প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:২৯ পিএম
আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:৫৪ পিএম
ধান-চালের বাজারের ঊর্ধ্বগতি রোধে খাদ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। প্রবা ফটো
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ‘ভরা মৌসুমে আমন চালের দাম বাড়বে এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়িয়েছেন, এখন সেভাবেই কমাতে হবে।’ বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকালে খাদ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি। ধান-চালের বাজারের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে এ সভা ডাকা হয়।
মিলগেটে ২ টাকা দাম বাড়লে পাইকারি বাজারে ৬ টাকা কেন বাড়বে—প্রশ্ন রেখে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অবৈধ মজুদকারী কিংবা অহেতুক দাম বাড়িয়ে দেওয়া ব্যবসায়ী কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। সবাইকে জবাবদিহি করতে হবে। বিনা লাইসেন্সে যারা ধানের স্টক করছেন তারা কোনোভাবেই ছাড় পাবে না।’
বিবেক না থাকলে, সততা না থাকলে মানুষ হওয়া যায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রেডি করা চাল বাজারে ছাড়তে হবে। সংকট তৈরি করা যাবে না। প্রচুর ধান আছে। সরবরাহের ঘাটতি নেই।’
এ সময় মজুদদারি বন্ধ করতে ও লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য নির্দেশনা দেন সাধন মজুমদার।
চাল ব্যবসায়ীরাও তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। নওগাঁ ধান চাল মালিক সমিতির সদস্য নিরোদ বরণ সাহা চন্দন বলেন, ‘মোটা চালের দাম বাড়েনি। সরু ও মোটা চালের দাম এক নয়। মোটা চালের দাম ২-৩ টাকা বেড়েছে। গত ইরি মৌসুমের জিরাশাইল চালের দাম ৫-৬ টাকা বেড়েছে। যেভাবে ঢালাওভাবে মিলারদের দায়ী করা হচ্ছে, তা ঠিক নয়।’ করপোরেট কোম্পানিগুলো ধান-চালের বাজারকে অস্বাভাবিক বাড়াচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
দিনাজপুরের ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য মো. হান্নান বলেন, ‘সরকারিভাবে একই সঙ্গে সব জেলা থেকে প্রকিউরমেন্ট করায় মোটা ধানের সংকট হয়। নির্বাচনের কারণে সবাই ব্যস্ত ছিলেন। ছাটাই ও বাজারজাত কম হয়েছে। ইতোমধ্যে ধান ও চালের দাম কমতে শুরু করেছে।’ মনিটরিং বাড়ালে দাম আরও কমবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
চাল ব্যবসায়ী ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘কৃষি বিভাগের উৎপাদন তথ্য সঠিক কি না, তা নিশ্চিত করতে হবে। তথ্য থাকে উৎপাদন উদ্বৃত্ত, কিন্তু বাস্তবে তা হয় না।’
বাংলাদেশ অটো মেজর হাসকিং মিল মালিক সমিতির সেক্রেটারি এইচ আর খান পাঠান সাকি বলেন, ‘সুস্থ প্রতিযোগিতামূলক বাজার প্রত্যাশা করি। চালের বাজার বাড়লে ছোট মিলমালিকরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’
প্রাণ গ্রুপের পরিচালক মো. কামরুজ্জামান বলেন, বাজার বাড়তি থাকায় তারা ধান কিনছে না। সঠিক পরিসংখ্যান না থাকায় বাজারের সঠিক চরিত্র প্রতিফলিত হচ্ছে না এবং সরকারের প্ল্যানিংও সঠিকভাবে কাজ করছে না।
এসিআইয়ের মো. রুবেল হোসেন বলেন, ‘এ বছর নন-প্রফেশনাল লাইসেন্সবিহীন লোক ধান কিনছে। তারা অবৈধ মজুদ করে বাজার অস্থির করছে।’
বেলকন গ্রুপের মো. বেলাল হোসেন বলেন, ‘ধানের ওপর অযাচিতভাবে আরোপ করা ট্যাক্স প্রত্যাহার করতে হবে। একই সঙ্গে খাদ্য অধিদপ্তরের তদারকি বাড়াতে হবে।’
বাংলাদেশ অটো মেজর হাসকিং মিলমালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, ‘মিলারদের প্রতিযোগিতা করে ব্যবসা করতে হয়। সিন্ডিকেটের কোনো সুযোগ নেই। দাম বেড়েছিল এটা সত্য, এখন বাজারে দাম কমতে শুরু করেছে।’