× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

হেফাজত থেকে আসামি পালালেই বরখাস্ত

আলাউদ্দিন আরিফ

প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৩ ১৭:১৬ পিএম

আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০২৩ ১৮:৩৩ পিএম

পুলিশ সদর দপ্তর। ফাইল ছবি

পুলিশ সদর দপ্তর। ফাইল ছবি

পুলিশের যে সদস্যের কাছ থেকে আসামি পালাবে, তাকেই বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। পুলিশ হেফাজত থেকে যাতে আসামি পালানোর ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে সতর্কতার অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

একই সঙ্গে আসামি গ্রেপ্তারের পর আদালতে আনা-নেওয়া, কারাগারে নেওয়া বা হাজতে থাকার সময় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন ও তদারকি কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। পাশাপাশি আসামি স্কট করার ক্ষেত্রে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে ২০১৪ সালের মে ও আগস্ট মাসে জারি করা পরিপত্র, পিআরবি রুলস এবং জেলকোড আক্ষরিক অর্থে প্রতিপালন করতে বলা হয়েছে।

সম্প্রতি আইজিপির সভাপতিত্বে পুলিশ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, গণমাধ্যমে পুলিশ-সংক্রান্ত সংবাদের পর্যালোচনাবিষয়ক এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। ওই সভায় অতিরিক্ত আইজি, সব রেঞ্জ ডিআইজি, মেট্রোপলিটন কমিশনার, উপকমিশনার ও পুলিশ সুপাররা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বলা হয়, সম্প্রতি ঢাকার সিএমএ আদালত ও চট্টগ্রাম জেলা থেকে দুজন আসামি পুলিশ হেফাজত থেকে পালায়। পরে তাদের পুনরায় গ্রেপ্তার করা হয়। রংপুরের মিঠাপুকুরে আসামি পলায়ন করে পুনরায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে। চাঁদপুরের সদর থানা থেকে আসামি পলায়ন করলেও তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি বলে সভায় জানানো হয়।

 পুলিশের অতিরিক্ত আইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশ হেফাজত থেকে আসামি পলায়নের ঘটনাগুলো মনিটরিংয়ের মধ্যে রেখেছি। কোনো আসামি পালালে ওই আসামি যেসব পুলিশ সদস্যের হেফাজতে থাকবে তারা পলাতক আসামি পুনরায় গ্রেপ্তার হওয়ার আগ পর্যন্ত থানা বা নিজ ইউনিটে ফিরবে না।’ 

একই সময়ে অতিরিক্ত আইজি (প্রশাসন) কামরুল আহসান বলেন, ‘আসামি যার হেফাজত থেকে পলায়ন করবে তাকে ক্লোজ না করে চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে।’

পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আসামিরা বেশি পালিয়ে থাকে আদালত থেকে বা আদালতে আনা-নেওয়ার সময়। এই সময় আসামিরা প্রসিকিউশন পুলিশের হেফাজতে থাকে। প্রসিকিউশন পুলিশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আদালতে পুলিশ লাইনস থেকে একেক সময়ে একেক সদস্য এসব ডিউটি করতে আসেন। তাদের অনেকেরই নিয়মকানুন ভালোভাবে জানা থাকে না। প্রিজন ভ্যানগুলোতে আসামির সংখ্যার তুলনায় পুলিশ অনেক কম থাকে। অনেক ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন তদারকি কর্মকর্তারা বিষয়গুলো সঠিকভাবে তদারকি করেন না। একটা ঢিলেঢালা ভাব থাকে। এতে আসামিরা পালানোর সুযোগ পায়। আসামি পালানোর পর হুলস্থুল লেগে যায়।’ 

সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা পুলিশ হেফাজত থেকে আসামি পালানোর কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরেন। এতে দেখা যায়, ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর চুয়াডাঙ্গা আদালত এলাকা থেকে হাতকড়া ভেঙে পালিয়ে যায় ডাকাতি মামলার এক আসামি। একই দিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পালিয়ে যায় পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন এক আসামি। একই বছরের ৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের আদালত থেকে পালিয়ে যায় মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া এক রোহিঙ্গা। এর কয়েক দিন পরেই ২০ ডিসেম্বর ঢাকার পল্লবী থানার হাজতখানা থেকে ডাকাতি মামলার এক আসামি পালিয়ে যায়। গত বছরের ১ জানুয়ারি বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চুরির মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আসামি পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাতকড়াসহ পালিয়ে যায়। ২৬ ফেব্রুয়ারি পিরোজপুরের পুলিশের গাড়ি থেকে মাদক মামলার একজন আসামি পালিয়ে যায়। গত বছরের ২৮ এপ্রিল ঢাকার আদালত থেকে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত এক জঙ্গি। ৩১ মে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে পুলিশের গাড়ি থেকে হাতকড়াসহ পালিয়ে যায় ধর্ষণ মামলার আসামি। 

২০২১ সালের ৩ অক্টোবর ফরিদপুরের নগরকান্দা থেকে আদালতে পাঠানোর সময় হাতকড়াসহ এক আসামি পালিয়ে যায়। নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে গত বছরের ১৬ অক্টোবর পুলিশকে কামড়ে আহত করে হাতকড়াসহ পালিয়ে যায় মাদক মামলার এক আসামি। ২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি কক্সবাজারের আদালতে নেওয়ার পথে মাদক মামলার আসামি এক রোহিঙ্গা হাতকড়াসহ পালিয়ে যায়। সেই ঘটনায়ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে পাঁচ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানা থেকে হারুনুর রশিদ নামের এক আসামি পালিয়ে যায়। কেরানীগঞ্জ থানার এক মামলায় হাজিরার জন্য তাকে ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হয়। ওই ঘটনায় পুলিশের আট সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

পুলিশের সভায় বিষয়গুলোর পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত হয় যে পুলিশের কোনো সদস্যের কাছ থেকে কোনো আসামি পালালে যতক্ষণ পর্যন্ত আসামি পুনরায় ধরতে না পারবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ওই পুলিশ সদস্য থানায় ফিরবেন না। আসামি যার কাছ থেকে পালাবে তাকে ক্লোজ না করে চাকরি থেকে সরাসরি সাসপেন্ড বা বরখাস্ত করতে হবে। যার কাছ থেকে আসামি পালাবে তাকে পুলিশের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ইউনিট প্রধানকে নিশ্চিত করতে হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা