পাট গবেষণায় অবদান রাখায় পুরস্কার পাচ্ছে ১১ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান

পাট চাষে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি, দেশিয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে পাট ও পাটপণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক তন্তু হিসেবে সম্ভাবনা তুলে ধরতে আজ সোমবার পালিত হবে জাতীয় পাট দিবস ২০২৩। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘পাট শিল্পের অবদান-স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ।’

দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে মন্ত্রণালয়। পাটখাত উন্নয়নে গবেষণা, বীজ আমদানিতে নির্ভরশীলতা হ্রাস, বহুমুখী পাটজাত পণ্যের উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অবদান রাখায় ১১টি ক্যাটাগরিতে ১১ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হবে। এছাড়া পাটসংশ্লিষ্ট অংশীজনদের ৭টি শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করা হবে।

রবিবার (৫ মার্চ) দুপুরে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পাট দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বীরপ্রতীক এসব তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. সেলিনা আক্তার, পাটকল করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. রাহাত আনোয়ার, বস্ত্র অধিদপ্তরে মহাপরিচালক মো. নুরুজ্জামান, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মাহমুদ হোসেন, তসলিমা কানিজ নাহিদাসহ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

সংবাদ সম্মেলন জাননো হয়, জাতীয় পাট দিবসের মূল অনুষ্ঠান হবে ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। এদিন মতিঝিলের করিম চেম্বারে বহুমুখী পাটপণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হবে। 

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাটজাত পণ্যকে বর্ষপণ্য-২০২৩ এবং সোনালী আঁশ পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছেন। কৃষি মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। পাটপণ্যকে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দিতে নানামুখী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। সে লক্ষ্যে অংশীজনসহ বছরব্যাপী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রদর্শনী, সেমিনার, সভা ও প্রচারণামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। প্রত্যেকটি বিভাগীয় শহরের পাশাপাশি কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে ও পাটসমৃদ্ধ ফরিদপুর জেলায় পাট ও পাটজাতপণ্য প্রদর্শনী ও মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। এছাড়াও ১২-১৬ মার্চ  শিল্পকলা একাডেমিতে ৫ দিনব্যাপী বহুমুখী পাটপণ্য প্রদর্শনী ও মেলা আয়োজন করা হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারের (জেডিপিসি) মাধ্যমে পাটপণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকার বহুমুখী পাটজাত পণ্যের উদ্ভাবন ও ব্যবহার সম্প্রসারণে গুরুত্বারোপ করেছে। বিজেএমসি’র মিলগুলো সরকারি মালিকানায় রেখে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬টি জুট মিল ইজারা দেওয়া হয়েছে।তার মধ্যে ৩টি মিলে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে বিদেশে রপ্তানি করছে। আরও ৫টি মিলের ইজারা প্রস্তাব চূড়ান্ত অনুমোদন হয়েছে।

তিনি জানান, পাট অধিদপ্তরের অধীনে ‘উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রাসারণ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ প্রকল্পটি দেশের ৪৬টি জেলার ২৩০টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।

দেশের প্রায় ৪ কোটি লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ খাতের উপর নির্ভরশীল জানিয়ে গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, পাটশিল্পের পুনরুজ্জীবন ও আধুনিকায়নের ধারা বেগবান করার লক্ষ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় ‘পাট আইন, ২০১৭’, ‘জাতীয় পাটনীতি, ২০১৮’ ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০’, ‘চারকোল নীতিমালা, ২০২২’ প্রণয়ন করেছে।