বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:০৫ পিএম
আপডেট : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:২৫ পিএম
জাতীয় কবিতা পরিষদের আয়োজনে ৩৬তম জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু হয়েছে। প্রবা ফটো
নানা আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু হয়েছে। এতে দেশি-বিদেশি কবিরা অংশ নিয়েছেন।
‘যুদ্ধ-গণহত্যা সহে না কবিতা’ প্রতিপাদ্য ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার সংলগ্ন হাকিম চত্বরে বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন কবি নির্মলেন্দু গুণ। ৩৬তম এই উৎসবের আয়োজন করেছে জাতীয় কবিতা পরিষদ।
পরিষদের সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদ উৎসবের সভাপতিত্বে উৎসবে বক্তব্য রাখেন- সাধারণ সম্পাদক কবি তারিক সুজাত ও জাতীয় কবিতা উৎসব ২০২৪ এর আহ্বায়ক শিহাব সরকার।
সকাল দশটায় শোভাযাত্রা নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ও শিল্পী কামরুল হাসানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে উৎসব শুরু হয়। এরপর উদ্বোধনী আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
উদ্বোধনী বক্তব্যে নির্মলেন্দু গুণ বলেন, ‘আমাদের অগ্রজ কবিরা যারা এতদিন আমাদের মাথার ওপরে ছিলেন, তারা ক্রমে ক্রমে হারিয়ে গেছেন। বয়সের হিসাবে বাংলাদেশের জীবিত কবিদের মধ্যে আমার স্থান হলো দ্বিতীয়। আর আমার কবিবন্ধু মহাদেব সাহা তিনি আমার চেয়ে এক বছরের বড়। আমার মাথার ওপরে তিনি আছেন। সুস্থ থাকলে হয়তো উদ্বোধন তিনি করতেন।‘
কবিতা পরিষদের জন্মলগ্নের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এরশাদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে জনমত সৃষ্টি করার জন্য ১৯৮৭ সালে কবিতা পরিষদ গঠিত হয়েছিল। যাতে আমাদের কবিরা এরশাদের দলভুক্ত না হন, তাদেরকে নিবৃত্ত করার জন্য। তখন এরশাদ সাহেব নিজেই কবিতা লিখতে শুরু করেছিলেন। তার কবিতা দেদারসে ছাপা হতে শুরু করে এবং আমাদের দেশের বেশকিছু কবিও বঙ্গভবনে আয়োজিত কবিতা পাঠের আসরগুলোতে ভিড় জমাতে শুরু করে। এটা আমাদের জন্য একটি অশনি সংকেত ছিল। ফলে আরেকটা নতুন প্ল্যাটফর্ম এরশাদের বিরুদ্ধে তৈরি করার জন্য জাতীয় কবিতা পরিষদের জন্ম হয়।’
জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ সামাদ বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী আজ নারী, শিশু, দরিদ্র শ্রেণি চরম নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। ফিলিস্তিন, ইউক্রেনসহ বিভিন্ন দেশে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। এসব যুদ্ধ বিগ্রহ কবিতা সহে না। কবিতার মাধ্যমে আমরা প্রতিবাদের প্রাচীর গড়ে তুলব। আজ যখন পৃথিবীর দেশে দেশে অশুভ শক্তির দাপটে নিরপরাধ মানুষ বিপন্ন; নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ সাধারণ মানুষের লাশের স্তুপ ওপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতার অহমিকা দেখাচ্ছে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি, সেসময় আমাদের এ আয়োজন।’
এবারের উৎসবে ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশের কবিরা অংশ নেন। উৎসবে আগত কবিদের মধ্যে কয়েকজন হলেন- ভারতের কলকাতা থেকে সুবোধ সরকার, বিথী চট্টোপাধ্যায়, বিভাস রায় চৌধুরী, ভারতের ত্রিপুরা হতে রাতুল দেব বর্মন, দীলিপ দাস, আকবর আহমেদ, আসামের কবি অনুভব তুলাসি এবং চন্দ্রিমা দত্ত। এছাড়া ফিলিপাইনের কবি ও বর্তমানে বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল আসান জুনিয়র, নেপালের চাবিলাল কপিলাসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।