প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৩ ২১:৪৬ পিএম
আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৩ ২২:৫১ পিএম
রবিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংগৃহীত ফটো
বিএনপি অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর হাতে সৃষ্টি হয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়িত্ববোধ নেই। জনগণের প্রতি তাদের কোনো আস্থাও নেই। যখনই ক্ষমতায় এসেছে জনগণের ভোট নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে, একটা লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে।
রবিবার (১৯ মার্চ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘হাজার চক্রান্ত ষড়যন্ত্র করলেও দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না। বোমাবাজ, গ্রেনেড হামলাকারী, দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি, মানুষের অর্থ আত্মসাৎকারী, এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারীরা আর কোনোদিন এ দেশের ক্ষমতায় আসতে পারবে না। দেশের জনগণ কখনোই বিএনপি-জামায়াত জোটকে আর ক্ষমতায় আসতে দেবে না।’
উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি ভাঙা রেকর্ডের মতো বলেই যাচ্ছে, এ সরকার কিছুই করেনি। এই যে এত রাস্তাঘাট, এত উন্নয়ন, আজকে খাদ্যের অভাব নেই। ১২ মাস সবকিছু খেতে পাচ্ছেন। সেগুলো খেতে খুব ভালো লাগে কিন্তু বদনামটা করার সময় গালভরে বলে যায়। আমার মনে হয়, এদের সেই প্রশ্নটা করা উচিত, খেয়ে-দেয়ে নাদুসনুদুস হয়ে আমাদের বিরদ্ধে একখান মাইক লাগিয়ে সারা দিন কথা বলেই যাচ্ছে। আমি জানি না, এত মিথ্যা কথা কোথা থেকে আসে তাদের।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এ দেশের মানুষের জন্য কাজ করি। জাতির পিতা আমাদের এই দেশ দিয়ে গেছেন। কাজেই এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই আমাদের লক্ষ্য। সামনে রমজান মাস। মানুষের যেন কষ্ট না হয়, যা যা প্রয়োজন আমরা কিন্তু তার ব্যবস্থা করেছি। পাশাপাশি এটি নজরে রাখতে হবে কেউ যেন খাবার মজুদদারি করতে না পারে, কালোবাজারি করতে না পারে। তার জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
করোনাকালীন প্রণোদনার ফসল সবই পেয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ৫০ লাখ নয়, যদি আরও ৫০ লাখ লোককে দিতে হয় আমরা তাও দেব। মানুষের যেন কোনো কষ্ট না হয়। আর যারা একেবারে কর্মক্ষমহীন তাদের তো প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে বিনামূল্যে চাল দিচ্ছিই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কাজ করি জনগণের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে। কাজেই জনগণের যেন মঙ্গল হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করি। আমি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বলব, আমরা যে কাজগুলো করছি, এটি অন্তত মানুষের ঘরে ঘরে বলতে হবে। কারণ এরা (বিএনপি-জামায়াত) এই একটি মিথ্যা বারবার বলে বলে সেই মিথ্যাটাকেই সত্য করতে চায়।’
সারা দেশে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাওয়ার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানুষের কল্যাণে যা যা করার আওয়ামী লীগ সেটিই করে। মানুষ ভালো থাকলে বিএনপি-জামায়াতের মনে কষ্ট লাগে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এই মাটিতেই জন্মগ্রহণ করেছেন। তিনি এই দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। কাজেই তার বাংলাদেশে কোনো মানুষ অন্ন কষ্ট পাবে না। সেই প্রতিজ্ঞা নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মী, সহযোগী সংগঠনের প্রতিটি নেতাকর্মী তাদেরকেও সেইভাবে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে।’
শিক্ষার উন্নয়নে সরকার কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ শতভাগ ছেলেমেয়ে স্কুলে যাচ্ছে। কর্মসংস্থান বেড়েছে। এগুলো আওয়ামী লীগ সরকারের অবদান। কিন্তু বিএনপি অন্ধ বলে উন্নয়ন দেখে না। মাইক লাগিয়ে সারা দিন ভাঙা রেকর্ডের মতো মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের করে দেওয়া ডিজিটাল দেশের সুবিধা নিয়ে উল্টো বিএনপি সারা দিন বলে সরকার কোনো উন্নয়ন করেনি।’
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সূচনা বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রমুখ।
যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।