× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ড্যাপ বাস্তবায়নের সামর্থ্য নেই রাজউকের : আইএবি

প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:০৫ পিএম

আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:২৮ পিএম

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট (আইএবি) সেন্টারে আয়োজিত অংশীজন সম্মেলন। ছবি : প্রবা

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট (আইএবি) সেন্টারে আয়োজিত অংশীজন সম্মেলন। ছবি : প্রবা

‘ড্যাপের মাধ্যমে রাজধানীকে নিয়ে তামাশা হচ্ছে। এর মূল ভূমিকা পালন করছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। রাজউক নামের পাগলা ঘোড়ার লাগাম টানার কেউ নেই। ঢাল-তলোয়ারবিহীন সংস্থাটি ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেওয়ার নামে দেশের সবচেয়ে বেশি উৎকোচ গ্রহণের প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিণত হয়েছে।’

‘গেজেটকৃত ঢাকা মহানগর বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) : পর্যালোচনা, মূল্যায়ন ও প্রতিক্রিয়া’ শীর্ষক অংশীজন সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন জনপ্রতিনিধি ও নগর বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, বিদ্যমান কাঠামোয় ড্যাপের মতো একটি বহুমাত্রিক ও কারিগরি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সামর্থ্য নেই রাজউকের। এ ছাড়া ড্যাপ প্রণয়নের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ অংশীজনদের মতামত নেয়নি সংস্থাটি।

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট (আইএবি) সেন্টারে আয়োজিত অংশীজন সম্মেলনে এসব কথা বলেন আলোচকরা। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন আইএবির সভাপতি স্থাপতি মোবাশ্বের হোসেন।

সম্মেলনে আলোচকরা বলেন, ড্যাপ ২০২২-৩৫-এ অবৈধ স্থাপনাগুলোর শ্রেণিবিভাজন সাপেক্ষে সে অনুযায়ী জরিমানার বিধান রেখে অবৈধ অংশ সংস্কার বা অপসারণ নিশ্চিতকরণে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা না রেখে বৈধকরণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা-১৯৫২-এর প্রয়োজনীয় পরিমার্জনের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। শুধু ক্ষেত্রবিশেষে কাঠামোগত সংশোধন, অপসারণ, পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর ফলে অবৈধ ভবনের বিরুদ্ধে রাজউক কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে জরিমানার মাধ্যমে বৈধতা দেবে।

সম্মেলনে আইএবিয়ের পক্ষ থেকে সদ্য গেজেট করা ড্যাপের পর্যালোচনায় বলা হয়, ‘প্রণীত ড্যাপে মুখ্য জলস্রোত ছাড়া তথাকথিত সাধারণ জলস্রোত ও সাধারণ প্লাবনভূমিতে শর্তসাপেক্ষে (শুধু ইকো রিসোর্ট, মৎস্য চাষ) ভূমি ব্যবহার, পরিবর্তন ও স্থাপনা অনুমোদনের যে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে, তা আইন-আদালত ও জনস্বার্থপরিপন্থি। এমন প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন হলে নগর বন্যা, জলাবদ্ধতা ও ভূগর্ভস্থ পানির স্তরের আশঙ্ক্ষাজনক হ্রাসের ঝুঁকিতে থাকা ঢাকা আরও বিপজ্জনক অবস্থায় পড়বে।’  

সম্মেলনে প্রণীত ড্যাপে এলাকাভিত্তিক জনঘনত্ব বিন্যাস, নগরজীবন রেখা, ট্রানজিটভিত্তিক উন্নয়ন, নাগরিক সুযোগ-সুবিধার মানদণ্ড প্ৰণয়ন, ব্লকভিত্তিক উন্নয়ন ও উন্নয়নস্বত্ব বিনিময়, হকার ব্যবস্থাপনা নির্দেশনা, নতুন ও অবহেলিত অঞ্চলের অন্তর্ভুক্তিতা, ভূপ্রাকৃতিক শ্রেণিবিন্যাসসহ ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং ভূমির পুনর্বিন্যাস ও পুনঃউন্নয়ন বিষয়ে গুরুত্বারোপ করার কারণে এটি যুগোপযোগী এবং জনবান্ধব হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করায় সাধুবাদ জানানো হয়।

তবে ঢাকা স্ট্রাকচার প্ল্যান (২০১৬-২০৩৫), ড্যাপ বাস্তবায়নের পূর্বেই গেজেটকরণ করা আইনি দিক থেকে জরুরি বলেও মনে করে আইএবি।

সংগঠনটির অংশীজন সম্মেলন থেকে কিছু প্রস্তাবনাও দেওয়া হয়।

এগুলো হলো--

১. বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় প্রক্ষেপিত জনসংখ্যা এবং প্রাক্কলিত উন্নয়ন প্রাবল্য অনুযায়ী ২০৩৫ সালের মধ্যে সকলের আবাসন সংস্থান নিশ্চিত করার ওপর ভিত্তি করেই এলাকাভিত্তিক জনঘনত্ব এবং ‘ফ্লোর এরিয়া রেশিও’ (এফএআর) নির্ধারণ নিশ্চিত করা। এক্ষেত্রে প্রতি দুই বছর অন্তর মূল্যায়নসাপেক্ষে তার পুনর্নির্ধারণও নিশ্চিত করা।

২. ব্লকভিত্তিক উন্নয়ন প্রস্তাবনাসমূহকে বাস্তবানুগ ও উৎসাহব্যঞ্জক করার লক্ষ্যে ‘অতিরিক্ত প্রণোদনা’ প্রদান নিশ্চিত করা, যাতে ‘হযবরল’ উন্নয়নের শিকার অঞ্চলগুলো (পুরান ঢাকাসহ) দ্রুত পুনর্গঠনে উদ্বুদ্ধ হয়।

৩. বন্যাপ্রবাহ অঞ্চল এবং কৃষিজমির ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিমালায় ভূমির ‘শ্রেণি পরিবর্তনের’ সুযোগ রহিতকরণের দৃঢ়প্রতিজ্ঞ সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করা

৪. কার্যকরী ‘ব্লু নেটওয়ার্ক’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই ঢাকা শহরের খালগুলো উদ্ধার, জলাবদ্ধতা নিরসন এবং নৌ-যোগাযোগ ব্যবস্থার পুনঃস্থাপনের উদ্যোগ ও তার তাগিদ নিশ্চিত করা।

৫. সড়কের ন্যূনতম প্রশস্থতা নির্ধারণ করে ভবিষ্যৎ উন্নয়ন প্রাবল্য নিয়ন্ত্রণ এবং অগ্রাধিকারভিত্তিতে পদচারীবান্ধব সড়কব্যবস্থা প্রতিস্থাপন নিশ্চিত করা।

৬. শহরব্যাপী ঢালাওভাবে ‘উন্নয়নস্বত্ব ক্রয়-বিক্রয় বিশেষ করে কৃষিজমির উন্নয়নস্বত্ব বিনিময় সুযোগ রহিতকরণের মাধ্যমে এ-সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনার জটিলতা নিরসনে কার্যকরী কাঠামো নিশ্চিত করা।

৭. অননুমোদিত ইমারত এবং ঊর্ধ্ব অথবা আনুভূমিক ব্যত্যয়কৃত ভবনের বৈধতা দেওয়ার ক্ষেত্রে ইমারত নির্মাণ আইনের কঠোর ও যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা। 

সংম্মেলনে আইএবির পক্ষ থেকে বলা হয়, রাজউক তার বর্তমান কাঠামোয় বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার মতো একটি বহুমাত্রিক ও কারিগরি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সামর্থ্যবান নয়। আর এজন্য দ্রুতই রাজউককে পেশাজীবী নেতৃত্বে পুনর্গঠন ও পুনর্বিন্যাস করে কিংবা পেশাজীবীনির্ভর একটি ভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে এ মহাপরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়--নগরবাসী, সেবা সংস্থাসমূহ এবং বিভিন্ন পেশাজীবী, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের ঐকান্তিক অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ‘সকলের অন্তর্ভুক্তিতায়’ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণবাদিতা, প্রকৃতিবান্ধবতা ও গণমুখী নগরায়ন নিশ্চিত করেই কেবল ড্যাপ বাস্তবায়নের উদ্যোগকে বাস্তবানুগ ও প্রায়োগিক ক্ষেত্রে কার্যকর করা সম্ভব।

প্রবা/ এমআর/এমআই

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা