কান্তজিউ মন্দির অঙ্গনে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৪ মার্চ ২০২৪ ১৭:৫৬ পিএম
আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৪ ১৯:৩৪ পিএম
দিনাজপুরের কান্তজী মন্দির। ছবি : সংগৃহীত
দিনাজপুরের কান্তজিউর মন্দির অঙ্গনের জমি দখল করে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশিষ্টজনরা। এ ছাড়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর চড়াও হওয়ার ঘটনায় তারা ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন।
রবিবার (২৪ মার্চ) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফের পাঠানো বার্তায় বিবৃতিদাতারা হলেন-হাসান ইমাম, অনুপম সেন, সারওয়ার আলী, রামেন্দু মজুমদার, আবেদ খান, ফেরদৌসী মজুমদার, মামুনুর রশীদ, মফিদুল হক, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, মুনতাসীর মামুন, শাহরিয়ার কবীর, কেরামত মওলা, মিলনকান্তি দে, লাকী ইনাম, সারা যাকের, শিমূল ইউসুফ ও গোলাম কুদ্দুছ।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলার ঐতিহ্যবাহী টোরাকোটা শিল্পের অনুপম শিল্পকীর্তি বিশ্বখ্যাত কান্তজিউর মন্দির সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র তীর্থস্থান। মহারাজা প্রাণনাথ রায়ের উদ্যোগে ও অর্থায়নে নির্মিত টেরাকোটা শিল্পকর্ম মানব ইতিহাসের শিল্প ও রুচিবোধের সাক্ষ্য বহন করে। টেরাকোটায় শুধু রামায়নের ঘটনা ও চরিত্র নয় মুসলিম সম্প্রদায়ের মুঘল সাম্রাজ্যের উল্লেখযোগ্য কীর্তি একই সঙ্গে উৎকীর্ণ করা হয়েছিল।
এতে বলা হয়, যে শিল্পীদের হাতে বিস্ময়কর চিত্রকলার সৃষ্টি হয়েছিল এবং যারা প্রকৌশলী ও শ্রমিক হিসেবে মন্দির নির্মাণ করেছিলেন তাদের সিংহভাগ মুসলিম সম্প্রদায়ের। সম্প্রীতির এমন নিদর্শন পৃথিবীতে বিরল। মন্দিরের কাছেই শ্রমিকদের নামাজের সুবিধার জন্য মহারাজা প্রাণনাথ রায়ের অর্থায়নে নয়াবাদ মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল। অনিন্দ্য সুন্দর সেই মসজিদও একটি পুরাকীর্তি।
এতে আরও বলা হয়, এই সম্প্রীতির উদাহরণ বিশ্ব ইতিহাসে আমাদের দেশকে করেছিল মহান। সেই মহত্বের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে এ জাতি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে। এ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন মানবসভ্যতার স্মারক। এ গৌরবের স্মারক কোনোভাবেই হুমকির মুখে ফেলা যাবে না। আমরা দৃঢভাবে উচ্চারণ করতে চাই এ ধরনের আত্মবিনাশী কাজ যেকোনো মূল্যে সরকার ও প্রশাসনকে রুখতে হবে।
এ ছাড়া সম্প্রতি পবিত্র রমজান মাসে কতিপয় ধর্মান্ধ মৌলবাদী ব্যক্তির রমজানের পবিত্রতা রক্ষার নামে সনাতন ধর্মের মানুষের ওপর চড়াও হওয়া ও তাদের শারীরিকভাবে লঞ্ছিত করার ঘটনায় আমরা লজ্জিত ও ক্ষুব্ধ। আমরা প্রশাসন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাব এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা প্রতিহত করার আহ্বান জানাচ্ছি।