প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২১ মে ২০২৩ ১৮:৩৭ পিএম
আপডেট : ২১ মে ২০২৩ ২০:৩০ পিএম
রবিবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে তিনটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। প্রবা ফটো
নিষেধাজ্ঞা বা পাল্টা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কোনো লাভ হয় না বলে মনে করেন তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘স্যাংশন আর পাল্টা স্যাংশন- এগুলো দিয়ে কোনো লাভ হয় না, এরই মধ্যে এটি প্রমাণিত।'
রবিবার (২১ মে) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে তিনটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন শেষে ‘স্যাংশন’ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
একটি দৈনিক পত্রিকার প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে সাংবাদিকরা দেশের ওপর নতুন স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) আরোপের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যে পত্রিকা লিখেছে তাদের জিজ্ঞাসা করুন, আমার এ বিষয়ে কোনো কিছু জানা নেই। আরেকটি কথা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের উন্নয়ন সহযোগী, তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। ৫১ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়তা করে আসছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণসহ নানা সহায়তা দিয়ে আসছে এবং সেই সহায়তা অব্যাহত আছে। আমরা মনে করি, আমাদের যারা উন্নয়ন সহযোগী, তাদের সহযোগিতায় দেশ আজ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে।’
এ ছাড়া নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা—এগুলো দিয়ে কোনো লাভ হয় না, সেটি এরই মধ্যে প্রমাণিত হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ইরানের বিরুদ্ধে অনেকেই স্যাংশন দিয়ে রেখেছে। ইরানের সরকার তো পতন হয়ে যায় নাই, বহাল তবিয়তে আছে। বহু বছরের স্যাংশনেও কিউবাকে টলানো যায় নাই, সরকারও পরিবর্তন হয় নাই। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বহু বছর ধরে বহু স্যাংশন দেওয়া আছে, সেখানকার সরকার তো পরিবর্তন হয় নাই। রাশিয়ার বিরুদ্ধে বহু স্যাংশন, সেগুলো অমান্য করেই ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং অনেকেই তাদের কাছ থেকে পণ্য আমদানি করছে। অর্থাৎ এগুলো দিয়ে আসলে লাভ হয় না।’
এ দিন বিএনপির আন্দোলনের ঘোষণাকে ‘কাগুজে বাঘ’ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কদিন পরপর বিএনপির নানা আন্দোলনের ঘোষণা আসলে সেগুলো ‘কাগুজে বাঘ’ এবং ‘খালি কলসি বাজে বেশি’-এর মতো।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই এক দফা বহু আগে থেকেই তারা দিয়েছে। বিএনপি মাঝেমধ্যেই এক দফায় যায় আবার দফা বাড়ে, কিছু দিন পরপর এই ঘটনা ঘটে। আগেও তারা এ রকম ১০ দফা, ১৪ দফা, ১২ দফা, সর্বশেষ ১৭ দফা দিয়েছিল। তাদের জোটের আকারও বাড়ে আবার কমে, অ্যামিবার মতো নিজেরা ভাগ হয়ে যায় আবার দ্বিখণ্ডিত-ত্রিখণ্ডিত হয়।’
তিনি বলেন, ‘’বিএনপির এই সার্কাস আমরা বহুদিন ধরে দেখে আসছি। আর মির্জা ফখরুল সাহেবের বক্তব্যের সার্কাসও মানুষ দেখছে। মানুষের কাছে এগুলো এখন হাস্যরস আর কৌতুক। বিএনপির এসব ঘোষণা ‘কাগুজে বাঘ’ আর ‘খালি কলসি বেশি বাজে’ ছাড়া অন্য কোনো কিছুই নয়।’’
ভোগ্যপণ্যের অবৈধ মজুদদারি ও দ্রব্যমূল্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে পণ্যের কোনো সংকট নেই। সব ভোগ্যপণ্য যথেষ্ট মজুদ আছে এবং ভোগ্যপণ্য আসছেও। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, কয়েকজন ব্যবসায়ী এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার অপচেষ্টায় থাকে। কিছু আড়তদার, মজুদদার অস্বাভাবিকভাবে তাদের মুনাফা লাভের জন্য দাম বাড়ায়। এটি অনৈতিক, আইন বিরুদ্ধ।’
এর আগে তথ্যমন্ত্রী রাজনীতি গবেষক এইচএম মেহেদী হাসান গ্রন্থিত ‘সাবাস বাংলাদেশ’, ‘ছোটদের বঙ্গবন্ধু’ ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস ‘ভালোবাসার ফুল’ শীর্ষক তিনটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
এ সময় হাছান মাহমুদ বই তিনটির লেখককে ও প্রকাশক অনার্য পাবলিকেশনস ও অর্জন প্রকাশনকে অভিনন্দন জানান। গ্রন্থকার মেহেদী হাসান ও প্রকাশক আবু হাশেম সরকার মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।