× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

চট্টগ্রামে অগ্নিঝুঁকি

মৃত্যুকূপে জীবিকার যুদ্ধ

এস এম রানা, চট্টগ্রাম

প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:৩৯ এএম

আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২৩ ১১:২০ এএম

মৃত্যুকূপে জীবিকার যুদ্ধ

চট্টগ্রাম মহানগরীর রেয়াজউদ্দিন বাজারে মিউনিসিপ্যাল সিটি হকার মার্কেট। সরু গলির দুই পাশে সারিবদ্ধ দোকান। পাঁচ ফুট বাই ছয় ফুট আয়তনের দোকানে বসে থাকতে হয় বিক্রেতাকে।

পসরা সাজানোর পর ছোট্ট চেয়ারে বসে থাকা বিক্রেতাকে সামান্য নড়াচড়া করতে গেলেই রীতিমতো কসরত করতে হয়। আবার সরু ওই গলিতে ৭-৮ ফুট পর পর ছাদ বরাবর ঠেস দিয়ে রাখা হয়েছে মই। কারণ পণ্য মজুদ করা আছে দ্বিতীয় তলার গুদামে। দরকার হলেই দোকানিকে গুদামে উঠতে হয় সেই মই বেয়ে। আবার নামতে হয় পণ্য নিয়ে। মই রাখায় আরও সরু হয়ে গেছে এ গলি। তবু সেই সরু গলি দিয়েই হাঁটতে হয় ক্রেতাদের। গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করতে হয়, ছুটতে হয় মৃত্যুকূপের মতো এক গলি থেকে অন্য গলিতে পণ্যের সন্ধানে। 

এই ‘মৃত্যুকূপে’র মতো ভয়ংকর গলিতেই জীবিকার তাগিদে আসা-যাওয়া করতে হয় ফারুক আজমকে। মিউনিসিপ্যাল সিটি হকার মার্কেটের এক দোকান মালিক তিনি। এখানকার ব্যবসায়ী সমিতির সিনিয়র সহসভাপতিও। দেখতে দেখতে টানা ২৩ বছর কেটে গেছে তার এই বিপদসংকুল মার্কেটে। স্পষ্ট করেই বললেন তিনি, ‘এটি অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট। কিন্তু জীবিকার তাগিদে এখানে দোকান দিয়েছি। এটা আমার আহার জোগায়। এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যাওয়ার সুযোগ কোথায় বলেন?’ 

ফারুক আজমের কাছে যেটি জীবিকা, আহার জোগানোর তীর্থস্থান, ফায়ার সার্ভিসের প্রতিবেদনে সেটিই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ এক মৃত্যুকূপ। শঙ্কা আর ঝুঁকি নিয়ে এখানে জীবিকার অন্বেষণ করতে হয় ফারুক আজমের মতো হাজার হাজার ব্যবসায়ীকে। 

রিয়াজুদ্দিন বাজারের এমন ‘মৃত্যুকূপে’র মতো মার্কেটগুলোয় ফারুক আজমের মতো অন্তত ১৫ হাজার ব্যবসায়ী জীবিকার চাষবাস করে থাকেন। ১১০টি মার্কেট নিয়ে গড়ে উঠেছে এই বাজার। এখানকার দোকানগুলোতে শ্রমিকের সংখ্যা অন্তত ৫৫ হাজার। দোকানমালিক, কর্মচারী ও শ্রমিকসহ অন্তত ৭০ হাজার মানুষের কাছে পণ্য কিনতে প্রতিদিন যাতায়াত করেন অন্তত দেড় লক্ষাধিক ক্রেতা। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দুই লাখ মানুষের আনাগোনা  রেয়াজউদ্দিন বাজারে। ঝুঁকিপূর্ণ এই বাজারে যেকোনো সময় ঘটতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা। এটি হয়ে যেতে পারে রাজধানীর বঙ্গবাজারের মতো বিরানভূমি। অঙ্গার হয়ে যেতে পারে ক্রেতা-বিক্রেতারা। পথে বসতে পারেন ব্যবসায়ীরা।

তা ছাড়া নির্মম সত্য হতো, চট্টগ্রামে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার উদাহরণও রয়েছে। ২০০৬ সালে কালুরঘাট শিল্পাঞ্চলের গার্মেন্টসে আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে যায় ৬০ জন। ২০২২ সালের ৪ জুন সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃত্যু ঘটে ৫১ জনের। এই ৫১ জনের মধ্যে আটজন এখনও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে ‘অজ্ঞাত’ হিসেবে ফ্রিজবন্দি হয়ে আছেন। এরপর বছর না ঘুরতেই গত মার্চ মাসে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃত্যু ঘটেছে আটজনের।

