হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতি
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৩ ০০:১৬ এএম
আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০২৩ ১১:০০ এএম
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি নিতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ। ফাইল ফটো
বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিক্ষোভকারীদের ওপর অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
বুধবার (২ আগস্ট) এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, জুলাইয়ের শেষ দিকে বিরোধীদলীয় সমর্থকদের ওপর বাংলাদেশের পুলিশ নির্বিচার রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করেছে। এ সময় বিরোধী সমর্থকদের পিটুনিও দেওয়া হয়েছে।
২৯ জুলাইয়ের কর্মসূচি ঘিরে কয়েক দিনে কর্তৃপক্ষ প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ৮ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। এটা দৃশ্যত রাজনৈতিক বিরোধীদের নিশানা করে আটকের চেষ্টা।
দেশটিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রাক্-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সফর শেষে এবং ইইউ মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোরের সফরের সময় নির্বাচন-সম্পর্কিত নিপীড়নমূলক এসব ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এরই মধ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে যে ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া’ বাধাগ্রস্ত করে এমন যেকোনো বাংলাদেশির জন্য তারা ভিসা সীমিত করবে।
বিবৃতিতে এইচআরডব্লিউর এশিয়া বিষয়ক উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেছেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর পরিচালিত বর্বরোচিত দমন অভিযানকে নির্বাচন গণতান্ত্রিক না হওয়ার সতর্কসংকেত হিসেবে দেখা উচিত হবে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের।
বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক মহলকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিলেও বিরোধীদের ওপর নিপীড়নমূলক হামলা চালানো হচ্ছে। এটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ওই প্রতিশ্রুতির বিপরীত।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বিক্ষোভে সহিংসতায় তাদের অন্তত ১০০ সমর্থক আহত হয়েছেন। পুলিশ ও বিরোধী দলের সমর্থকদের সংঘর্ষের ভিডিওতে দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা লোকজনকে পিটুনি ও লাথি মারার মধ্য দিয়ে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করছেন। আক্রান্তদের নিরস্ত্র মনে হয়েছে।
তবে পুলিশের ভাষ্যমতে, বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছেন এবং পুলিশের গাড়িতে আক্রমণ করেছেন। এতে অন্তত ৩২ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে জরুরিভাবে পুলিশকে বলতে হবে বলপ্রয়োগের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিধিবিধান মেনে চলার জন্য। পাশাপাশি এটা স্পষ্ট করতে হবে যে যারা এ ক্ষেত্রে বিধিবিধান মেনে চলবেন না, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বাংলাদেশ সরকারের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের প্রকাশ্যে জোরালোভাবে বলতে হবে যে নির্বাচন সামনে রেখে গুরুতর অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় কঠোর ও সময়োচিত পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে বাণিজ্য সুবিধাসহ সহযোগিতার অন্যান্য ক্ষেত্রে তার প্রভাব পড়বে।