× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দেশের ব্যাপক উন্নয়নে মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রবা প্রতিবদেক

প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:০১ পিএম

আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:০৮ পিএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : বাসস

গত ১৪ বছরে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন বিবেচনায় নিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমি আশা করি গত ১৪ বছরে বাংলাদেশে যে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে, জনগণ সেদিকে বিশেষভাবে মনোযোগ দিবেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।’

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে প্রধানমন্ত্রী গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে গণপূর্ত অধিদপ্তর, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) সম্পাদিত ১১টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর রমনা পার্কের বটমূলে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে রমনা পার্কের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও রমনা লেকসহ সার্বিক সৌন্দর্য বৃদ্ধিকরণ এবং মধ্যম আয়ের লোকদের জন্য রাজধানীর মিরপুরে ১ হাজার ৪০টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণসহ ১১টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসিয়েছে। তারা এটা করেছে শুধু এ কারণেই যে, আমরা দেশের উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি।’ 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘জাতির পিতার নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে। কাজেই দেশ ও দেশের জনগণের জন্য আমাদের একটা দায়িত্ব আছে। আমরা সেই দায়িত্ববোধ থেকেই দেশ চালিয়ে যাচ্ছি।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলেছি। এখন আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তুলবো। আমরা ই-গভার্নেন্স চালু করবো। স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্বাস্থ্য-শিক্ষা প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার নিশ্চিত করব।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের মানুষের সার্বিক উন্নয়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এটা সম্ভব হয়েছে দেশে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার ক্ষমতায় আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন শুধু আর্থ-সামাজিক উন্নয়নই নয়, প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায়ও আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে তাল মেলাতে সক্ষম দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তুলতে সরকার ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রত্যেকটা নাগরিকের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের মৌলিক চাহিদাগুলো যাতে পূরণ হয়, তার নিশ্চয়তা রেখেই সরকার প্রকল্প গ্রহণ করে। তা সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানুষের জীবনে যাতে একটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ আসে তার ব্যবস্থাও করে যাচ্ছে সরকার।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ও সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে বাস্তবায়িত উন্নয়ন প্রকল্পের উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

সরকার প্রধান বলেন, ‘এই সরকারের উন্নয়ন শুধু রাজধানী কেন্দ্রিক নয়, একেবারে তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত। সারাদেশের ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড সেবা পৌঁছে গেছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে উৎক্ষেপন করে আমরা স্যাটেলাইট যুগেও প্রবেশ করেছি। তাছাড়া ৯৬ সালে যে বিদ্যুৎ পেয়েছিলাম মাত্র ১৬শ মেগাওয়াট তাকে চার হাজার তিনশত মেগাওয়াট পর্যন্ত বৃদ্ধি করার পর ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে দেখি তা আবার তিন হাজারে মেগাওয়াটে নেমে গেছে। সেখান থেকে আমাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দেশের প্রত্যেকটি ঘরকে আমরা বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত করতে পেরেছি। প্রায় ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে তা মানুষকে দেয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছি। পাশাপাশি মাথাপিছু আয় দুই হাজার আটশত ২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী এ সময় করোনা পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং স্যাংশনের প্রেক্ষিতে বিদুৎ, পানি ও জ্বালানী ব্যবহারে সকলকে সাশ্রয়ী হওয়ারর জন্য আহ্বান পুণর্ব্যক্ত করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইংল্যান্ডে প্রায় দেড়শ ভাগ বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। একই অবস্থা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। কাজেই এখানেও আমি সবাইকে অনুরোধ করবো বিদ্যুৎ ও পানি ব্যবহারে সবাই আবার একটু সাশ্রয়ী হবেন। দীর্ঘস্থায়ী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ২০২৩ সালে বিশ্ব সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক মন্দা প্রত্যক্ষ করবে বলে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির পূর্বাভাস উল্লেখ করে তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর এবং প্রতি ইঞ্চি জমি চাষের আওতায় আনার আহ্বান জানান। আমরা যদি খাবার উৎপাদন বাড়াই তবে অর্থনৈতিক মন্দা আমাদের আঘাত করতে সক্ষম হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেনের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও তাঁর সরকারের বাস্তব সম্মত ও সমেয়োপযোগী উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনও জিডিপিতে গড়ে সাত শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে সফলভাবে চলছে।’

শেখ হাসিনা রাজধানী বাসীর অতীতের পানির কষ্টের কথা স্বরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ঢাকা শহরে সুপেয় পানির বড় অভাব ছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েই আমরা রাজধানীর সায়েদাবাদ ১,২ ও ৩ সহ বিভিন্ন ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টগুলো করে দিয়েছি। কাজেই পানির ব্যবহারেও সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে। সরকার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন-ভাতাই শুধু বাড়ায়নি তাদের আবাসন সুবিধা ৩২ শতাংশে উন্নীত করেছে। এর লক্ষ্য ৪০ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার।

হাইকোর্টে এ্যানেক্স ভবন নির্মাণ, আইনজীবীদের জন্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি, বিচারকদের জন্য আবাসন সুবিধা বৃদ্ধি, জেলায় জেলায় নতুন আদালত ভবন তৈরিসহ এই সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সমস্যা দূর করার পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭৫ এর পর এদেশে ক্ষমতার পরিবর্তন হয়েছে বন্দুকের নল দিয়ে। অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের মধ্যদিয়ে মার্শাল ল চলেছে। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মাধ্যমে দেশে যে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত হয়েছিল সেটা ব্যহত হয়ে যায়। এভাবেই ২১ বছর সরকার পরিচালিত হয়। ফলে মানুষের উন্নয়নের গতিও ব্যহত হয়। অথচ জাতির পিতা মাত্র সাড়ে ৩ বছরে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে প্রবৃদ্ধি ৯ ভাগের ওপরে তুলে দেশকে স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘৭৫ এ জাতির পিতাকে হত্যার পর এই অগ্রগতি থেমে যায়। কারণ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী দিয়ে কখনও দেশের উন্নয়ন হয় না। আর ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করে। জনগণের কিছুটা হলেও উন্নয়ন করতে পেরেছিল। জাতির পিতার হত্যার পর যিনি সেনা প্রধান হলেন, তিনিই একদিন নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিলেন। অনির্বাচিত লোক দিয়ে কখনো দেশের উন্নতি হয় না, এটা প্রমাণিত। ৯৬ সালে সরকারে আসার পর জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করেছি। জনগণের উন্নয়ন অন্তত আমরা করতে পেরেছিলাম। বিদ্যুৎ উৎপাদন, স্বাক্ষরতার হার, খাদ্য উৎপাদন বাড়িয়েছিলাম।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমরা রূপকল্প- ২০২১ ঘোষণা দিয়ে সরকার গঠন করি। আমাদের যে পরিকল্পনা সেই পরিকল্পনার মধ্য দিয়েই আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাই। বাংলাদেশ ২১ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। যদি এই ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক ধারা না থাকতো তাহলে এদেশ কিন্তু এতো উন্নত হতে পারত না।’

প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকল্প: ঢাকার আজিমপুরে বিচারকদের জন্য ২০ তলা বিশিষ্ট আবাসিক ভবন নির্মাণ (৯০টি ফ্ল্যাট), তেজগাঁওয়ে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য বহুতল (১৩ তলা) আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ (ছয়টি ১৩ তলা ভবনে ২৮৮টি ফ্ল্যাট), মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ২৮৮টি আবাসিক ফ্ল্যাট, নোয়াখালী সদরে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ (৯টি ১০তলা ভবনে ৩২৪টি ফ্ল্যাট)।

এ ছাড়া রয়েছে ঢাকার রমনা পার্কের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং রমনা লেকসহ সার্বিক সৌন্দর্য বৃদ্ধিকরণ। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার লাইব্রেরি ভবন, এনেক্স ভবন এবং অডিটোরিয়াম নবায়নসহ আনুষাঙ্গিক কাজ। 

জাতীয় গৃহায়ণ কতৃর্পক্ষের প্রকল্প: মিরপুর ৯ নম্বর সেকশনে মধ্যম আয়ের লোকদের জন্য ১০৪০টি আবাসিক ফ্ল্যাট (স্বপ্ননগর-১) নির্মাণ, মিরপুর ১৫ নম্বর সেকশনে ১৪তলা বিশিষ্ট ১২৫০ বর্গফুট আয়তনের ১০০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ ও সিলেটের সুনামগঞ্জে সাইট অ্যান্ড সার্ভিসেস আবাসিক প্লট উন্নয়ন।

রাজউকের প্রকল্প: রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পূর্বাচল পানি সরবরাহ প্রকল্প (প্রথম পর্যায়) ও পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্রগতি উচ্চ বিদ্যালয় ভবন, পলখান উচ্চ বিদ্যালয় ও পূর্বাচল আদর্শ কলেজ ভবন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা