বেইলি রোডে আগুন
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৪ ২৩:৫৫ পিএম
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনের রবিবারের (৩ মার্চ) বৈঠকের শুরুতে রাজধানীর বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করা হয়। বৈঠকের শুরুতে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এই ঘটনায় গভীর শোক এবং নিহতের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। এর আগে স্পিকারের সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।
এদিন সংসদের বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে রাজধানীর বেইলি রোডে আগুনে হতাহতের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সরকারের জবাবদিহির প্রয়োজন উল্লেখ করে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, এই ঘটনার দায়-দায়িত্ব নিয়ে সরকারের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক বলেন, দেশের জনগণ কর দেয় সরকার পরিচালনার জন্য। সরকারের দায়িত্ব নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়া। ভবন নির্মাণের জন্য সরকারের ছয়টি সংস্থার ছাড়পত্র লাগে, ছাড়পত্র দেওয়ার পরে ভবনগুলোর নজরদারি নেই।
মুজিবুল হক আরও বলেন, ‘প্রত্যেকটা এলাকায় রাজউকের কর্মকর্তা থাকেন। সেই কর্মকর্তারা কোথায়? এক-একটা ভবন তৈরি করা হয় একটা উদ্দেশ্যে, কিন্তু ব্যবহার হয় আরেকটা উদ্দেশ্যে। এই যে মানুষগুলো মারা গেল, জবাব দেবে কে? এর দায়-দায়িত্ব সরকারের ও সরকারি সংস্থার।’
এর পরপরই রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, শেখ হাসিনার হাতে দায়মুক্তির সংস্কৃতি ধ্বংস হয়েছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বড় বড় অপরাধীদের বিচার হয়েছে। সেক্ষেত্রে দায়মুক্তির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসেছি। কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় আরও কঠিন পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
২০১৯ সালে বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুনে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। ওই সময়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ছিলেন শ ম রেজাউল করিম। তিনি বলেন, বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন লাগার পরে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে কাজ করছিলেন। তদন্ত করে ৬২ জনের বিরুদ্ধে রিপোর্ট দিয়েছিলেন। দুর্ভাগ্য, সর্বোচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি রিপোর্ট দেওয়ার পরও সবার বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। তারপর চার্জশিট দেওয়ার সময় অনেককে বাদ দেওয়া হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, আজ পর্যন্ত ওই মামলার অভিযোগ গঠন পর্যন্ত হয়নি।
২০২১ সালের ঘটনা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য বলেন, নারায়ণগঞ্জে একটি ফ্যাক্টরিতে ৫২ জন লোককে পুড়িয়ে হত্যা করা হল। ওই মামলার আসামিরা জেলে গেছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত বিচার কার্যক্রম শুরু হয়নি। এ রকম অনেক ঘটনা রয়েছে। এ জাতীয় অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত, প্রয়োজনে আইন পরিবর্তন করে, স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল করে, তাদের বিচার করা না হলে শুধু এই অপরাধ নয়, অন্যদের কাছে মেসেজ যাবে না। মন্ত্রী থাকাবস্থায় ১ হাজার ৩০০ ভবনকে চিহ্নিত করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এসব ভবনের অধিকাংশ ফ্লোর অননুমোদিতভাবে করা হয়েছে, কিন্তু ভবনগুলো ভাঙা সম্ভব হয়নি। এটাও কিন্তু এক প্রকার দায়মুক্তি দেওয়া।