প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:২৫ পিএম
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:২৭ পিএম
বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে মূসা-সেতারা মূসা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আয়োজিত অনুষ্ঠান। প্রবা ফটো
এবিএম মূসা-সেতারা মূসা আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম দৈনিক ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পত্রিকা দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মূসা-সেতারা মূসা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে মালেককে এই সম্মাননা দেওয়া হয়।
এবিএম মুসার ৯৩তম ও সেতারা মুসার ৮৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই ‘আজীবন সম্মাননা ও স্মারক বক্তৃতা’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ফাউন্ডেশন। অনুষ্ঠানে ‘গণমাধ্যমে জেন্ডা পরিসর: নারীর নির্মিত এবং নারীর অংশগ্রহণ’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক ড. কাবেরী।
অনুষ্ঠানে দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, সত্য যে কঠিন, কঠিনেরে ভালোবাসিলাম। সত্যকে প্রতিষ্ঠায় অনেক বাধা আসে। এসব বাধা অতিক্রমে সাহস থাকতে হয়। সেই সাহস এবিএম মুসার ছিল।
দৈনিক আজকের পত্রিকার সম্পাদক গোলাম রহমান বলেন, এবিএম মূসা যতটা ভালো বলতেন তার থেকে ভালো লিখতেন। তার লেখাগুলো অসাধারণ ছিল। কলামের লেখাগুলো মুগ্ধ হয়ে পড়তাম। তিনি শুধু গণতান্ত্রিক মন মানসিকতার ছিলেন তা নয়, তিনি রাজনৈতিক জায়গায়ও ছিলেন পারদর্শী। আমরা আজকের কথাগুলো যদি পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে পারি জাতি ভালো কিছু পাবে।
স্মারক বক্তৃতায় কাবেরী গায়েন বলেন, নারী সাংবাদিকদের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে পর্যাপ্ত নারী আর যাওয়া হয়ে উঠে না। কর্ম পরিসর বেড়েছে, অপরাধ সচিবালয় বিটে কাজ করছে নারীরা। গণমাধ্যমে নারীর উপস্থিতি বেড়েছে। অনেক বেশি করে ঢুকেছেন। কিন্তু এখনও গুরুত্বপূর্ণ বিটে নারীরা নেই, যাতায়াত সুযোগ নেই, মাতৃত্বকালীন ছুটিতে বাধা, সংবাদকক্ষে রাজনীতির শিকার, সহকর্মীর কাছে যৌন হয়রানির শিকার হওয়াসহ নানারকম চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়।
সম্প্রতি প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের এক গবেষণায় দেখা যায় পত্রিকার সব খবরের ৬ থেকে ৯ শতাংশ শুধু নারী বিষয়ক খবর প্রকাশিত হয়। আর ১৪ থেকে ১৬ শতাংশ ছবি ছাপা হয় নারী ও শিশুকে কেন্দ্র করে। এই যে ৬ থেকে ৯ শতাংশ তথ্য আমরা প্রতিদিন দেখা যায় সেগুলোর বেশিরভাগই সহিংসতা, নির্যাতন ও আইনি জটিলতার খবর। বাকি কিছু সংখ্যাক খবর বের হচ্ছে যারা নাটক, সিনেমা বা শোবিযে আছেন, তাদের নিয়ে। নারী বিষয়ক খবরের ৮৪ শতাংশই সহিংসতার। গণমাধ্যমের চরিত্র পুরুষতান্ত্রিক এখনো।
শাহনাজ মুন্নী বলেন, একজন তরুণ সাংবাদিক যে উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে কাজ করতে আসেন সেই উদ্দীপনা থাকে না। সত্যি বলতে সময়ের সঙ্গে সবাই নিরাশ হতে থাকে। সেটা রাতারাতি দূর করা সম্ভব না। আমাদের আসলে আরও গভীরভাবে ভাবতে হবে। গভীর থেকে দীর্ঘমেয়াদি সাংস্কৃতিক পরিবর্তন না হয় তবে কঠিন হবে।
সাংবাদিক লেখক কুররাতুল আইন ই তাহমিনা বলেন, সংবাদে নারীর উপস্থিতি আমি দেখতে চাই। প্রত্যেক জায়গায় অন্তত একটা নারীর কণ্ঠস্বর শুনতে চাই। ট্রান্সজেন্ডারের প্রসঙ্গ একেবারেই খুবই অবহেলিত। সহিংসতার খবর আসে পত্রিকায় এই নিয়ে আমাদের এমন ধারণা যেন না হয় এটা নিয়ে আসার প্রয়োজন নেই। খবরই যদি বন্ধ হয়ে যায় কিভাবে চলবে। তবে খবটা কিভাবে আসে, কিভাবে উপস্থাপিত হয় সেটা বড় বিষয়।
মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম বলেন, আমাদের সবক্ষেত্রে তথ্যের অভাব, গবেষণার অভাব। যে তথ্যগুলো এসেছে সেগুকো অনেক পুরোনো। খুব বেশি তথ্য ছাড়া কথা বলা যায় না। আজকের নারীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা যোগ্যতায়, এগিয়ে এসেছে। সমাজ রাষ্ট্র সবসময় সহায়ক হিসেবে থাকছে না।