মা ইলিশ সংরক্ষণ সপ্তাহ শুরু ১১ মার্চ

এ বছর মা ইলিশ/জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ শুরু হবে ১১ মার্চ। সপ্তাহব্যাপী মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এই কর্মসূচি শেষ হবে ১৭ মার্চ। এসব তথ্য জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান বলেছেন, এবারের কর্মসূচির প্রতিপাদ্য ‘ইলিশ হলো মাছের রাজা, জাটকা ধরলে হবে সাজা।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সরকার সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। ইলিশ বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে কোনোভাবে যাতে বাধা সৃষ্টি না হয়, সেজন্য যা যা করা দরকার আমরা করব। ইলিশের অভয়াশ্রম সুরক্ষা এবং জাটকা নিধন বন্ধে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। জাটকা আহরণ বন্ধের সময় যাতে ইলিশ আহরণে জড়িতদের কোনো সমস্যা নয়, সেজন্য তাদের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।’

বুধবার (৬ মার্চ) সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ-২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

আব্দুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে ব্র্যান্ডেড এবং পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম সেরা মাছ ইলিশ। ইলিশ উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে আমরা প্রথম স্থানে রয়েছি। এই মাছের উৎপাদন অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করেছে। ভবিষ্যতে এটা আরও ব্যাপক আকার ধারণ করবে।’

জাটকা ও ইলিশ সংরক্ষণে সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘জাটকা রক্ষা ও মা ইলিশ আহরণ বন্ধে জলে, স্থলে ও আকাশপথে বিভিন্নভাবে মনিটর করা হচ্ছে। ইলিশের অভয়াশ্রমে জাটকা নিধনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যারা কারেন্ট জাল, বেহুন্দি জালসহ অন্যান্য ক্ষতিকর জাল তৈরি করে জাটকা নিধন করে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়া ও জরিমানা করা হচ্ছে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মা ইলিশ রক্ষা পেলে ইলিশের উৎপাদন বাড়বে। উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে দাম কমে আসবে। দাম বৃদ্ধির সঙ্গে মধ্যস্বত্বভোগীরা জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকার এসব বিষয় সদিচ্ছার সঙ্গে মনিটরিং করছে। শুধু আইন প্রয়োগের মাধ্যমে জাটকা বা মা ইলিশ ধরা বন্ধ করা যাবে না। আমাদের জাটকা বা মা ইলিশ ধরা বন্ধে সামাজিক ক্যাম্পেইন চালাতে হবে, জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে।’

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আরও বলেন, ‘জাটকাসহ অন্যান্য মৎস্যসম্পদ ধ্বংসকারী অবৈধ জাল নির্মূলে এ বছর বিশেষ কম্বিং অপারেশন পরিচালনা করে ৩০ দিনে ১৭টি জেলায় ৯৩১টি ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ৩ হাজার ৪৭৪টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ৭ হাজার ৬৬৯টি বেহুন্দি জাল, ৪৪৮.৭১ লাখ মিটার কারেন্ট জাল এবং ১৯ হাজার ৭৪২টি বেড়জাল, চরঘড়া জাল, মশারি জাল ও পাইজাল জব্দ করা হয়েছে এবং প্রায় ২৩ লাখ টাকা জরিমানা এবং ১৯২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে জেল প্রদান করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আমরা খুব কঠোর অবস্থান নিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘গতবার জাটকা আহরণে বিরত থাকা ৩ লাখ ৬১ হাজার ৭১টি জেলে পরিবারকে মাসিক ৪০ কেজি হারে ৪ মাসে ৫৭ হাজার ৭৭১ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছ। এই সহায়তার পাশাপাশি জেলেদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩১ হাজার ৭০০ জেলেকে চাহিদানুযায়ী নানা উপকরণ দেওয়া হয়েছে।’

এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহা. সেলিম উদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল কাইয়ূম ও মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. আলমগীর উপস্থিত ছিলেন।