কুমিল্লা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৩ ১৮:৫৬ পিএম
আপডেট : ১৬ মার্চ ২০২৩ ১৯:২৯ পিএম
ঘটনায় অন্তত ৫ পুলিশসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি ছুড়লে আরও অন্তত ১০ জন গুলিবিদ্ধ হয়। প্রবা ফটো
কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে উপজেলার মাশিকাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোকতল হোসেনকে অবরুদ্ধ করে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলসহ দুটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।
এ সময় তাদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৫ পুলিশসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি ছুড়লে আরও অন্তত ১০ জন গুলিবিদ্ধ হন। আহতদের দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানি ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। একটিতে বাদী ওই স্কুলছাত্রীর বাবা এবং অন্যটিতে বাদী পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) বিকালে দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এসব বিষয় নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘মামলা লেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে আটক করা হয়েছে।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রথমে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ও সাড়ে ১০টায় দ্বিতীয় দফায় বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে প্রধান শিক্ষক ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। ওই ঘটনা ছাত্রীর সহপাঠীরা দেখে ফেলে। পরে সহপাঠীরা ওই ছাত্রীকে বাড়ি নিয়ে যায়, তার বাবার কাছে ঘটনার বর্ণনা দেয়।
ঘটনাটি জানাজানির পর দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষকের কার্যালয় ঘেরাও করে রাখে। এ সময় প্রধান শিক্ষককে রক্ষায় তার পক্ষে বহিরাগত কিছু লোকজন এসে ছাত্রদের ওপর হামলা চালায়। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়। এ ঘটনার পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ও অভিভাবকরাও আন্দোলনরত ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বিক্ষোভে অংশ নেন।
খবর পেয়ে দেবিদ্বার সার্কেল এএসপি আমিরুল্লাহ ও দেবিদ্বার থানার ওসি কমল কৃষ্ণ ধরের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিসহ অন্যান্য সদস্য, শিক্ষক ও এলাকার মানুষের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। রাত অবধি চলা বিক্ষোভে বিক্ষুব্ধ জনতা প্রধান শিক্ষককে স্কুলের মাঠে এনে বিচারের দাবি জানায়।
রাত পৌনে ৯টায় কুমিল্লা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান ও দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেজী চক্রবর্তী বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করে।