× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দুই দিন ধরে যোগাযোগ বন্ধ, দুশ্চিন্তায় জিম্মিদের পরিবার

হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম

প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২৪ ১৭:০৩ পিএম

আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২৪ ১৮:৫১ পিএম

মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুর কবলে পড়েছে এমভি আব্দুল্লাহ। ফাইল ফটো

মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুর কবলে পড়েছে এমভি আব্দুল্লাহ। ফাইল ফটো

সোমালিয়ান জলদস্যুরা এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি হাইজ্যাক করার পর প্রথম দিকে জিম্মি নাবিকদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ দিলেও গত দুই দিন ধরে সেটি বন্ধ রয়েছে। শনিবার থেকে আজ (রবিবার) পর্যন্ত জিম্মি নাবিকদের কাছ থেকে আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. আবু সাইদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘শনিবারের পর থেকে আজ পর্যন্ত জিম্মি নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাই নাবিকরা এখন কেমন আছেন, জাহাজে কোনো অসুবিধা হচ্ছে কিনা এসব বিষয়ে আমরা কোনো তথ্য পাচ্ছি না।’

জিম্মি নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তাদের স্বজনরা। তারা বলছেন, প্রথম দিকে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগ দিলেও এখন কেন দিচ্ছে আমরা বুঝতেছি না। এটি নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। এটি ভারতীয় নৌবাহিনীসহ ইইউর অভিযানের কারণে নয়তো? অন্যদিকে হাইজ্যাকের পর ছয়দিন পার হতে চললেও এখনও মুক্তিপণ চেয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি জলদস্যুরা। তাই জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারে তৎপরতাও শুরু করতে পারছে না মালিকপক্ষ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের প্রধান রিয়ার এডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম গত শনিবার (১৪ মার্চ) জানান, সোমালিয়ার জলদস্যুরা যখন বাংলাদেশি জাহাজ জিম্মি করে সে সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি জাহাজ অভিযান চালানোর জন্য বাংলাদেশের অনুমতি চেয়েছিল।

কিন্তু জাহাজটিতে থাকা নাবিক, ক্রু এবং অন্যদের প্রাণনাশের আশঙ্কার কথা ভেবে বাংলাদেশ সরকার অভিযানের অনুমতি দেয়নি। 

এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌফিকুল ইসলামের স্ত্রীর ভাই শিবলি মাহমুদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘মঙ্গলবার সর্বশেষ আমাদের সঙ্গে তৌফিকুল ইসলামের যোগাযোগ হয়। তখন জানিয়েছিল সোমালিয়ান জলদস্যুরা জাহাজটি হাইজ্যাক করে সোমালিয়ায় নিয়ে যাচ্ছে। এরপর গত পাঁচদিন ধরে তার সঙ্গে আমাদের আর যোগাযোগ হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, যোগাযোগ না হওয়ায় আমরা খুব দুশ্চিন্তায় আছি। বিশেষ করে যখন শুনেছি ভারতীয় নৌবাহিনী এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছে, হাইজ্যাক হওয়া মালটার একটি জাহাজ উদ্ধারের সময় ৩৫ জন জলদস্যুকে আটকের ঘটনা আমাদের দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জলদস্যুরা এখন জিম্মি নাবিকদের নির্যাতন করতে পারে।’

একই ধরনের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের থার্ড অফিসার তারিকুল ইসলামের বড় ভাই আলমগীর হোসেন।  প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার যে যোগাযোগ হয়েছে এরপর আমাদের সঙ্গে আমার ভাইয়ের আর যোগাযোগ হয়নি। গত দুই দিন তার কাছে থেকে কোনো বার্তা পাইনি। তাই জিম্মি অবস্থায় এখন তারা কেমন আছে সেটি উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় আছি। খবর শোনার পর থেকে আমার মা অনবরত কাঁদতে আছেন। ভাইয়ের জন্য দুশ্চিন্তায় ঠিক মতো খাওয়া ধাওয়াও করছেন না। জিম্মি জাহাজ উদ্ধারের খবর শুনে আমরা আরও বেশি দুশ্চিন্তায় আছি।’

গত ১২ মার্চ বাংলাদেশ সময় দুপুরে জাহাজ থেকে বার্তা পাঠিয়ে জানানো হয়, আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুর কবলে পড়েছে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ। এরপরপরই জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায় জাহাজটি। এরপর সেখান থেকে জাহাজটিকে চালিয়ে ১৪ মার্চ (বৃহস্পতিবার) জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে সোমালিয়ার গারাকাদ বন্দরের কাছে নোঙর করে। এরপর শুক্রবার জাহাজটির নোঙর তুলে ফেলা হয় এবং দুপুর থেকে সেটিকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।

সন্ধ্যা পর্যন্ত জাহাজের অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) পক্ষ থেকে এমভি আব্দুল্লাহর সর্বশেষ অবস্থান জানানো হয়েছে।

বিএমএমওএ’র সাধারণ সম্পাদক মো. শাখাওয়াত হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, ‘গতকাল জাহাজটি যেখানে নোঙর করা ছিল, সেখান থেকে আজ ৪৫-৫০ নটিক্যাল মাইল উত্তর দিকে সরিয়ে সোমালিয়ার গদবজিরান উপকূলে নেওয়া হয়েছে। নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে আমরা তথ্য পেয়েছি বর্তমানে গদবজিরান শহর থেকে ৪ নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করা হয়েছে।’

জিম্মি নাবিকদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ওই জাহাজে থাকা ২০ জন জলদস্যু জাহাজের ক্যাপ্টেনকে বাধ্য করেছে নোঙর পরিবর্তন করে নতুন জায়গায় গিয়ে নোঙর করতে। অবস্থান পরিবর্তনের সময় জাহাজ পরিচালনা করেছেন জাহাজের ক্যাপ্টেন এবং নাবিকরা। কিন্তু তাদের জাহাজ মুভ করতে হয়েছে জলদস্যুদের কথা অনুযায়ী।

বাংলাদেশ শনিবার দুপুরে জিম্মি নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা একজন ক্যাপ্টেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি নতুন জায়গায় গিয়ে নোঙর করার আগে আমরা সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। এরপর পুনরায় যোগাযোগ করার কথা থাকলেও নতুন অবস্থানে যাওয়ার পর থেকে নাবিকদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। গত দুই দিন নাবিকদের কাছ থেকে আর কোনো সাড়া পাইনি।’

অন্যদিকে গত ছয়দিনে মুক্তিপণ চেয়ে জলদস্যুরাও যোগাযোগ করেনি। এ সস্পর্কে জানতে চাইলে কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, এখন পর্যন্ত জলদস্যুরা মুক্তিপণ চেয়ে যোগাযোগ করেনি। তাই জিম্মি নাবিকদের মুক্ত করার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে জলদস্যুরা যোগাযোগ না করলেও আমরা বসে নেই। আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি, জলদস্যুরা যোগাযোগ করলে যাতে দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে নেওয়া যায়। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা