প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২১ মে ২০২৩ ১৬:৩৩ পিএম
আপডেট : ২১ মে ২০২৩ ১৯:৫৩ পিএম
মার্টিন আমিস (১৯৪৯-২০২৩)। ছবি : সংগৃহীত
ব্রিটিশি ঔপন্যাসিক মার্টিন আমিস ৭৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় নিজ বাসায় স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৯ মে) তার মৃত্যু হয়েছে। আমিসের স্ত্রী ও লেখিকা ইসাবেল ফনসেকা এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
১৯৪৯ সালের ২৫ আগস্ট যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ডে জন্মগ্রহণ করেন আমিস। তার পিতার নাম স্যার কিংসলে আমিস। তিনিও শক্তিশালী কবি ও ঔপন্যাসিক।
রবিবার (২১ মে) বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১১ সালে আমিসের খাদ্যনালীর ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপর ২০১২ সাল যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তিনি।
আমিসের মৃত্যুতে সালমান রুশদিসহ বিখ্যাত সাহিত্যিকরা শোক প্রকাশ করেছেন। রুশদি নিউইয়র্কারকে বলেন, তিনি যা করতে চাইতেন তাই তিনি লিখতেন। তিনি এক তাক বই আমাদের জন্য রেখে গেছেন। তার কণ্ঠস্বর চুপ হয়ে গেছে। কিন্তু তার রেখে যাওয়া বই এখন তার কথা বলবে। তার বন্ধুরা তাকে ভীষণ মিস করবে।
নোবেল বিজয়ী লেখক স্যার কাজুও ইশিগুরো বলেছেন, তিনি আমাদের প্রজন্মের একজন আদর্শস্থানীয় ঔপন্যাসিক। ব্যক্তিগতভাবে তিনি আমার অনুপ্রেরণা ছিলেন। পৃথিবী বদলে যাবে, কিন্তু তার কাজগুলো থেকে যাবে।
ভিনটেজ বুকসের সম্পাদক মিশাল শাভিট বলেন, মার্টিন আমিস ছাড়া একটি বিশ্ব কল্পনা করা কঠিন। তিনি ছিলেন বিদগ্ধ, পণ্ডিত ও নির্ভীক লেখক। এক কথায় বিস্ময়কর একজন মানুষ ছিলেন তিনি।
এক বিবৃতিতে শোক জানিয়েছে বিখ্যাত প্রকাশনা সংস্থা পেঙ্গুইন। তারা বলেছে, আমাদের বন্ধু ও লেখক মার্টিন আমিসের মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকগ্রস্ত। তার স্ত্রী, সন্তান ও আত্মীয়স্বজনের কথা ভেবে খারাপ লাগছে। তিনি ব্রিটিশ সংস্কৃতিতে অসম্ভব অবদান রেখে গেছেন।
বুকার পুরস্কারের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে এক পোস্টের মাধ্যমে বলা হয়েছে, গত ৫০ বছরের সবচেয়ে আলোচিত ও প্রশংসিত লেখক মার্টিন আমিসের মৃত্যুর খবর শুনে আমরা স্তম্ভিত। আমরা তার পরিবার ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
আমিস জীবদ্দশায় ১৪টি উপন্যাস প্রকাশ করেন। ১৯৭৩ সালে ২৪ বছর বয়সে দ্য র্যাচেল পেপারস নামের আধা-আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস প্রকাশের মধ্য দিয়ে সাহিত্যাঙ্গনে প্রবেশ করেন তিনি। ২০২০ সালে তার সর্বশেষ উপন্যাস ইনসাইড স্টোরি বের হয়।
তবে আমিসের সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাস ‘মানি’ বের হয় ১৯৮৪ সালে। আর ’লন্ডন ফিল্ডস’ বের হয় ১৯৮৯ সালে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৮০-এর দশকে যুক্তরাজ্যে উপন্যাসের নতুন যে ধারা তৈরি হয়েছিল, সালমান রুশদিদের সঙ্গে তার অন্যতম কারিগর ছিলেন আমিস। তাদের লেখার ভাষা হয়ে উঠেছিল তির্যক। রূপকের ছলে মনোযোগের কেন্দ্রে ছিল সমসাময়িক রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থা।
যুক্তরাজ্যের উপন্যাসের আয়েশি ব্যাপার ও যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তৃত উপন্যাসের মধ্যে আমিস সেতুবন্ধনের কাজ করেছিলেন বলে মনে করেন সাহিত্য সমালোচকেরা।
উপন্যাসের পাশাপাশি বিভিন্ন টিভি শো, সাহিত্য সমালোচনা, চিত্রনাট্য লিখেও যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছিলেন মার্টিন আমিস।
সূত্র : বিবিসি