প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ জুন ২০২৩ ১৮:০১ পিএম
আপডেট : ১২ জুন ২০২৩ ১৮:৪১ পিএম
দেশের নাগরিকদের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন এখন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীন পরিচালিত করতে ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০২৩’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (১২ জুন) মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানান, গত বছরের ১০ অক্টোবর মন্ত্রিসভা নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল, আজকে এটি চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এই আইনের আওতায় এখন আমাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীন পরিচালিত হবে। তাদের এ-সংক্রান্ত একটা অফিস থাকবে। অফিসে একজন নিবন্ধক থাকবে এবং নিবন্ধকের মাধ্যমে এ কাজ করা হবে।’
শিশু জন্মের পরপরই একটি ইউনিক আইডি দেওয়া হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আইনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো- যেকোনো নাগরিক জন্মের পর পরই নাগরিক সনদ বা একটি নম্বর পাওয়ার অধিকারী হবেন। এটি অপরিবর্তিত হবে। এটি জন্মের সঙ্গে সঙ্গে নিতে পারবেন। এটা কোনো সময় পরিবর্তন করা যাবে না।’
নির্বাচন কমিশনের কাজ শুধু ভোটার তালিকা তৈরির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে কি না, এমন প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘হ্যাঁ। নির্বাচন কমিশন যেহেতু ১৮ বছরের ওপরে ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে; এখানে যে এনআইডি থাকবে বা এনআইডিপ্রাপ্ত যে জনসংখ্যা থাকবে, তাদের মধ্য থেকে এই নম্বর ব্যবহার করে তারা করতে পারবে।’
যে সার্ভার আছে তা নির্বাচন কমিশনের অধীন, সেটি আলাদা করা একটি জটিল প্রক্রিয়া—ডেটাবেজ স্থানান্তর কীভাবে হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই আইন অনুযায়ী এনআইডি-সংক্রান্ত তথ্য ওখান থেকে নিয়ে আমাদের যে নতুন নিবন্ধক থাকবেন, তার দপ্তরে স্থানান্তরিত হবে।’
তিনি জানান, বর্তমানে যে নম্বরগুলো নির্বাচন কমিশনের অধীন আছে সেগুলো চলমান থাকবে।
ভোগান্তি দূর করার জন্যই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, ‘এনআইডির ভুল থাকলে কীভাবে সংশোধন হবে, সেগুলো সহজ করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যে জনবল লাগবে তারা তা নেবেন। সেভাবে অর্গানোগ্রাম তৈরি করবেন।’
যাদের এখনও জন্ম নিবন্ধন বা এনআইডি হয়নি তাদের বিষয়টি কী হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা এখন থেকে নতুন নম্বর নেবেন। এখন থেকে সব জায়গায় এই নম্বর ব্যবহার হবে। যখন সে নম্বরটি পেয়ে যাবে তখন আর কোনো নম্বর লাগবে না।’
নিবন্ধকের জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে অফিস থাকবে কি না, জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি যখন দাঁড়াবে তখন তারা বিধি দ্বারা ঠিক করে নেবে। যদি তারা মনে করে প্রত্যেক জায়গায় অফিস দরকার তা তারা করবে।’
মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আমাদের মূল উদ্দেশ্য সব নাগরিকের একটি ইউনিক নম্বর থাকা দরকার। এত দিন হয়তো বিভিন্ন ধাপে নম্বরগুলো দিয়েছি। যেটা নিয়ে অনেক সময় কনফিউশন তৈরি হয়েছে। এখন প্রত্যেক নাগরিকের একটি নম্বর থাকবে, যেটি তার আইডেন্টিটি হবে। সেটার ভিত্তিতে তার সমগ্র জীবনে আমাদের যেমন সিআরপিসি তথ্য আছে সেগুলো আপডেট করবে। এটা আস্তে আস্তে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করব।’
নির্বাচন কমিশন থেকে জনবল স্থানান্তর করা হবে কি না, কারণ নতুন লোকবল তো বিষয়টি বুঝবেন না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আপনি কেন অ্যাজামশন করছেন তারা দক্ষ হবে না। অভিজ্ঞ লোকজনই তো নিয়োগ করা হবে। ইতোমধ্যে আমাদের লোক তৈরি হয়েছে। অভিজ্ঞ লোক তো অবশ্যই লাগবে, তাদেরই নিয়োগ দেওয়া হবে।’
নির্বাচনের আগেই কি সংসদে আইনটি পাস করা হবে, প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সেটি বলতে পারব না। প্রক্রিয়া শেষ করে সংসদে নিয়ে যাওয়া হবে। সংসদ সেটি সিদ্ধান্ত নেবে।’
সংসদে আইনটি পাস হলেই কি কার্যকর হবে- জানতে চাইলে মাহবুব হোসেন বলেন, ‘জাতীয় সংসদে পাস হলেই কার্যকর হবে না। আইনে একটি বিধান রাখা হয়েছে সরকার নির্ধারিত তারিখ থেকে কার্যকর হবে। অর্থাৎ আইনের গেজেট প্রকাশ হলেই হবে না, সরকার যেদিন থেকে কার্যকরের তারিখ ঘোষণা করবে সেদিন থেকে কার্যকর হবে।’