প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৪:৩৭ পিএম
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৫:৪৬ পিএম
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। ছবি: সংগৃহীত
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট করতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও নির্বাচন কমিশন যৌথভাবে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তিনি বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা উনি (মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান) বলেছেন। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু হতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ভোটের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হলে মৌলিক মানবাধিকার অবশ্যই বিঘ্নিত হবে। সেই লক্ষ্যে আমাদের যৌথভাবে কাজ করা উচিত বলে উনারা (জাতীয় মানবাধিকার কমিশন) মনে করেন। এতে আমরাও সহমত পোষণ করেছি।’
বৃহস্পতিবার ২৮ (ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে জাতীয় মানবাধিকার চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ কথা জানান।
কাজী হাবিবুল আউয়াল জানান, বৈঠকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও তার সহকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। তিনি নির্বাচনে মানবাধিকারের বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে ভোটাধিকার, নির্বাচিত হওয়া এবং নির্বাচিত করা এটি একটি ফান্ডামেন্টাল হিউম্যান রাইট। শুধু আমাদের সংবিধান নয়, ইউনিভার্সাল ডেকোরেশন অব হিউম্যান রাইটস এবং পলিটিক্যাল রাইটস। যেগুলোয় আমরা সই করেছি, সেগুলোয় এ বিষয়গুলো সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।
সিইসি জানান, তিনি আমাদের যে সহযোগিতা করতে চান, আমরাও সেই সহযোগিতা করতে চাই। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে এ বিষয়গুলো ক্রমান্বয়ে যদি আমরা উনাদের বোঝাতে সক্ষম হই তবেই সহিংসতা বাদ দিয়ে অহিংস পদ্ধতিতেও নির্বাচন সম্ভব। সেই লক্ষ্যে আমাদের প্রয়াস অব্যাহত থাকা উচিত। যারা নির্বাচন করেন, তাদেরও এ বিষয়গুলো অনুধাবন করে সহিংসতার পথ থেকে সরে এসে অহিংস পদ্ধতিতে সব ভোটারকে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগদানে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তারাও এ প্রয়াস চালাবেন পাশাপাশি আমরাও কাজ করব। তবে দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থাটা খুবই কম। দলের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা থাকা দরকার। যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তাদের মধ্যেও এ আস্থাটা তৈরি করতে হবে। এতে প্রার্থী হিসেবে তাদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থার সংস্কৃতি গড়ে উঠবে। তা না হলে আমাদের রাজনীতিতে বা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সহিংসতা কিছুটা থেকে যাবে।
গণমাধ্যমের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমের ভূমিকা বস্তুনিষ্ঠ হওয়া প্রয়োজন। অনেক সময় গণমাধ্যমে যে অংশটুকু তাদের প্রয়োজন, ওই অংশটুকু কেটে নিয়ে আগে-পিছে বাদ দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। তাই গণমাধ্যমকেও আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে সার্বিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখা প্রয়োজন বলে উনি (কামাল উদ্দিন আহমেদ) মনে করেন। আমরা তার সঙ্গে সহমত পোষণ করেছি।’
শাসকদলের প্রার্থীরা আচরণবিধি ভঙ্গ করছেন, আপনারা মানাতে পারছেন না কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা মাঠ পর্যায়ে সভা করেছি। তাদের কাছ থেকে খুব বেশি অভিযোগ পাইনি। প্রশাসনের ওপর তাদের আস্থা রয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহিংসতা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, পোস্টার ছেঁড়া এগুলো হয়েছে। কিন্তু মোটাদাগে খুব বেশি ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হয় না। তবে সহিংসতা একেবারেই হয়নি, তা বলছি না। আশা করি ধীরে ধীরে এটা কমে আসবে। প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি, তারা যেন এটা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। একটা সময় প্রচার বন্ধ হয়ে যাবে।
ভোটের দিন পোলিং এজেন্টকে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। সেখানে অবাঞ্ছিত লোক যাতে প্রবেশ করতে না পারে এবং বাইরে থেকে ভেতর থেকে গণমাধ্যম যদি অনিয়ম প্রচার করতে পারে, আমরা এটাকে স্বাগত জানাব। তাহলে নির্বাচনের ক্রেডিবিলিটি বেড়ে যাবে এবং রং পারসেপশন হওয়ার সুযোগ কম হবে। আমরা আশাবাদী।’