গোটা মহানগরীই ঝুঁকিপূর্ণ

চট্টগ্রাম দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী। কিন্তু বিশেষত ২০০৬ সালে কালুরঘাটের অগ্নিকাণ্ডের পর এখানকার বিভিন্ন স্থাপনা কতটুকু ঝুঁকিমুক্ত, তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। কারণ এখানে শিল্পকারখানা থেকে শুরু করে বিপণিবিতান, গার্মেন্টস থেকে শুরু করে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের অনুষঙ্গ কন্টেইনার ডিপো- সবই আছে; অথচ এগুলো নির্মাণের সময় ইমারত নির্মাণবিধি যথাযথভাবে মানা হয়নি। অগ্নিনির্বাপণের স্বীকৃত পদ্ধতিও অনুসরণ করা হয়নি; ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। রিয়াজুদ্দিন বাজার, হকার মার্কেট কিংবা টেরিবাজার- সবখানেই এ রকম ঘটেছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, ভারী শিল্প শিপইয়ার্ড, অক্সিজেন কারখানা, কন্টেইনার ডিপো, গার্মেন্টস ও ইস্পাত কারখানারও অবস্থা একই। ফায়ার সার্ভিসের প্রতিবেদনেও পর্যবেক্ষকদের এ ধারণার সত্যতা স্পষ্টভাবেই খুঁজে পাওয়া যায়।

২০১৯ সালে চট্টগ্রাম মহানগরীর ভবন ও শিল্পকারখানা পরিদর্শন করে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছিল, এ মহানগরীতে প্রায় ২০ হাজার ভবনের ৯৭ শতাংশই অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ। তখন ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত ভবনগুলোতে লাল ব্যানার টাঙিয়ে দিয়েছিল ফায়ার সার্ভিস। ভবনের অগ্নিঝুঁকি কমাতে করণীয় নির্দেশনাও দিয়েছিল। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী কিছু ভবন মালিক অগ্নিনির্বাপণ ঝুঁকি কমাতে পানির লাইন ও পাইপ স্থাপন কিংবা পানির ট্যাংকের ব্যবস্থা করেছিলেন। এ ধরনের ভবনের একটি কাজীর দেউড়ি এস এস খালেদ রোডের কর্ণফুলী টাওয়ার। এ টাওয়ারকেও ২০১৯ সালে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করেছিল ফায়ার সার্ভিস। মালিকপক্ষ তাই ফায়ার সার্ভিসের নির্দেশনা মেনে তখন অগ্নিঝুঁকি কমাতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম স্থাপন করেন। 

এভাবে হাতেগোনা কিছু ভবনে নির্দেশনা মানা হলেও বেশিরভাগ স্থাপনাতেই সেগুলো অনুসরণ করা হয়নি। তাই আশঙ্কাও দূর হয়নি। বরং ২০২২ সালের মে মাসে বিএম ডিপোর অগ্নিকাণ্ড, গত মার্চ মাসে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের বিস্ফোরণ এবং ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনায় সেই আশঙ্কা সত্য হয়ে উঠেছে। 

জলাধার নেই, ফায়ার সার্ভিস অসহায়

মহানগরে ভবন তৈরির প্রয়োজনে ধারাবাহিকভাবে কৌশলে ভরাট করা হচ্ছে জলাধার ও পুকুর। যেমন, কৌশলে ভরাট করা হয়েছে হামজারবাগের হামজা দিঘিকে। প্রথমে আবর্জনা ফেলে সেটিকে নষ্ট করা হয়েছে; তারপর মাটি ফেলে ঘর তোলা হয়েছে। একইভাবে ভরাট করা হয়েছে আন্দরকিল্লার রাজা পুকুর, দেওয়ানবাজারের দেওয়ানজি পুকুর ও খতিবের হাট পুকুরসহ বহু জলাধার।

২০১৯ সালে জরিপের পর ফায়ার সার্ভিসের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেছিলেন, ‘মহানগরীতে প্রায় ২০ হাজার ভবন আছে। এর মধ্যে মাত্র তিন শতাংশ ভবন মালিক অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা রেখেছে। বাকি ৯৭ শতাংশ ঝুঁকিতে আছে।’ ওই সময় ভবনের গা ঘেঁষে ঊর্ধ্বমুখী ভবন তৈরির প্রবণতার জন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। একইভাবে মহানগরীর মার্কেট নামের মৃত্যুকূপগুলোর জন্য চউককেই দায়ী করেছেন তামাকমুন্ডি লেইন বণিক সমিতির সভাপতি সরওয়ার কামাল। যদিও চউক এসব ব্যাপারে এখনও নীরব।

