× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আজ দেশের যেসব স্থানে ঈদ উদযাপিত হচ্ছে

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:৫৮ এএম

আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২৩ ১০:২৯ এএম

ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

সৌদি আরবের আকাশে বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) পবিত্র ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা গেছে। তাই আজ শুক্রবার দেশটিতে ঈদ উদযাপন করছেন মুসলমানরা। তবে বাংলাদেশের আকাশে গতকাল ঈদের চাঁদ দেখা না গেলেও সৌদির সঙ্গে মিল রেখে দেশের বিভিন্ন স্থানে আজ ঈদ উদযাপিত হচ্ছে। 

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে নোয়াখালী, ভোলা, শরীয়তপুর, চাঁদপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, লক্ষ্মীপুর ও পিরোজপুর, সাতক্ষীরা, ফরিদপুর ও ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আজ ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে।

চাঁদপুর

চাঁদপুরের অর্ধ শতাধিক গ্রামে শুক্রবার ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। ১৯২৮ সালে আগাম রোজা রাখাসহ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা পালনের নিয়ম চালু করেন সাদ্রা দরবার শরিফের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইসহাক। সেই থেকে বেশ কয়েকটি গ্রাম আরব দেশসমূহের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখা ও ঈদ উদযাপন করে থাকে।

সাদ্রা দরবার শরিফের প্রতিষ্ঠাতা পীর মাওলানা ইসহাক ১৯২৮ সাল থেকে বিশ্বের যেকোনো দেশে সর্ব প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো উদযাপন করেছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবছর রোজা ও ঈদ পালন করা হয়। এ ছাড়া শবেবরাত, শবেকদর এবং শবেমেরাজসহ ধর্মীয় অনুষ্ঠান এভাবেই পালিত হয়ে আসছে।

স্থানীয়রা জানান, চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, সমেশপুর, অলীপুর, ভোলাচোঁ, ঝাকনি, সোনাচোঁ, প্রতাপপুর, ও সুরঙ্গচাইল গ্রাম। ফরিদগঞ্জ উপজেলার কামতা, ভূলাচোঁ, সোনাচোঁ, উভারামপুর, উটতলী, বাচপাড়, টোরামুন্সিরহাট, মূলপাড়া, বদরপুর, আইটপাড়া, সুরঙ্গচাইল, কাইতপাড়া, নূরপুর, সাচনমেঘ, হাঁসা ও গোবিন্দপুর এবং মতলব উত্তর উপজেলার পাঁচানী, বাহেরচর পাঁচানী, আইটাদি পাঁচানী, দেওয়ানকান্দি, লতুর্দী, সাতানী ও দক্ষিণ মাথাভাঙ্গার আংশিক, আমিয়াপুর গ্রামের একাংশ, মধ্য ইসলামবাদ গ্রামের একাংশ, গাজীপুর গ্রামের একাংশ, মধ্য এখলাছপুর (বড়ইকান্দি) গ্রামের একাংশ, ফরাজীকান্দি, রামদাশপুর, চরমাছুয়া, হাজিপুর, দক্ষিণ রামপুর, সরকারপাড়া ও ঠাকুরপাড়ায় এবারও সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখা হয় এবং ঈদ উদযাপন করেন গ্রামবাসী।

সাদ্রার দরবার শরীফের পীর শাইখ মো. আরিফ চৌধুরী জানান, এই দরবারের প্রতিষ্ঠাতা পীর মাওলানা ইসহাক প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ধর্মীয় উৎসব পালনের রেওয়াজ চালু করেন। চাঁদ দেখার ভিত্তিতে মুসলিম বিশ্ব সিদ্ধান্ত নেয়। আমরা তার ভিত্তিতে রোজা রাখি। মুসলিম বিশ্বের প্রথম চাঁদ দেখা গেলে রোজা ও ঈদ পালন করতে হবে। 

নোয়াখালী

আজ নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ ও সদর উপজেলার চার গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। এসব গ্রামে ৯১ বছর ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করা হয়। সৌদি আরবে চাঁদ দেখা ঘোষণার পরপরই এসব গ্রামে ঈদের আনন্দ বইছে। গ্রামগুলো হলো- নোয়াখালী পৌরসভা লক্ষ্মীনারায়ণপুর ও হরিনারায়ণপুর গ্রাম, বেগমগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বসন্তবাগ ও ফাজিলপুর গ্রাম।

ভোলা

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ও রতনপুর গ্রাম, বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ও মুলাইপত্তন গ্রাম, তজুমদ্দিন উপজেলার শিবপুর, খাসেরহাট, চাঁদপুর ও চাঁচড়া গ্রাম, লালমোহন উপজেলার পৌর শহর ও ফরাজগঞ্জ গ্রাম এবং চরফ্যাশন উপজেলার পৌর শহর, দুলারহাট, ঢালচর ও চর পাতিলা মোট ১৪টি গ্রামে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর। জেলার ৫ উপজেলায় ১৪টি গ্রামের প্রায় ৩ হাজার পরিবার প্রতিবছর এক দিন আগেই ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা পালন করে থাকে।

শরীয়তপুর

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর দরবার শরিফ সূত্রে জানা গেছে, ১৯২৮ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে তারাবি, রমজান ও ঈদ উদযাপন করেন ৩০ গ্রামের প্রায় আড়াই হাজার মানুষ। এর আগে গত ২৩ মার্চ থেকে পবিত্র রমজানের রোজা রেখেছেন সুরেশ্বর দরবার শরিফের ভক্তরা।

দরবারের ভক্ত হারুন চৌধুরী লক্ষ্মীপুর জেলা থেকে ঈদের নামাজ পড়তে সুরেশ্বর দরবারে এসেছেন। তিনি বলেন, সুরেশ্বর দরবারে এসেছি ঈদের নামাজ পড়তে। সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে আমার পূর্বপুরুষরাও রোজা-নামাজ করেছেন। আমরাও করছি। দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

