কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ মার্চ ২০২৩ ২০:৪৪ পিএম
আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২৩ ২২:২৭ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। সংগৃহীত ফটো
স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস।
রবিবার (২৬ মার্চ) রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাঠানো শুভেচ্ছাবার্তায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় ছুটির দিন স্বাধীনতা দিবসে অনুগ্রহ করে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। দুদেশের সম্পর্ক বন্ধুত্ব এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ঐতিহ্যের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। আমি আত্মবিশ্বাসী যে, দুদেশের গঠনমূলক দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার বিষয়টি রাশিয়া ও বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক স্বার্থ-পূরণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং এটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা গড়ে তোলার সঙ্গে সমন্বিত। আমি আপনাদের সুস্বাস্থ্য ও সাফল্য এবং আপনাদের দেশের জনগণের শান্তি ও মঙ্গল কামনা করছি।’
শুভেচ্ছাবার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি, সুশাসন, মানবাধিকার এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ তার বিশাল সম্ভাবনা অর্জন করবে। বর্তমানে আমেরিকান ও বাংলাদেশিরা একসঙ্গে আরও শক্তিশালী। বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্ব ও গত পাঁচ দশকের অর্জনে যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত।’
তিনি বলেন, ’অতি সম্প্রতি কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াই, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং একটি মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রচারের জন্য বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে সত্যিকারের অগ্রগতি অর্জন করেছে। যুক্তরাষ্ট্র অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সমর্থনে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা সকলের জন্য উন্মুক্ত। জলবায়ু সংকটে অভিযোজন কৌশল প্রণয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ পরিবেশ রক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্থিতিস্থাপকতা জোরদারে সম্ভাবনাময় নেতৃত্ব দেখিয়েছে।’
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ’গণতান্ত্রিক রীতিনীতি, সুশাসন, মানবাধিকার এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ তার বিশাল সম্ভাবনা অর্জন করবে। মূলত, বাংলাদেশ দ্রুত দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক নেতা হয়ে উঠছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা যখন আপনাদের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করছেন, তখন বাংলাদেশের গর্ব করার অনেক কারণ রয়েছে। রোহিঙ্গাদের উদারভাবে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য মানবিক অঙ্গীকার প্রদর্শন করেছে।’
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী বাংলাদেশের জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ’বিগত ৫২ বছরে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় ও উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশ থেকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম নেতৃত্বস্থানীয় অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে উত্তরণের পাশাপাশি ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) চেয়ে অপেক্ষাকৃত উন্নত অবস্থান অর্জন এবং ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) পরিকল্পিত অর্জনের দোরগোড়ায় উপনীত এখন বাংলাদেশ। বাংলাদেশের রয়েছে নানাবিধ অর্জন, অসাধারণ অর্থনৈতিক উন্নয়ন, অত্যন্ত সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, জলবায়ু ঝুঁকিগ্রস্ত দেশগুলোর পক্ষে বিশ্বমঞ্চে নেতৃত্বস্থানীয় অবস্থান এবং প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে স্বাগত জানানো ও আশ্রয় দানের সুবিশাল উদারতা।’
তিনি আরও বলেন, ’অর্থনৈতিক ও টেকসই উন্নয়নের প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকারসমূহ জাতিসংঘ পুরোপুরি সমর্থন করে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে জোরালো ও দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের পাশাপাশি আমাদের পারস্পরিক মূল্যবোধগুলোকে গুরুত্ব প্রদান করে। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘের সদস্য হওয়ার পূর্বেই প্রণীত এ দেশের সংবিধানে জনগণের যেসব মৌলিক মানবাধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো: বাকস্বাধীনতার অধিকার, ধর্মচর্চার অধিকার, চলাফেরা ও সমাবেশের স্বাধীনতার অধিকার, নিজভাষায় কথা বলার অধিকার এবং জাতিসংঘ সনদের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ অন্যান্য অধিকার।