এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:৩৭ পিএম
আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৪:২৩ পিএম
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সোমবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : বাসস
বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে নতুন কৌশলগত অগ্রযাত্রা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে– দুই দেশের সরকার এমনটা আশা করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, চলমান ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে বাংলাদশের নীতি প্রণয়নের সার্বভৌমত্বকে সম্মান ও সমর্থন জানিয়েছে ফ্রান্স।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বাংলাদেশের সরকারপ্রধান ফরাসি রাষ্ট্রপ্রধান যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আসেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এমানুয়েল মাখোঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশে সফররত ফ্রান্সের প্রতনিধিদলের সদস্যদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে পাঁচ দশকের বেশি সময় চলমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ঐতিহাসিক দিন আজ। আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সূচনা করেছিলেন, আজ তা একটি নতুন মাত্রায় উন্নীত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে প্রেসিডেন্ট মাখোঁর সঙ্গে আমার সার্বিক বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। চলমান ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে ফ্রান্স বাংলাদেশের নীতি প্রণয়নের সার্বভৌমত্বকে সম্মান ও সমর্থন জানিয়েছে। বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যকার এই নতুন কৌশলগত অগ্রযাত্রা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমরা উভয়েই আশাবাদী।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘গত দেড় দশক ধরে বাংলাদেশে চলমান সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা, উন্নয়ন এবং সুশাসন– এই নতুন সম্পর্কের মূল ভিত্তি। ফ্রান্স সরকার বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার সুরক্ষায় সরকারের দায়িত্বশীল ও প্রতিশ্রুতিমূলক কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির অভাবনীয় ও ধারাবাহিক অগ্রযাত্রায় ফ্রান্স সরকারের আস্থার কথা দৃঢ়তার সঙ্গে উদ্ধৃত হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সুবিধা অব্যাহত রাখার মাধ্যমে রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে। এজন্য আমি প্রেসিডেন্ট মাখোঁর নেতৃত্বে ফ্রান্স সরকার ও ফ্রান্সের জনগণের প্রতি বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট মাখোঁর এই সফরে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কিছু সমঝোতায় পৌঁছতে সক্ষম হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বিশ্বস্ত উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে ফ্রান্স আমাদের অবকাঠামোগত উন্নয়নে তার সহযোগিতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে আমাদের নিশ্চিত করেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের কৌশলগত সুরক্ষা অবকাঠামো বিনির্মাণে উন্নত ও বিশেষায়িত কারিগরি সহায়তা প্রদানে তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভূরাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স নেতৃস্থানীয় ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় ফ্রান্সের অগ্রণী ভূমিকাকে আমরা স্বাগত জানাই। এ লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট মাখোঁর নেতৃত্বে একটি টেকসই তহবিল গঠনে ফ্রান্সের আহ্বানকে আমরা সাধুবাদ জানিয়েছি। এ ছাড়াও ফ্রান্সের সঙ্গে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ভাষা বিনিময়ের বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। এই সফরের সামগ্রিক বিষয়ে একটি যৌথ-বিবৃতি খুব শিগগিরই প্রকাশ করা হবে। দুই দেশের সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে আপনাদের আরও বিস্তারিত অবহিত করা হবে।
তিনি বলেন, ‘পরিশেষে আমি ফ্রান্স সরকার ও ফরাসি জনগণের প্রতি আমার শুভেচ্ছা জানাই। দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।’