প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:২৭ পিএম
আপডেট : ০৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:৫৯ পিএম
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কালের কণ্ঠ ও ডেইলি সানের চাকরিচ্যুত ও অব্যাহতিপ্রাপ্ত শতাধিক সাংবাদিকের বকেয়া পাওনা আদায়ের দাবিতে মানববন্ধনে গণমাধ্যমকর্মীরা। প্রবা ফটো
বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের দৈনিক কালের কণ্ঠ ও ডেইলি সানের চাকরিচ্যুত ও অব্যাহতিপ্রাপ্ত গণমাধ্যমকর্মীরা বকেয়া পাওনা আদায়ে প্রতিষ্ঠান দুটোর বিরুদ্ধে এবার ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে শতাধিক সাংবাদিকের পাওনা আদায়ে গঠিত ‘সংগ্রাম কমিটি’। এ সময় বসুন্ধরা গ্রুপের বিরুদ্ধে বার বার চেক জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা।
বুধবার (৩ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বকেয়া পাওনা আদায়ে সাংবাদিকদের সমন্বয়ে গঠিত ‘সংগ্রম কমিটি’ এই আল্টিমেটাম দেয়। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাওনা আদায় না হলে মানববন্ধনে রবিবার থেকে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কমিটির সদস্যরা।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপ ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি তারিখ দিয়েছে টাকা পরিশোধের। কিন্তু তারা এখনও বকেয়া পাওনা পরিশোধ করতে পারে নাই। আমি মনে করি, সাংবাদিকদের এ পাওনা টাকা দ্রুততার সঙ্গে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) একাংশের সভাপতি সোহলে হয়দার চৌধুরী বলেন, ‘আজকে চকরিচ্যুত সাংবাদিকবৃন্দ বকেয়া পাওনা আদায়ে আন্দোলন করছে। সেই টাকা বসুন্ধরা গ্রুপ যতক্ষণ না প্রদান করছে ততক্ষণ এ আন্দোলনের সঙ্গে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকের মানববন্ধনের পর আগামীকালের মধ্যেই বসুন্ধরা গ্রুপ কর্মীদের পাওনা টাকা বুঝিয়ে দেবেন বলে আমি মনে করি। যদি তারা পাওনা টাকা বুঝিয়ে না দেন, তাহলে আগামী রবিবার থেকে যে সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়েছে, তাদের পরবর্তী কর্মসূচির সঙ্গে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সব সদস্যদের নিয়ে এক দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
সাংবাদিকদের পাওনা বুঝিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন বলেন, ‘যারা মানুষের অধিকার আদায়ে কাজ করে গেছেন, সেই সাংবাদিকরা আজ নিজের পাওনা বুঝে না পেয়ে রাজপথে নেমেছেন। আমরা অবাক হয়ে গেলাম, যেই সাংবাদিকরা মানুষের জন্য কাজ করে, রাষ্ট্র মেরমাতে কাজ করে, সেই সাংবাদিকদের বকেয়া পাওনা বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। আমি আশা করি, বসুন্ধরাসহ যেসব সংবাদ প্রতিষ্ঠান সাংবাদিকদের বেতন আটকে রেখেছেন তা দ্রুততার সঙ্গে পরিশোধ করুন।’
বসুন্ধরা গ্রুপের বিরুদ্ধে ফের প্রতারণার অভিযোগ তুলে মানববন্ধনে এ মিডিয়াকর্মীদের পাওনা আদায়ের সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক আলিমুজ্জামান বলেন, ‘চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের চেক দেওয়ার পরও সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টে টাকা (ফান্ড) না থাকায় আমাদের পাওনা টাকা উত্তোলন করতে পারছি না। চেক দেওয়ার মাধ্যমে বসুন্ধরা আমাদের সঙ্গে আরেক দফা প্রতারণা করেছে।’
এ সাংবাদিকদের অভিযোগ, তাদের দেওয়া চেকের প্রথম তারিখ ছিল চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি এবং দ্বিতীয় তারিখ ছিল ২৫ ফেব্রুয়ারি। অ্যাকাউন্টে টাকা (ফান্ড) না থাকায় কেউই টাকা তুলতে পারেননি। এ ব্যাপারে বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা নানা ছলচাতুরি করে যাচ্ছে।
গত ১ মার্চ কালের কণ্ঠ ও ডেইলি সানের চাকরিচ্যুত ও অব্যাহতিপ্রাপ্ত গণমাধ্যমকর্মীরা তাদের বকেয়া পাওনা আদায়ে সংগ্রাম কমিটি গঠন করে। কমিটিতে ডেইলি সানের সাবেক কর্মী আলিমুজ্জামানকে আহ্বায়ক এবং কালের কণ্ঠের সাবেক কর্মী মাহবুবুর রহমানকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন, ডিইউজের সিনিয়র সহসভাপতি নজরুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক মো. শাহজাহান মিঞা, কোষাধ্যক্ষ সোহেলী চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মুজতবা, দপ্তর সম্পাদক পদে জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী। এ ছাড়া সংগ্রাম কমিটির আক্তার হোসেন, ইকরামুল হক টিপু , ওদারুল হক হীরা, রফিকুল ইসলাম খান, রঞ্জন নন্দী, জাহাঙ্গীর আলম বিদ্যুৎ, ও আমিনুল ইসলাম খোকন।