তবে অগ্নিঝুঁকি এড়াতে এরই মধ্যে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ব্যবসায়ীসহ অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠক থেকে ১১ দফা নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে ১৮টি সুপারিশ করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক এমডি আবদুল মালেক বলেন, ‘বিএম ডিপো, সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্ট ও তুলার গুদামে আগুনের পর চট্টগ্রামের সব কলকারখানা ও বিপণিবিতান পর্যায়ক্রমে পরিদর্শন করা হচ্ছে। অগ্নিঝুঁকি চিহ্নিত করে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সংশ্লিষ্টদের জানানো হচ্ছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনও কাজ করছে। ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত হওয়ার পর করণীয় সম্পর্কে জেনেও কেউ নির্বিকার থাকলে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরে অগ্নিঝুঁকিতে থাকা মার্কেটে ভূগর্ভস্থ জলাধার নির্মাণের জন্য সিটি করপোরেশনের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। চিঠিতে নিউমার্কেট, রেয়াজউদ্দিন বাজার, টেরিবাজার এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জলাধার নির্মাণের অনুরোধ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, গত মার্চ ও চলতি মার্চ মাসে পরিদর্শন করে মার্কেটগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পাওয়া গেছে। দোকানগুলোতে উচ্চ দাহ্য কাপড়জাতীয় পণ্য বিক্রয়ের জন্য সংরক্ষণ করতে দেখা গেছে। কিন্তু মার্কেটগুলোতে পানির উৎস না থাকায় হঠাৎ অগ্নিকাণ্ড ঘটলে পানির সংকটে অগ্নিনির্বাপণ কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও অনেক বেশি হবে। 

জলাধারের অভাব কতটা প্রকট

অনুসন্ধান বলছে, পরিবেশ অধিদপ্তরের ১৯৮১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চট্টগ্রামে প্রায় ২৫ হাজার পুকুর ও জলাশয় ছিল। তিন দশকেরও বেশি সময় পর গত ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক মোরশেদ হোসেন মোল্লা ‘চট্টগ্রাম মহানগরীতে জলাভূমিতে স্থানিক ও অস্থায়ী পরিবর্তন’ শীর্ষক এক সমীক্ষা পরিচালনা করেন। তখন দেখা যায়, মহানগরীতে মাত্র ১ হাজার ২৪৯টি জলাশয় রয়েছে!

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) অনুসারে, সরকারি বা ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জলাধার ভরাট করা নিষিদ্ধ। কিন্তু এ আইন মানা হচ্ছে না। জলাধারের সংখ্যা কমে যাওয়ায় গত কয়েক দশকে চট্টগ্রামে টিউবওয়েলের সংখ্যা বেড়েছে। চট্টগ্রাম ওয়াসার তথ্যমতে, ২০০০ সালে মহানগরীতে লাইসেন্সপ্রাপ্ত টিউবওয়েলের সংখ্যা ছিল মাত্র ৬০টি। ২০২২ সালে এই সংখ্যা হয়েছে চার হাজার ২৩৭টি। টিউবওয়েল সংখ্যা যত বাড়ছে, ভূগর্ভস্থ পানির স্তরও তত নিচে নামছে।

ধারাবাহিকভাবে পানির উৎস হারানোর কারণে এখন নগর পুড়লেও তা নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে। কারণ পানি মিলছে না, ফায়ার সার্ভিসকে ধরনা দিতে হচ্ছে সিটি করপোরেশনের কাছে। বলতে হচ্ছে, ‘জলাধার দিন।’ চট্টগ্রাম ওয়াসার কাছেও জলাধারের জন্য ধরনা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। চেয়েছে ফায়ার হাইড্রেন্ট। অবশ্য চট্টগ্রাম ওয়াসা ১৭৩টি হাইড্রেন্ট স্থাপন করেছে। যদিও সেগুলো সচল হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটের তালিকা তৈরির পর থেকে তারা বার বার সেসব মার্কেটে ধরনা দিয়েছেন। বিভিন্ন সময় ব্যবসায়ীদের চিঠিও দিয়েছেন। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। 

ইতোমধ্যে অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের যান্ত্রিক সক্ষমতা খানিকটা বেড়েছে। যুক্ত হয়েছে তিনটি টার্ন টেবিল লেডার (টিটিএল)। এই গাড়িগুলোতে একটি দীর্ঘ মই থাকে। যার মাধ্যমে ১৭ তলা থেকে সর্বোচ্চ ২০ তলা ভবন পর্যন্ত পানি ছিটানো সম্ভব। এ ছাড়া রাসায়নিক অগ্নিকাণ্ড নির্বাপণে রয়েছে দুটি বিশেষায়িত গাড়ি। ২১ হাজার লিটার পানির ধারণক্ষমতা সম্পন্ন আরেকটি বিশেষায়িত গাড়িও আছে ফায়ার সার্ভিসের বহরে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা