প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৪ ১৭:২২ পিএম
আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৪ ১৮:৫১ পিএম
প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের প্রথম ও দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা হবে না বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ। তিনি বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে এখন থেকে ধারাবাহিক মূল্যায়ন করা হবে।’
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ তথ্য জানান।
গত বছর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। প্রথম বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে এই শিক্ষাক্রম শুরু হয়। গত জানুয়ারি শুরু হওয়া শিক্ষাবর্ষে ওই তিন শ্রেণি ছাড়াও দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে চালু হয়েছে এ শিক্ষাক্রম।
পরীক্ষা কমানোর বিষয়ে সচিব বলেন, ‘পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি তেমন নয়। মূল্যায়ন পদ্ধতিটা ভিন্ন। এটা হলো ধারাবাহিক মূল্যায়ন। ধারাবাহিক মূল্যায়ন মানে একটা শিক্ষার্থীর সামগ্রিক আচরণ অবজার্ভ করে, এটি মূল্যায়নের মাধ্যমে মূল্যায়ন। কিন্তু তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত আমরা লিখিত পরীক্ষা, বইয়ের বোঝা থেকে আমরা তাদের মুক্ত করেছি। মূল কথা হলো, তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত প্রথম সাময়িক, দ্বিতীয় সাময়িক-এটি আর থাকবে না। মূল্যায়নের পদ্ধতি ভিন্ন হবে। শিক্ষকরা যাতে দ্রুত মূল্যায়ন করতে পারে এ জন্য এনসিটিবি অ্যাপসের কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিগত ১০ বছরের চিত্র দেখব। যেসব স্কুলে ৫০ জনের কম শিক্ষার্থী আছে, সেগুলো পার্শ্ববর্তী স্কুলের সঙ্গে একিভূত করা হবে। আমরা এ ধরনের প্রায় ৩০০টি স্কুল পেয়েছি। এগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি। তবে ঢালাওভাবে সব স্কুল বন্ধ করা হবে না। স্থানীয় বাস্তবতাসহ সব অবস্থা দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যেমন, রাঙামাটি জেলার বিলায়ছড়ি একটা উপজেলা আছে, সেখানে একটা স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ৪২ জন। বিগত কয়েক বছরই ৪২ জন। ওই স্কুল আমরা মার্জ করব না। কারণ ওই ৪২ জন শিক্ষার্থী প্রায় ৭-৮ কিলোমিটার জায়গা থেকে আসে। সুতরাং ওই প্রেক্ষাপট আমরা বিবেচনায় নেব। যেখানে বিগত কয়েক বছর ধরে ৫-৭ জন শিক্ষার্থী আছে, সেগুলো আমরা মার্জ করে দেব, এটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত।‘
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বই ছাপালে সরকারের টাকা সাশ্রয় হবে বলে মনে করেন সচিব ফরিদ আহাম্মদ। তিনি বলেন, ‘এনসিটিবির কাজ কারিকুলাম তৈরি, পর্যালোচনা করা। বই ছাপানোর কাজটি প্রশাসনিক। অন্যদিকে, এনসিটিবি প্রাথমিকের বই ছাপাতে গিয়ে অতিরিক্ত অর্থ খরচ, সময় ও জটিলতা তৈরি হচ্ছে। প্রাথমিকের বই ছাপানোর জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অনুকূলে অর্থ বরাদ্দ দেয়। সেই অর্থে এসসিটিবি বই ছাপায়। প্রাথমিকের প্রতিটি বই ছাপানোর জন্য এনসিটিবিকে ২ টাকা ৬০ পয়সা করে সার্ভিস চার্জ দিতে হয়। সে হিসাবে প্রতি বছর ৩০ থেকে ৩৫ কোটি সার্ভিস চার্জ দিতে হয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বই ছাপালে এ টাকাটা সরকারের সাশ্রয় হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বইয়ের মান খারাপ হলে কখনও প্রাথমিক অধিদপ্তর, এনসিটিবি একে অন্যকে দোষারোপ করে। যেহেতু এনসিটিবি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনের প্রতিষ্ঠান, তাই গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কোনো তদারকি ও খবরদারি করতে পারে না। প্রাথমিক অধিদপ্তর বই ছাপার কাজটি করলে তদারকি ও মান রক্ষা করতে সহজ হবে।’