কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৩ ১৯:৪৫ পিএম
আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৩ ২০:৩০ পিএম
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। ফাইল ছবি
তিস্তা নদীর উজানে পশ্চিমবঙ্গের খাল খননের বিষয়ে ভারত সরকারের কাছে তথ্য চেয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রবিবার (১৯ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই তথ্য জানান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর আগে স্থায়ী প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে চায় বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ’তিস্তা নদীর পাড়ে দুটি খাল খননের বিষয়ে ভারতের কাছে নোট ভারবালের (কূটনৈতিকপত্র) মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে। যেখানে তিস্তা নদীর পানি কমে যাওয়া এবং এ-সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয় জানাতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় চিঠি পাঠিয়েছে কি না, তা তিনি জানেন না বলে জানান।
নোট ভারবালে ঢাকার পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে কি না—জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘এটা হয়তো ভারতের অনেকদিন আগেরই প্ল্যান। তবে এখনও কিছু তো হয়নি।’
এর আগে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার উজানে আরও দুটি খাল কেটে তিস্তার পানি প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করছে। এ খবর অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এ বিষয়ে যৌথ নদী কমিশনের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে ভারতের কাছে ব্যাখ্যা চাইবে বাংলাদেশ। পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের সূত্র ধরেই সাংবাদিকরা এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিবের কাছে বিস্তারিত জানতে চেয়েছিলেন।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, স্থায়ী প্রত্যাবাসন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে চায় না বাংলাদেশ। এজন্য ‘ইন গুড ফেইথ (সরল বিশ্বাসে)’ মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ’গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশ স্থায়ী প্রত্যাবাসন বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত, অর্থাৎ প্রত্যাবাসন একবার শুরু হলে এটা থেমে যাবে না এবং ধারাবাহিকভাবে চলবে, সেটি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া হবে।’
মাসুদ বিন মোমেন আরও বলেন, ’মিয়ানমারের মনে কী আছে, সেটি এ মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। সেটি সময় বলে দেবে। তবে মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে এবং গত পাঁচ-ছয় মাসে তাদের দিক থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।’
পররাষ্ট্র সচিব এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘১১ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ স্থান দিয়েছে এবং তাদের দেখভাল করছে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও সহায়তা দিচ্ছে এবং বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে। সুতরাং স্থায়ী প্রত্যাবাসন নিশ্চিত না করে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাবে না, এটাই বাস্তবতা।’