× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সাবেক ভূমিমন্ত্রীর ব্যাখ্যা অযৌক্তিক ও অবান্তর : টিআইবি

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৪ ২০:১৭ পিএম

আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২৪ ২০:৫৮ পিএম

টিআইবি কার্যালয়। সংগৃহীত ফটো

টিআইবি কার্যালয়। সংগৃহীত ফটো

বিদেশে সম্পদ অর্জন ও তা নির্বাচনী হলফনামায় গোপন করা প্রসঙ্গে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর দেওয়া ব্যাখ্যা অযৌক্তিক, অবান্তর ও অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

হলফনামায় মিথ্যা বা অপর্যাপ্ত তথ্য প্রকাশ করা দণ্ডনীয় অপরাধ উল্লেখ করে সংস্থাটির পক্ষ থেকে আইনি প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগসহ (সিআইডি) সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিদেশে সম্পদ অর্জনের প্রক্রিয়া ও পরিমাণ যথাযথভাবে যাচাইয়ের আহ্বান জানানো হয়েছে।

রবিবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলেছে টিআইবি।

গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ ও সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে টিআইবি জানিয়েছিল, সরকারের মন্ত্রিসভার একজন সদস্যের নিজ নামে বিদেশে একাধিক কোম্পানি থাকার প্রমাণ রয়েছে, যার প্রতিফলন হলফনামায় নেই। এই মন্ত্রী তৎকালীন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী– তা পরে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের খবরে স্পষ্ট হয়। শনিবার সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।  

সাইফুজ্জামান চৌধুরী জানান, তার বাবা ১৯৬৭ সাল থেকে লন্ডনে ব্যবসা করেছেন। তিনি নিজে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করে ১৯৯১ সাল থেকে সেখানে ব্যবসা করেছেন। এরপর তিনি লন্ডনে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছেন। বিদেশে সম্পদ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে কোনো টাকা নেননি।

তিনি বলেন, ‘হলফনামা পুরোপুরি বাংলাদেশের আয়কর রিটার্নের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়। এতে বিদেশে সম্পদের তথ্য দেওয়ার আলাদা কোনো ছক নেই। বাড়তি তথ্য কেন দিতে যাবেন?’

মন্ত্রী থাকা অবস্থায় তার মন্ত্রণালয়ে এক টাকার দুর্নীতিও হয়নি বলে দাবি করেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী। এ বিষয়ে প্রয়োজনে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত দল গঠনের প্রস্তাব দেন তিনি। কোনো দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করারও ঘোষণা দেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী।

বিদেশে সম্পদ অর্জনের বিষয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে টিআইবির তথ্য প্রকাশের উদ্দেশ্য নিয়ে সাবেক ভূমিমন্ত্রী যে প্রশ্ন তুলেছেন, তা ভিত্তিহীন উল্লেখ করেছে সংস্থাটি। টিআইবি বলছে, এমন তথ্য প্রকাশের উদ্দেশ্য নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের আয় ও সম্পদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা।

এ প্রসঙ্গে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সর্বশেষ চারটি জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ৬ হাজার ৭ জন প্রার্থীর হলফনামার ভিত্তিতে সার্বিক, আসন ও দলভিত্তিক তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরতে একটি ড্যাশবোর্ড প্রস্তুত এবং তথ্যের বিশ্লেষণ করে টিআইবি। যার উদ্দেশ্য নির্বাচনের প্রার্থী সম্পর্কে তথ্য, প্রার্থীদের আয় ও সম্পদ বৃদ্ধি এবং হলফনামায় প্রদর্শিত আয় ও সম্পদের তুলনামূলক চিত্র জনস্বার্থে তুলে ধরা। কিন্তু সাবেক ভূমিমন্ত্রীর প্রদর্শিত সম্পদের সঙ্গে তার প্রকৃত সম্পদের গরমিল থাকায় তার বিদেশে সম্পদ অর্জনের বিষয়টি উঠে এসেছে। সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী অভিযোগ করেন, তাকে ও সরকারকে বিব্রত করতেই টিআইবি এ কাজ করেছে। যদিও টিআইবি মনে করে, এ ধরনের সঠিক তথ্য প্রকাশ হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিব্রত হওয়াই স্বাভাবিক।’

হলফনামায় বিদেশে থাকা সম্পত্তি আলাদা করে ঘোষণা করার কোনো কলাম নেই এই অজুহাতে সেসব সম্পদ উল্লেখ করেননি– সাবেক ভূমিমন্ত্রীর এই ব্যাখাকে অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘প্রথমত, সাবেক ভূমিমন্ত্রী হলফনামায় তথ্য গোপন করেছেন। আর নির্বাচনী হলফনামায় মিথ্যা বা অপর্যাপ্ত তথ্য প্রকাশ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। হলফনামায় একজন প্রার্থীর সব সম্পদের বিবরণ প্রদানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তা দেশে বা বিদেশে যেখানেই থাকুক না কেন। বিদেশে সম্পদের জন্য আলাদা কলাম নেই বলে খোঁড়া যুক্তি দিয়ে তিনি নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। আয়কর বিবরণীতে না থাকায় হলফনামায়ও বিদেশে সম্পদের কথা উল্লেখ করেননি বলে যে দাবি করেছেন, যা নিতান্তই অবান্তর যুক্তি।’

বিদেশে সম্পদ গোপন করার ঘটনায় একটি নয়, সাবেক ভূমিমন্ত্রী বেশ কয়েকটি আইনভঙ্গ করেছেন উল্লেখ করে ড. ইফতেখারুজ্জামা বলেন, ‘সংবিধানের ১৪৭(৩) ধারা অনুযায়ী– দেশের মন্ত্রীসহ আট ধরনের সাংবিধানিক পদাধিকারী কোনো লাভজনক পদ কিংবা বেতন-ভাতাদিযুক্ত পদ বা মর্যাদায় বহাল হবেন না কিংবা মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যযুক্ত কোনো কোম্পানি, সমিতি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা বা পরিচালনায় কোনো রূপ অংশগ্রহণ করবেন না। অর্থাৎ সাবেক ভূমিমন্ত্রী শপথ নিয়ে সাংবিধানিক এই বিধানকেও লঙ্ঘন করেছেন– যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার সুযোগ নেই।’

সাবেক ভূমিমন্ত্রী দেশ থেকে টাকা নিয়ে বিদেশে সম্পদ গড়েননি দাবি করে যে বক্তব্য দিয়েছেন এবং তা তদন্তে যে কমিটি করার প্রস্তাব করেছেন, তা একেবারেই অবান্তর বলে মনে করে টিআইবি। অর্থপাচারসহ সাংবিধানিক ও আইনি বিধানের লঙ্ঘন কোনো তদন্ত কমিটির বিষয় নয়, বরং যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় দুদক, এনবিআর, বিএফআইইউ, সিআইডিসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ জবাবদিহি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা