প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ মে ২০২৩ ২২:৩২ পিএম
আপডেট : ২১ মে ২০২৩ ২২:৩৯ পিএম
সংগৃহীত ফটো
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে পাকিস্তানিরা যে গণহত্যা চালিয়েছিল, তার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে বিলম্বের কারণ জানিয়েছে ইউরোপের একটি প্রতিনিধিদল। তারা বলছে, এখনও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষে রাজনীতি চলমান। এটি একটি কারণ। আরেকটি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রভাবশালী কিছু দেশের শীতল যুদ্ধের রাজনৈতিক প্রভাব এখনও মুছে যায়নি। এসব কারণেই গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় সম্ভব হচ্ছে না।
রবিবার (২১ মে) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব বলেন। এটির আয়োজন করে প্রজন্ম’৭১, আমরা একাত্তর ও ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ ফোরাম (ইআরএফ) নামে তিনটি সংগঠন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন উরোপীয় প্রতিনিধিদলের সদস্য নেদারল্যান্ডসের সাবেক সংসদ সদস্য ও মানবাধিকারকর্মী হ্যারি ভ্যান বোমেল, আমস্টারডামের ভ্রিজে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. অ্যান্থনি হলসল্যাগ, যুক্তরাজ্যের সাংবাদিক ক্রিস ব্ল্যাকবার্ন, ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ ফোরামের (ইবিএফ) সভাপতি বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়া, ইবিএফ—এর যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি আনসার আহমেদ উল্লাহ। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন।
হ্যারি ভ্যান বোমেল বলেন, ‘একাত্তরে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশ্ব রাজনীতিতিতে শীতল যুদ্ধ চলছিল। সেই শীতল যুদ্ধের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে পাকিস্তানের পক্ষে সক্রিয় ছিল। অন্যদিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং ভারত বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। সেই শীতল যুদ্ধের বিশ্ব রাজনীতির প্রভাব এখনও মুছে যায়নি। এ কারণেই একাত্তরে বাংলাদেশে পাকিস্তান বাহিনীর গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বিলম্বিত হচ্ছে।’
বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়া বলেন, ‘বিশ্ব রাজনীতির প্রভাব ছাড়াও বাংলাদেশেও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ বিপক্ষ নিয়ে বিপরীতমুখী রাজনীতি এখনও চলমান। এটাও গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে বাধা সৃষ্টি করছে। বিপরীতমুখী রাজনীতির কারণে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের উদ্যেগ নিতেই অনেক সময় চলে গেছে।’
সংসদ সদস্য অ্যারমা দত্ত বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের গণহত্যার স্বীকৃতির জন্য ধাপে ধাপে একটি পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি আমরা। এখন যে ধাপে আছি তার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় আর বেশি দূরে নয়। জাতিসংঘ থেকে খুব দ্রুতই গণহত্যার স্বীকৃতি পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।’
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ৫১ বছর পরে এসে আমাদের গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ের দবি জানাতে হচ্ছে। এটা খুব মর্মান্তিক বিষয়। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার যাবতীয় তথ্য-প্রমাণ আমাদের আছে। সেই দলিল প্রমাণ করে একাত্তরে বাংলাদেশে গণহত্যা হয়েছে। বাংলাদেশের উপস্থাপন করা প্রমাণের ভিত্তিতে আমাদের দাবির সঙ্গে বিশ্বের মানুষের সম্পৃক্তাও বাড়ছে। এজন্যই দ্রুত জাতিসংঘের স্বীকৃতি পাওয়ার প্রত্যাশা দৃঢ় হচ্ছে।’