× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

শহীদ মিনারের পাশে জাদুঘর হবে কবে

হিরা তালুকদার

প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:২৯ এএম

আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:৩৬ এএম

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।

বছর ঘুরে আবার এলো মাতৃভাষা দিবস মহান ২১ ফেব্রুয়ারি। এ দেশের ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সারা বিশ্বে দিবসটি পালন করা হয় ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে। অথচ যেসব ভাষাশহীদের স্মরণে ঢাকায় গড়ে তোলা হয়েছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, তাকে কেন্দ্র করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় এক যুগের বেশি সময় পরও পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। এখনও ভাষাসৈনিকদের প্রকৃত তালিকা তৈরি ও শহীদ মিনারের পাশে একটি লাইব্রেরিসহ জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। এমনকি হাইকোর্টের ওই রায় বাস্তবায়ন না করায় ২০২১ সালে আদালত অবমাননার মামলাও হয়েছিল। এর পরও হাইকোর্টের রায় কার্যকর হয়নি।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মর্যাদা রক্ষায় হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ২৫ আগস্ট আটটি নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। নির্দেশনাগুলো হলো : ১. ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি রক্ষার্থে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষা করা এবং ওই এলাকায় পাহারার ব্যবস্থা নেওয়া, যেন ভবঘুরে ঘোরাফেরা করতে বা অসামাজিক কার্যকলাপ করতে না পারে; ২. মূল বেদিতে মিটিং-সমাবেশ থেকে বিরত রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয় (বেদির পাদদেশে মিটিং-সভা করা যাবে); ৩. ভাষা আন্দোলনে শহীদদের মরণোত্তর পদক ও জীবিতদের জাতীয় পদক দিতে হবে; ৪. যেসব ভাষাসৈনিক জীবিত আছেন তারা কেউ সরকারের কাছে কোনো আর্থিক সাহায্য চাইলে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়; ৫. বিশ্ববিদ্যালয় ও সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ ও মর্যাদা রক্ষা করতে হবে; ৬. শহীদ মিনারের পাশে একটি লাইব্রেরিসহ জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা এবং সেখানে ভাষা আন্দোলনের তথ্যসংক্রান্ত ব্রুশিউর রাখা যাতে পর্যটকরা তথ্যাবলি জানতে পারে; ৭. ভাষাসৈনিকদের প্রকৃত তালিকা তৈরির জন্য বিবাদীদের একটি কমিটি গঠন করতে হবে এবং ২০১২ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়; এবং ৮. ভাষাসৈনিকদের সব রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো এবং সাধ্যমতো সরকারি সুযোগ নিশ্চিত করতে বলা হয়।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মর্যাদা রক্ষায় এ রায় বাস্তবায়ন না হওয়ায় ২০২১ সালে আদালত অবমাননার মামলা করে এইচআরপিবি। এ মামলার শুনানি শেষে আদালতের দেওয়া রায় বাস্তবায়নে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা চার সপ্তাহের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দেন বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের বেঞ্চ। ২০২১ সালের ১৫ মার্চের ওই আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয় ক্যাবিনেট সচিব, মুক্তিযুদ্ধ এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রধান প্রকৌশলী ও আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্টের চিফ আর্কিটেক্টকে।

২০২১ সালে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে হাইকোর্টে দেওয়া এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ‘কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে লাইব্রেরিসহ জাদুঘর প্রতিষ্ঠার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ভবন দেখা হয়েছে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মূল নকশা ঠিক রেখে সেখানে নতুন কোনো অবকাঠামো করা যাবে কি না তা দেখা হচ্ছে। বিষয়টির সঙ্গে বহু কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কারণ বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর।’

রিটকারীর আইনজীবী ও এইচআরপিবির প্রেসিডেন্ট মনজিল মোরসেদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মর্যাদা রক্ষায় ২০১০ সালে দেওয়া রায় পুরোপুরি বাস্তবায়ন না করায় একাধিকবার আদালতের শরণাপন্ন হতে হয়েছে, এমনকি কিছু নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলেও জাদুঘর প্রতিষ্ঠা ও ভাষাসৈনিকদের প্রকৃত তালিকা তৈরির কাজ এখনও সমাপ্ত হয়নি। এর মধ্যে ভাষাসৈনিকদের প্রকৃত তালিকা তৈরির জন্য ইতিহাসবিদ ড. মুনতাসীর মামুনকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয় ২০২১ সালের ডিসেম্বরে। কিন্তু পরে মুনতাসীর মামুন জানিয়ে দেন, ভাষাসৈনিকদের প্রকৃত তালিকা তৈরি করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত এ অবস্থায়ই আছে। হাইকোর্টও এ ব্যাপারে নতুন কোনো নির্দেশনা দেননি। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে একটি লাইব্রেরিসহ জাদুঘর প্রতিষ্ঠা এবং সেখানে ভাষা আন্দোলনের তথ্যসংক্রান্ত ব্রুশিউর রাখার নির্দেশ বাস্তবায়নে ২০২১ সালে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি প্রতিবেদন দেয়। এরপর আর কোনো অগ্রগতি হাইকোর্টকে জানানো হয়নি।’

মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আবারও এ বিষয়ে আদালত অবমাননার মামলা করব।’ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ অনেকটা অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, ‘বারবার যদি হাইকোর্টের রায় অমান্য করা হয় তাহলে তো আমাদের তেমন কিছু করণীয় নেই। তার পরও আমরা আমাদের দেশের জন্য, ভাষাসৈনিকদের মর্যাদা রক্ষার জন্য কাজ করে যাব।’

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মর্যাদা রক্ষায় হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়ন না হওয়ার ব্যাপারে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমীন উদ্দিন বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নে সবাই বাধ্য। এর ব্যতিক্রমের সুযোগ নেই। বিষয়টি আমি ভালোভাবে খোঁজ নিয়ে দেখব।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা