে। অধিকাংশ দর্জির দোকানে রমজান মাসের ১০ তারিখ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ তারিখ পর্যন্ত অর্ডার নেবে। কিছু কিছু দোকানে এখনই বন্ধ হয়ে গেছে অর্ডার নেওয়া। অনেকে আবার বেশ আগেই দর্জিবাড়িতে ফরমাশ দিয়ে রেখেছিলেন, যাতে চাপ বাড়ার আগেই পোশাকটি পেয়ে যান। ঈদের পোশাকে প্রতিবছরই কিছু না কিছু নকশা ও কাটে পরিবর্তন হয়। গত বছর যা জনপ্রিয় ছিল, এ বছর সেই নকশা পুরোনোর প্রতিনিধি। গলা, হাতা কিংবা সালোয়ারের কাটছাঁট কেমন হবে এবারের ঈদে চলুন জেনে নিই-
মেয়েদের পোশাক
লম্বা কামিজ এখন তেমন দেখা যায় না। বরং মাঝারি লম্বা কামিজ চলছে। ওপরের অংশে জামার মতো হয়ে এসে বুকের নিচে জোড়া লাগিয়ে এক ছাঁটের অনেক ঘেরের গাউন ধাঁচের পোশাক প্রাধান্য পাচ্ছে। আবার লম্বা কুর্তা, কোটি এসবও আছে পছন্দের তালিকায়। ইয়ক বা লেস তো আছেই, সঙ্গে পোশাকের ডিজাইনে প্রাধান্য পাচ্ছে নানা ধরনের বোতাম ও বড় পুঁতি। এক রঙা কাপড়ে ছাপানো নকশা ও নকশা করা কাপড়ে একরঙা কাপড় দিয়ে কুচি করে বা বিভিন্ন ধরনের নকশার আকৃতি ফুটিয়ে তুলতে দেখা যায় দর্জিবাড়িতে। আবার হাতার নিচে জামার দুই পাশে পাইপিং দিয়েও পোশাকে ডিজাইন করা হচ্ছে। গলার ক্ষেত্রে রয়েছে অনেক নকশা। ব্লাউজে গোল ও নৌকা কাটের গলা চলছে নকশাদার কারুকাজের কাপড়ে। সাধারণ কাপড়ের ব্লাউজে চলছে গোল গলা, তিন কোণা, চার কোণা, ব্যান্ড কলার প্রভৃতি। পাশে চেইন দেওয়া গলার চাহিদাও বেশ। জামায় গোল, উঁচু গলা, নৌকা কাট, তিন কোণা গলা, পিঠের অংশে হৃদয় আকারের কাটাও আছে। এ ছাড়া হাইনেক কলার, শেরওয়ানি কলার, ছোট করে গোল গলা, বড় করে কাটা গোল, মেট্রো বা চার কোণা কাটের গলার বেশ চাহিদা রয়েছে। এসব গলায় অন্য রঙের কাপড় দিয়ে পাইপিন ডিজাইনও বেশ ট্রেন্ডি। কামিজের হাতায়ও কিছুটা নতুনত্ব দেখা যাচ্ছে। সোজা কনুই পর্যন্ত, থ্রি-কোয়ার্টার, ফুল হাতা, কোল্ড শোল্ডার, হাতার নিচের অংশে ঘের দেওয়া, ট্রাইস্লিভ হাতা যা দুই-তিন জায়গা দিয়ে কাটা থাকে আর মাঝে থাকে পুঁতি বসানো। এ ছাড়া বেলবটম হাতাও অনেকের পছন্দ। হাতায় ঝালর, কুঁচি ও লেস ইত্যাদির ব্যবহার বেশি দেখা যাচ্ছে এবার। এ ছাড়া রুমাল হাতা, এক থেকে তিন স্তরের অন্য রঙের ঝালর লাগানো হাতা, হাতার ওপর অংশে কাটা, মাঝখানে কেটে ফিতা দিয়ে আটকানো হাতা- এসবও চলছে আগের মতোই। পালাজ্জো কিংবা স্কার্ট পালাজ্জো তো আছেই, তবে চাপা প্যান্ট চলছে বেশি। এ ছাড়া প্যান্ট ঢঙের সালোয়ারের নিচে লেস বা ইয়ক ডিজাইন বেশ ট্রেন্ডি এখন। এ ছাড়া চলছে সোজা কাট বা সিগারেট কাটের সালোয়ার। টিউলিপ, সারারা প্যান্টের ফরমাশও কম নয়।
আরও পড়ুন: অফিসেও ক্যাজুয়াল
ছেলেদের জন্য
ঈদে ছেলেদের অন্যতম পোশাক পাঞ্জাবি। পছন্দমতো ফেব্রিকে পাঞ্জাবি বানাতে অনেকে তাই চলে যান দর্জিবাড়ি। সুতি, হালকা খাদি কাপড় বেশি চলে পাঞ্জাবির জন্য। অনেকের বাটিক অথবা টাইডাইয়ের পোশাক পছন্দ করেন। সেমি লং ঝুলের পাঞ্জাবির চল বেশি। একটু ঢিলেঢালা টাইপ করে বানাতে পারেন। আবার কুর্তা বানাতে চাইলেও টাইট ফিটিং এড়িয়ে যাওয়া ভালো। এমব্রয়ডারির কাজ, গলা ও হাতায় পাইপিন কিংবা বর্ডার করে নিচ্ছেন অনেকে। তবে বেশিরভাগ ছেলেই সাধারণ ডিজাইনের পাঞ্জাবি পরতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আবার শার্ট, প্যান্ট, স্যুট, ব্লেজারের মতো ফরমাল ড্রেসেরও কদর রয়েছে। শার্ট কিংবা প্যান্ট বানানোর ক্ষেত্রে ফরমাল ডিজাইন প্রাধান্য পাচ্ছে।