দিনাজপুর

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দিনাজপুরের বেশ কয়েটি গ্রামে আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঈদুল ফিতরের জামাত। প্রায় দুই হাজার মুসল্লি আজ ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করছেন। জেলার ১৩টি উপজেলায় প্রায় ৪৫টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। দিনাজপুর শহর, চিরিরবন্দর, বিরল, কাহারোল, বিরামপুর উপজেলাসহ বেশকিছু এলাকায় সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। ঈদ উদযাপন কমিটির সভাপতি মকবুল হোসেন জানান, আজ এবার জেলার ১৩ থানায় প্রায় ৪৫টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

লালমনিরহাট

লালমনিরহাটের কয়েকটি স্থানে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। আজ সকাল ৯টায় কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের হারিশহর গ্রামে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুন্সীপাড়া জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা ইমান আলী। তিনি বলেন, প্রতিবার আমরা সৌদি আরবের আকাশে চাঁদ দেখা গেলে ঈদ পালন করি। ঈদের জামাতে দুই শতাধিক মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও অংশ নেন।

কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার, সুন্দ্রহবী, কাকিনা, চাপারহাট, চন্দ্রপুর,আমিনগঞ্জ ও মুন্সীপাড়া গ্রামের শতাধিক পরিবারের মুসল্লিরা নামাজ আদায় করছেন। প্রতিবছর সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে এক দিন আগে রোজা ও ঈদ করেন এসব গ্রামের মুসল্লিরা।

লক্ষ্মীপুর

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে এক দিন আগেই ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন লক্ষ্মীপুরের ১১ গ্রামের মানুষ। এদিন সকাল ১০টায় রামগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ-পূর্ব নোয়াগাঁও তালিমুল কুরআন নূরানি মাদ্রাসার ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ উপজেলার ৪টি ও রায়পুর উপজেলার একটি মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। 

জেলার রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও, জয়পুরা, বিঘা, বারোঘরিয়া, হোটাটিয়া, শরশৈই, কাঞ্চনপুর ও রায়পুর উপজেলার কলাকোপাসহ ১১টি গ্রামের সহস্রাধিক মানুষ সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ করে আসছেন। তারা পৃথকভাবে স্ব-স্ব এলাকার মসজিদে ঈদের নামাজের আয়োজন করেছেন। রামগঞ্জ পৌরসভার জাহাঙ্গীর টাওয়ার, উপজেলার পূর্ব বিঘা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, পশ্চিম নোয়াগাঁও জামে মসজিদে ও রায়পুরের কলাকোপা গ্রামে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। মাওলানা ইসহাকের অনুসারী হিসেবে ৪৬ বছর ধরে এ নিয়ম পালন করে আসছেন তারা। 

পিরোজপুর

আজ ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন পিরোজপুরের ৮ গ্রামের ৭ শতাধিক পরিবার। এদিন জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার ৬ গ্রাম, কাউখালী উপজেলার ১টি গ্রাম, নাজিরপুরের ১টি গ্রামে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের ভাইজোড়া, কচুবুনিয়া, সাপলেজা, ঝাটিবুনিয়া, খেতাছিড়া ও চকরগাছিয়া গ্রামের ৬ শতাধিক পরিবার, কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠী ইউনিয়নের শিয়ালকাঠী গ্রামের ৪০ পরিবার, নাজিরপুর উপজেলার শেখমাটিয়া ইউনিয়নের খেজুরতলা গ্রামের ৬০ পরিবার ঈদ উদযাপন করছেন।

ফরিদপুর

সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে এক দিন আগেই আজ ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন ফরিদপুরের বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলার ১৩ গ্রামের তিন সহস্রাধিক মানুষ। বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ও রুপাপাত ইউনিয়নের কাটাগড়, সহস্রাইল, মাইটকোমড়া, ভুলবাড়িয়া, রাখালতলী, বারাংকুলা, দড়ি সহস্রাইল এবং আলফাডাঙ্গা উপজেলার ইছাপাশা ও শুকুরহাটাসহ ১৩টি গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার মানুষ এতে অংশ নিচ্ছেন।

বোয়ালমারীর কাটাগড় গ্রামের বাসিন্দা মাহিদুল হক এ সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব  দিয়ে থাকেন। তিনি জানান, তাদের পুর্বপূরুষ থেকে তারা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার মির্জাখিল পীরের তরিকাপ্রাপ্ত চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার হজরত ইয়াছিন আলী (রহ.) পীরের অনুসারী। যারা মির্জাখিল পীরের অনুসারী, তারা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করে থাকেন।

সাতক্ষীরা

এক যুগ ধরে সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করে আসছেন সাতক্ষীরার বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ। আজ সৌদি আরবে ঈদ উদযাপন করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় সাতক্ষীরা সদরসহ প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ ঈদুল ফিতর পালন করছেন।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাওখোলা, সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ইসলামকাটি, গোয়ালচত্বর, ভাদড়া, ঘোনা, ভাড়খালি, মিরগিডাঙ্গাসহ প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ ঈদ উৎসবে অংশগ্রহণ করে থাকেন।

ময়মনসিংহ

সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে আজ ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার বাহাদুরপুর সুরেশ্বর দরবার শরিফে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হচ্ছে। গতকাল রাতে নুরমহল দরবার শরিফের পীর ও মোর্শেদ সৈয়দ শাহ নূরে আফতাব পারভেজ নূরী আল সুরেশ্বরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

আজ সকাল সাড়ে ৯টায় সুরেশ্বর দরবার শরিফে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা