× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

মাংসের দাম নির্ধারণ

ভোক্তা অধিদপ্তরের সেমিনারে দফায় দফায় হট্টগোল

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:০৩ পিএম

আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ২২:৩৭ পিএম

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

গরুর মাংসের দাম কীভাবে ৭৫০/৮০০ টাকা থেকে কমিয়ে আনা যায় এ বিষয়ে সেমিনারের আয়োজন করেছিল জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংক্ষণ অধিদপ্তর। তাতে অংশ নেন খুচরা ও পাইকারি মাংস ব্যবসায়ী, বাংলাদেশ ডেইরী ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন ও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা।

রবিবার (৩ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সেমিনারে পরিপূর্ণ কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা সেমিনারটিতে প্রায় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দফায় দফায় হট্টগোল হয়। আর এই হট্টগোলের মধ্যেই আড়াইটার পর সেমিনারটি শেষ হয়।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ও সূচনা বক্তব্যে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, সপ্তাহখানেক যাবৎ খিলাগাঁওয়ের মাংস বিক্রেতা খলিলুর রহমানের প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৯৫ ও মিরপুরের উজ্জলের ৬০০ টাকায় বিক্রির নতুন উদ্যোগের কারণে বাজারে গরুর মাংসের দাম কমে এসেছে। এটি তারা দুজন কীভাবে পারলেন? আর অন্যান্য ব্যবসায়ীরা কেন পারছেন না? প্রতি কেজি মাংসের দাম কত হলে কেউ ঠকবে না এই বিষয়ে আলাপ-আলোচনার জন্যই আপনাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

সফিকুজ্জামান বলেন, গত ৩০ জুলাই একটি সেমিনার করে সরকারের কাছে রিপোর্ট দেওয়া হয়। তখন ৭৫০-৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতো। সেখানে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ও তা সমাধানের পথ দেখানো হয়। সপ্তাহখানেক যাবৎ খলিলুর রহমান ও উজ্জল কম দামে মাংস বিক্রি করায় বাজার অনেক কমে গেছে। আপনারা ব্যবসায়ীরা চিন্তা করেনÑ কীভাবে মাংসের দাম কমিয়ে আনা যায়।

ভোক্তা অধিদপ্তরের ঢাকা জেলার সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, ‘৫৯৫ টাকা কেজিতে মাংস বিক্রি করলে ক্ষতি নেই।’ তার এই কথার পর মাংস বিক্রেতারা হট্টগোল তৈরি করেন। বেশ কিছুক্ষণ চলে এই হট্টগোল। পরে মাংস ব্যবসায়ী নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে আসে।

বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম বলেন, সারা বিশ্বে একটি মন্ত্রণালয় থেকে মাংস বিক্রির অনুমতি নিতে হলেও আমাদের দেশে ৪/৫টি মন্ত্রণালয় থেকে নিতে হয়। দেশে বছরে ৬০ হাজার কোটি টাকার পশু পাচার হচ্ছে। এসব বন্ধ করতে হবে। মাংসের দাম নির্ধারণে দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের থাকলেও তারা কোন মিটিং করে না। ঢাকায় মাত্র একটি গরুর হাঁট। ব্যবসায়ীদের স্বাধীনতা বন্ধ করে দিয়েছে গাবতলীর গরু। হাঁটের সংখ্যা বাড়াতে হবে। ব্যবসায়ীরা চাইলেও কম দামে গরু কিনতে পারে না। 

ইউনিমার্ট সুপার শপের প্রতিনিধি তৌফিক ইসলাম মাংস সরবরাহের সোর্স দাবি করে বলেন, ‘কম দামের সোর্স দিলে দাম কমানো যাবে।’ এ সময় আবার হট্টগোল শুরু হয়। মধ্য বাড্ডার মাংস বিক্রিতা শরিফ হোসেন বক্তব্য দিতে গেল তখন আবার হট্টগোল হয়। শরিফ বলেন, ৭০০ টাকার নিচে মাংস বিক্রি করলে আমাদের পথে বসতে হবে। এ সময় সুপারশপ স্বপ্নের প্রতিনিধি খলিলের মাংসে হাড়, চর্বিসহ নানান কিছু থাকে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ পর্যায়ে তিনি বলেন, ‘খলিল আমাদের ৬০০ টাকায় সলিড মাংস দিতে পারলে আমরাও বিক্রি করবো।’

ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান মাংসের স্পেসিফিক হওয়া দরকার বলে দাবি তোলেন।

বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. গোলাম মোর্তুজা মন্টু বলেন, ৭০০ টাকা করে মাংস বিক্রি করে কোনো রকমে চালানের টাকা তুলেছি। মাংসের দাম ৬০০ টাকায় আনা যাবে না। এ সময় একদফা হট্টগোল হয়। তিনি বলেন, ভোক্তার কর্মকর্তারা মেঘনা ও সিটি গ্রুপের মতো বড় প্রতিষ্ঠানের কাছে যেতে পারে না। শুধু আমাদের ছোট ছোট দোকানীদের জরিমানা করে। এ পর্যায়ে তার বক্তব্য থামিয়ে দেন ভোক্তার মহাপরিচালক।  

সেমিনারে একজন দাবি করেন, মাংস বিক্রির ক্ষেত্রে একটি নীতিমালা থাকা দরকার। যেমন এক কেজি মাংস বিক্রিতে ৭৫০ গ্রাম মাংস, ২০০ হাড্ডি ও ৫০ গ্রাম চর্বি দিতে হবে। এমন সময় আরেক দফা হট্টগোল হয়। এ পর্যায়ে গোলাম মোর্তুজা মন্টু বলেন, সিটি করপোরেশন ইজারা বাবদ বছরে ১৫ কোটি টাকা নেয়, অথচ তারা কোনো সেবা দেন না। যেখানে প্রতিটি গরু থেকে ৫০ টাকা নেওয়ার কথা, সেখানে ৮০০ টাকা নেওয়া হয়।

এ পর্যায়ে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সফিকুজ্জামান তিনটি প্রস্তাব রেখে বলেন, প্রথমত মাংসের দাম কত টাকা কেজি হবে সে বিষয়ে আগামী বুধবারের মধ্যে মাংস ব্যবসায়ীরা মিটিং করে বৃহস্পতিবার লিখিত প্রস্তাব নিয়ে অধিদপ্তরে আসতে হবে। দ্বিতীয়ত, মাংসের উৎপাদন ব্যয় নিয়ে ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন একটি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এবং তৃতীয়ত, বর্তমান বাজার যা আছে সে গতিতে চলবে। আর যারা ৭৫০ টাকা দরে মাংস বিক্রি করবে তাদের পাকা ভাউচার থাকতে হবে। তা ছাড়া ক্রয় ও বিক্রয়মূল্য লেখা থাকতে হবে। এই পর্যায়ে ফের হট্টগোল শুরু হয়। এই হট্টগোলের মধ্য দিয়েই শেষ হয় সেমিনার।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা