× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

একটি ফোন কলের অপেক্ষায় সবাই

এস এম রানা, চট্টগ্রাম

প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৪ ১০:০৬ এএম

আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৪ ১২:১৬ পিএম

২৩ নাবিকসহ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ। ফাইল ছবি

২৩ নাবিকসহ জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ। ফাইল ছবি

ভারত মহাসাগর থেকে অপহরণ করে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর জিম্মির ঘটনায় এখনও জলদস্যুদের কাছ থেকে ফোন পায়নি মালিকপক্ষ। ফলে জলদস্যুদের পক্ষ থেকে ফোন পাওয়ার জন্য তীর্থের কাকের মতোই অপেক্ষায় এস আর শিপিং লাইন্স কর্তৃপক্ষ। তবে জাহাজে থাকা জিম্মি নাবিকদের সঙ্গে নিয়মিতই যোগাযোগ হচ্ছে মালিকপক্ষের। নিরাপত্তার স্বার্থে নাবিকরা ভয়েস মেসেজ পাঠাচ্ছেন কম। এ ছাড়াও বাংলাদেশে মেরিন ক্যাডেটদের একটি অংশ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, গণমাধ্যমে আপাতত জিম্মি নাবিকদের বিষয়ে আপডেট দেবে না তারা। 

জিম্মি হওয়ার পর নাবিকদের পাঠানো একাধিক ভয়েস মেসেজে তারা ঈদের আগেই দেশে ফেরার আকুতি ব্যক্ত করেছিলেন। নাবিকদের পরিবার ও স্বজনরাও রয়েছেন উৎকণ্ঠায়। কিন্তু জলদস্যুদের তরফ থেকে যোগাযোগ না করায় কবে নাগাদ মুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হবে তা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছে না কেউ। এ অবস্থায় ঈদের আগে জিম্মি নাবিকরা দেশে ফিরতে পারবেন কি না, তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে।

জলদস্যুদের পক্ষ থেকে এখনও জাহাজের মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি এমন দাবি করে কবির গ্রুপের উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা জলদস্যুদের পক্ষ থেকে ফোন পাব, এই অপেক্ষায় আছি। কোম্পানির পক্ষ থেকে আলোচনার জন্য সার্বিক প্রস্তুতি আছে। কিন্তু জলদস্যুরা যোগাযোগ না করলে আলোচনা শুরু করা যাচ্ছে না। ফলে আমরা জলদস্যুদের ফোনের অপেক্ষায় আছি।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। তারা ভালো আছেন, সুস্থ আছেন।’ জাহাজে থাকা স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে জলদস্যুরা জাহাজ মালিকপক্ষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার চেষ্টা করেছে কি না বা জিম্মি নাবিকরা মালিকপক্ষের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার উদ্যোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জলদস্যুরা কখন কীভাবে যোগাযোগ করবে সেটা তাদের বিষয়। এখানে জিম্মিরা চেষ্টা করে খুব বেশি সফল হতে পারবে বলে মনে হয় না। অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, জলদস্যুরা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছিল। এবার যেহেতু এখনও ফোন পাওয়া যায়নি, সেহেতু আগ বাড়িয়ে কিছু বলা মুশকিল।’ 

অবশ্য জিম্মি নাবিকদের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জিম্মিরা বৃহস্পতিবারের পর থেকে আর যোগাযোগ করছেন না। তবে মালিকপক্ষ দাবি করছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে এবং তারা জলদস্যুদের যোগাযোগের অপেক্ষায় আছেন। জলদস্যুরা যোগাযোগ করলেই যাতে আলোচনা এগিয়ে নেওয়া যায়, সেই লক্ষ্যে সরকারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে মালিকপক্ষ। 

জিম্মিদের বিষয়ে গণমাধ্যমে তথ্য না দেওয়ার বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ক্যাপ্টেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যমের সব খবর রাখছে জলদস্যুরা। তারা নাকি দোভাষীর মাধ্যমে সংবাদগুলোর বিস্তারিত জানছে এবং এ নিয়ে জিম্মিদের নানা প্রশ্ন করছে। জিম্মি একাধিক নাবিক হোয়াটসঅ্যাপে এমন বার্তা দেওয়ায় আপাতত কৌশলগত কারণে গণমাধ্যমে সর্বশেষ অবস্থার তথ্য সরবরাহ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মেরিন ক্যাডেটদের অনেকেই। এসব ক্যাডেটরা একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করেন।’ 

জিম্মি উদ্ধারপ্রক্রিয়া বর্ণনা করে কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, সাধারণত জলদস্যুরা একটি জাহাজ নিজেদের কব্জায় নেওয়ার পর এক থেকে দুই সপ্তাহ সময় নেয় মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। এই সময়ে তারা জাহাজ মালিকের অবস্থা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে। তারপর যোগাযোগ করে। এমভি আব্দুল্লাহ অপহরণ হয়েছে ১২ মার্চ। সবে এক সপ্তাহ গেল। আশা করছি, দ্রুতই যোগাযোগ করবে জলদস্যুদের পক্ষের এজেন্ট। জাহাজটির বীমা করা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জাহাজটির বীমা করা আছে, তারাও এ বিষয়ে কাজ করছে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ও কাজ করছে। সব পক্ষের সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় নাবিকদের অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনতেই মালিকপক্ষ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে।’ 

ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি জাহাজ ভারত মহাসাগরে অভিযান চালিয়ে এমভি রুয়েন নামক একটি মাল্টার পতাকাবাহী জাহাজ এবং ১৭ নাবিককে উদ্ধার এবং ৩৫ জলদস্যুর আত্মসমর্পণের তথ্য প্রচারের পর বাংলাদেশি জিম্মি নাবিকদের পরিবার আতঙ্ক ছড়ানোর বিষয়ে মালিকপক্ষ বলছে, বাংলাদেশি জাহাজটি এখন সোমালিয়া উপকূলে নোঙর করা। গত শনিবারের পর নতুন করে আর স্থানান্তর হয়নি। সেখানে জিম্মিরা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক। তাদের উদ্ধার করতে অন্য দেশের নৌ-কমান্ডো অভিযান চালাবে কি না, এ বিষয়ে নিশ্চয়ই রাষ্ট্রের সঙ্গে আলাপ হবে। সেক্ষেত্রে এমভি আব্দুল্লাহর মালিকপক্ষের বার্তা স্পষ্ট। মালিকপক্ষ চায় অক্ষত অবস্থায় জিম্মি নাবিকদের ফিরিয়ে আনতে। এক্ষেত্রে ঝুঁকির বিষয়টি বাংলাদেশ সরকার নিশ্চয় মাথায় রাখবে এবং সেভাবেই সিদ্ধান্ত নেবে। জিম্মি পরিবারের সদস্যদের আতঙ্কের কিছু নেই। এটুকু বলা যায়, সোমালীয় জলদস্যুদের কবল থেকে জাহাজ উদ্ধার করতে কয়েক মাস থেকে বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা