গবেষণা
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:৫৮ পিএম
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৩ ২৩:১৭ পিএম
প্রবা ফটো
বাংলাদেশ বছরে প্রায় ৬০ শতাংশ টেক্সটাইল বর্জ্য রপ্তানি করে। এসব বর্জ্য পুনর্ব্যবহার করে বাংলাদেশ তুলা আমদানির প্রায় ১৫ শতাংশ কমাতে পারে বলে জানিয়েছে ডেনমার্ক ভিত্তিক সার্কুলার ফ্যাশন পার্টনারশিপ সংস্থা।
গবেষণা গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির ২০১৯ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০৩০ সাল নাগাদ টেক্সটাইল শিল্পে পানির চাহিদা অভ্যন্তরীণ চাহিদার তুলনায় তিনগুণ দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। এই অবস্থায় পোশাক শিল্পের টেকসই উন্নয়নে সার্কুলার ইকোনমি বা বৃত্তাকার অর্থনীতির বিকাশ জরুরি। এই বৃত্তাকার অর্থনৈতিক মডেলে শুধু পরিবেশবান্ধব কলকারখানা স্থাপন নয়, বরং শিল্পের বর্জ্যকে শিল্পের উপকরণ হিসেবে পুনরায় ব্যবহার, সংরক্ষণ ও পুনঃপ্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।
রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে বাংলাদেশে ‘পোশাক শিল্পে সার্কুলারিটি, ডিকার্বোনাইজেশন ও প্রতিযোগিতামূলক বাজার’ শীর্ষক সংলাপে এক উপস্থাপনায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
পলিসি একচেঞ্জ বাংলাদেশ বিজনেস কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান লাইটক্যাসল পার্টনার্স যৌথভাবে এই সংলাপের আয়োজন করে।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বা আধুনিক স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পোশাক শিল্পে যেসব পদ্ধতিগত পরিবর্তন আসছে, তা নিয়ে পলিসি একচেইঞ্জ বাংলাদেশের সহযোগিতায় লাইটক্যাসল পার্টনার্স বুনন ২০৩০ নামে একটি বিস্তৃত কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। সেই কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে, আগামী দিনে এই খাতের সার্কুলারিটি বা বৃত্তাকার অর্থনৈতিক মডেল কি হতে পারে, তা তুলে ধরতে এই সংলাপের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- জাতিসংঘের শিল্প উন্নয়ন সংস্থার বাংলাদেশের কান্ট্রি প্রতিনিধি ড. জাকি উজ জামান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কতৃপক্ষের (বিডা) মহাপরিচালক মো. আরিফুল হক, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক ভিদিয়া অমৃত খান, বাংলাদেশ নীটওয়্যার ম্যানুফেকচেরার অ্যান্ড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সহসভাপতি ফজলে শামীম এহসান, টিম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, এইচ অ্যান্ড এমের স্টেকহোল্ডার এনগেজমেন্ট এবং পাবলিক অ্যাফেয়ার্স ম্যানেজার ফয়সাল রাব্বি ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা।
লাইটক্যাসল পার্টনার্সের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন- প্রতিষ্ঠানটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক জাহেদুল আমিন, বিজনেস কনসালট্যান্ট সামিহা আনোয়ার, মৃন্ময় সোবহান ও অন্যান্য কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ড. এম. মাসরুর রিয়াজ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি প্রতিনিধি কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ।
অনুষ্ঠানে ‘সার্কুলারিটি এবং প্রতিযোগিতামূলক কৌশল সংলাপ’শীর্ষক উপস্থাপনায় বলা হয়, বিস্ময়কর হলেও সত্য যে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী পোশাকের ব্যবহার ১০২ বিলিয়ন আইটেমে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এতে গ্রিনহাইজ গ্যাস নিঃসরণ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। দেশে পোশাক খাত বছরে প্রায় ৫ লাখ ৭৭ হাজার টন টেক্সটাইল বর্জ্য উৎপাদন করে। বাংলাদেশ বছরে ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের কাঁচামাল আমদানি করে। একই সঙ্গে উচ্চমানের ঝুট রপ্তানি করে। তাই প্রতিযোগিতামূলক বাজারে শুধু পরিবেশগত নয় বরং অর্থনৈতিক বিবেচনায় সবুজ কারখানার গুরুত্ব অনেক বাড়ছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিজিএমইয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে ২০০টির অধিক শিল্পবান্ধব কারখানা রয়েছে। এটা আশাব্যঞ্জক খবর বটে। তাই দেশে আনুমানিক সাড়ে ৩ হাজার কারখানার মধ্যে অধিক সংখ্যক সবুজ কারখানা স্থাপন করতে হবে। পাশাপাশি ‘কার্বন ফুটপ্রিন্ট’ কমানো এবং পরিবেশ সুরক্ষায় টেক্সটাইল বর্জ্যের পুনর্ব্যবহারযোগ্য পদ্ধতির দিকে মনোনিবেশ করা জরুরি।