× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

অংশীজনদের ধোঁয়াশায় রেখে নতুন ড্যাপ অনুমোদন

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ২৪ আগস্ট ২০২২ ১৪:০৫ পিএম

আপডেট : ২৪ আগস্ট ২০২২ ১৪:১৮ পিএম

অংশীজনদের ধোঁয়াশায় রেখে নতুন ড্যাপ অনুমোদন

অংশীজনদের ধোঁয়াশায় রেখে নতুন ড্যাপ অনুমোদন

দীর্ঘ অপেক্ষার পর চূড়ান্ত অনুমোদন পেল রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) নতুন বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বা ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ)। গতকাল মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। এর মধ্য দিয়ে ২০১০ সালে প্রণীত ড্যাপ কার্যকারিতা হারাল। তবে প্রজ্ঞাপন জারির আগে পুরনো ড্যাপের অধীনে যেসব কাজ সম্পন্ন বা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেগুলো বৈধ বলে গণ্য হবে।

ঢাকার পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য এখন থেকে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত নতুন ড্যাপ অনুসরণ করবে রাজউক। নতুন ড্যাপের আওতায় থাকছে তিনটি জেলা--ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ।

এদিকে চূড়ান্ত অনুমোদন পেলেও নতুন ড্যাপ নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছেন অংশীজনরা। তাদের মতামত চূড়ান্ত খসড়ায় সংযুক্ত হয়েছে কি না সে ব্যাপারে এখনও স্পষ্টভাবে কিছুই জানেন না তারা। যদিও ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, সংখ্যাগরিষ্ঠদের যৌক্তিক দাবিগুলোকে তারা নতুন ড্যাপে গুরুত্ব দিয়েছেন। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নতুন ড্যাপের আওতাধীন কোনো এলাকায় পর্যাপ্ত প্রশস্ত রাস্তা না থাকলে আটতলার চেয়ে উঁচু ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হবে না। তবে পর্যাপ্ত রাস্তা থাকলে বহুতল ভবনের অনুমোদন দেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রত্যেক এলাকার রাস্তা সর্বনিম্ন আট ফুট পর্যন্ত প্রশস্ত করা হবে। রাস্তার প্রশস্ততা এর চেয়ে কম হলে দোতলার বেশি উচ্চতাসম্পন্ন ভবন তৈরির অনুমতি দেওয়া হবে না। রাস্তা ছোট হলে ভবনের মালিকদের জায়গা ছেড়ে ভবন তৈরি করতে হবে। 

প্রতিবেশ-পরিবেশ রক্ষার অংশ হিসেবে সংশোধিত ড্যাপে বন্যাপ্রবাহ অঞ্চলে রাস্তা তৈরির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। প্রয়োজনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বা ফ্লাইওভার তৈরি করে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন করতে বলা হয়েছে। ড্যাপে বন্যাপ্রবাহ অঞ্চলে বিদ্যমান রাস্তা অপসারণের কথাও বলা হয়েছে। বিশেষ করে আশুলিয়া থেকে সাভারের ধউর পর্যন্ত বন্যাপ্রবাহ অঞ্চলের তিন কিলোমিটার সড়ক অপসারণ করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করতে বলা হয়েছে। খালের পানিপ্রবাহ সচল রাখতে এবং নৌযান চলাচলের রাস্তা উন্মুক্ত রাখতে বক্স কালভার্ট রাখা হবে। এতে জলাবদ্ধতা নিরসন হবে বলে মনে করে রাজউক।

যাতায়াতব্যবস্থার উন্নয়ন ও যানজট নিরসনে ৫৬৬ কিলোমিটার নতুন নৌপথ ও ২ হাজার ৭৪৮ কিলোমিটার নতুন রাস্তা তৈরির কথা বলা হয়েছে নতুন ড্যাপে। 

এদিকে সম্পূর্ণ আবাসিক এলাকার বদলে আবাসিক-বাণিজ্যিক মিশ্র এলাকা গড়ে তোলার পাশাপাশি ভবনের মিশ্র ব্যবহার উৎসাহিত করা হয়েছে ড্যাপে। কারণ গুলশান, বনানী, উত্তরা, ধানমন্ডিসহ রাজউকের বেশ কয়েকটি পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা শেষ পর্যন্ত পুরোপুরি আবাসিক রাখা যায়নি। বরং এলাকাবাসী তা মিশ্র ব্যবহারের দিকে বেশি উৎসাহিত হয়েছে। মিশ্র এলাকা হলে জনগণ উপকৃত হবে--এমন মনে করে রাজউক।

এ ছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে তিন থেকে চারটি এবং ড্যাপ এলাকায় মোট ৬২৭টি স্থানে সরকারি স্কুল স্থাপনের পরিকল্পনা রাখা হয়েছে। প্রতিটি স্কুলে  খেলার মাঠ রাখার বিষয়ে বলা হয়েছে। সব কটি ওয়ার্ডে ৫০ শয্যার হাসপাতাল রাখার বিষয়েও বলা হয়েছে। বিনোদনের জন্য পাঁচটি আঞ্চলিক পার্ক, ৪৯টি জল পার্ক, পাঁচটি ইকোপার্ক ও আটটি ছোট আকারের পার্ক তৈরির কথা বলা হয়েছে সংশোধিত ড্যাপে।

ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘সংশোধিত ড্যাপে অনেক নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেগুলো আগে ছিল না। তবে খসড়া চূড়ান্ত করার সময় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের ও ব্যবসায়ী সংগঠনের মতামত নেওয়া হয়েছে। তাদের যৌক্তিক দাবি ড্যাপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ড্যাপ চূড়ান্ত করার আগে স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি কমিটি গঠন করেছিল সরকার। মূলত কমিটি যেসব বিষয় যৌক্তিক মনে করেছে, সেগুলো বিবেচনায় নিয়েছে।’

এদিকে আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা জানান, ড্যাপ চূড়ান্ত করার আগে এ সংক্রান্ত কমিটি তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। সেখানে ব্যবসায়ীরা ভবনের উচ্চতা-সংক্রান্ত বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া, রাস্তার প্রশস্ততা অনুযায়ী ভবনের অনুমোদন দেওয়া, ঢাকার জনঘনত্ব কমাতে বাইরে পর্যাপ্ত অবকাঠামো তৈরি করা এবং পুরান ঢাকার জমির মালিকদের ভবন তৈরির অনুমতি দেওয়ার দাবি জানান। ড্যাপ পাস করার আগে চূড়ান্ত খসড়া ব্যবসায়ীদের না দেওয়ায় কোন কোন দাবি সরকার আমলে নিয়েছে, সে ব্যাপারে এখনও স্পষ্ট ধারণা নেই তাদের। বেশির ভাগ ব্যবসায়ী এ নিয়ে ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছেন। 

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভেলপারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলডিএ) চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মহিউদ্দিন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমরা আমাদের দাবি সরকারকে মৌখিক ও লিখিতভাবে জানিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের দাবিগুলো সরকার আমলে নিয়েছে কি না সে বিষয়ে আমরা এখনও জানি না। চূড়ান্ত ড্যাপ দেখে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারব।’

রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশনের (রিহ্যাব) সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ড্যাপে কোন কোন বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে এখনো পুরোপুরি জানি না। তবে সুষ্ঠু ও পরিকল্পিত নগরায়নের লক্ষ্যে আমরা আমাদের মতামত জানিয়েছিলাম। কিন্তু তা চূড়ান্ত করার আগে আমাদের সঙ্গে শেয়ার করা হয়নি। ফলে এখনও জানি না আমাদের মতামতের প্রতিফলন হয়েছে কি না।’

প্রবা/রাই/এসআর


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা