× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

৫ দশকে সুন্দরবনের ঘন বনভূমি কমেছে ২.৭ ভাগ

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:১৯ পিএম

আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:২৩ পিএম

 সুন্দরবনের ঘন বনভূমি কমেই চলছে। ছবি : সংগৃহীত

সুন্দরবনের ঘন বনভূমি কমেই চলছে। ছবি : সংগৃহীত

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সুন্দরবনে গত ৫ দশকে বনাঞ্চলের ঘনত্ব কমেছে ২ দশমিক ৭ ভাগ। বাড়ছে জলাভূমি এলাকা। তাছাড়া পানির উৎসগুলোতে বিষাক্ত পদার্থের মাত্রাও বেড়ে যাচ্ছে। ফলে আবাসস্থল বিভক্ত হয়ে পড়ায় জীববৈচিত্র্য হ্রাস পাচ্ছে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, বাংলাদেশকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণের জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে সংরক্ষিত এলাকার যৌথ ব্যবস্থাপনা এবং বাস্তুতন্ত্রের অবক্ষয়ের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের এক গবেষণায় এসব কথা বলা হয়েছে। ‘রাইজিং টাইডস, রোরিং ফিউচার্স: দ্য সুন্দরবন’স কোয়েস্ট ফর সার্ভাইভাল-২০২৪’ শীর্ষক গবেষণাটির ফলাফল মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত হয়েছে।

আজ বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) পালিত হচ্ছে সুন্দরবন দিবস। ২০১১ সালে এ দিবসটি ঘোষণা করা হয়। তারপর থেকে প্রতিবছর ১৪ ফেব্রুয়ারি দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। 

গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৭৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সুন্দরবনের ভূমি আবরণে পরিবর্তন ঘটেছে। ঘন বনের পরিমাণ কমে গেছে, আর জলাভূমির আয়তন বেড়েছে। এটি আবাসস্থল হারিয়ে যাওয়া এবং বিভাজনের ইঙ্গিত দেয়। ১৯৭৩ সালে সুন্দরবনের ৯৪ দশমিক ২ ভাগ এলাকা ঘন বনাঞ্চলে আবৃত ছিল, যা ২০২৪ সালে কমে ৯১ দশমিক ৫ ভাগ হয়েছে। অর্থাৎ ৫ দশকে ২ দশমিক ৭ ভাগ কমেছে। এর অর্থ হল, কার্বন আত্তীকরণ থেকে উপকূল রক্ষা এবং জীববৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সেবা প্রদানকারী এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুতান্ত্রিক এলাকার আয়তন উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

গবেষকরা অনুমান করেছেন, গত ৩০ বছরে সুন্দরবনের বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের ক্ষতি হয়েছে ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ইউএস ডলার, যার ৮০ ভাগ এরও বেশির জন্য দায়ী ম্যানগ্রোভ অবক্ষয়। এই সময়ে জলাভূমির আয়তন ৪ দশমিক ৮ ভাগ থেকে ৭ দশমিক ৬ ভাগ বেড়েছে। যা আবাসস্থল বিভাজন এবং জীববৈত্র্যি হ্রাসের মতো পরিবেশগত উদ্বেগ জন্ম দিচ্ছে। স্যাভানা বনাঞ্চলের পরিমাণ সামান্য কমে ১ দশমিক ০ ভাগ থেকে ০ দশমিক ৯ ভাগ হয়েছে, যা মানবসৃষ্ট অভিবাসন বা প্রাকৃতিক বনের গতিশীলতার কারণে বনের সহনশীলতা কমে যাওয়া এবং সম্ভাব্য অবনতির ইঙ্গিত দেয়।

জলাভূমির আয়তন বাড়ার পরেও এই অঞ্চলের ২১০ প্রজাতির মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া, মলাস্কা এবং ঝিনুক, ব্যাপকভাবে বিষাক্ত পদার্থ ব্যবহারের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, সুন্দরবন বর্তমানে যে সমস্ত হুমকির স্মমুখীন সেগুলোও সত্ত্বর বিবেচনা করতে হবে, যেমন বাঘের জনসংখ্যা হ্রাস, সুন্দরী গাছের অদৃশ্য হয়ে যাওয়া, সুন্দরবনের মধুর জন্য ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) স্বীকৃতি এবং রামপালে কয়লা চালিত তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ অবকাঠামো নির্মাণ।

সুন্দরবন রক্ষায় বহুমুখী পদক্ষেপের আহ্বান

চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও আন্তর্জাতিক জলবায়ু ও পরিবেশ নীতি বিশেষজ্ঞ এম জাকির হোসেন খান বলেন, সুন্দরবন রক্ষা জরুরি এবং এরজন্য বহুমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে। এটি একটি সীমান্তবর্তী সমস্যা, তাই ক্ষতিপূরণ তহবিলের আওতায় বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এছাড়া স্থানীয়ভাবে দূষণরোধে কাজ করতে হলে, পরিবেশ ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্তকারী ব্যবসা ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিকল্প আয়ের উৎস সরবরাহ করতে হবে। এলাকায় দূষণকারীদের সরকারি সুবিধা বাতিলসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

বাংলাদেশ ও ভারতের সুন্দরবন অঞ্চলে বহুমাত্রিক সমন্বয়ের মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধানের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, এর মধ্যে রয়েছে সুরক্ষিত এলাকা যৌথভাবে পরিচালনা, সমন্বিত সংরক্ষণ প্রচেষ্টা এবং যৌথ গবেষণা উদ্যোগ। অবৈধ কার্যকলাপ ও বন্যপ্রাণী চলাচল ট্র্যাক করতে ড্রোনসহ ডিজিটাল মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা। সেন্সর-ভিত্তিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে লবণাক্ততার মাত্রা পর্যবেক্ষণ করা যায় এবং অবৈধ মাছ ধরার বিরুদ্ধে পদ্ধতি গ্রহণ করা উচিত। এছাড়া সুরক্ষিত এলাকা ও বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য বিস্তার করা অতীব জরুরি। ঐতিহাসিক প্রশাসনিক মডেলগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ ভাগ ভূমি ও সমুদ্র রক্ষার জন্য আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলিকে খুব দ্রুত নবায়ন করা উচিত।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা