আলাউদ্দিন আরিফ ও ফয়সাল খান
প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৪ ১০:১১ এএম
আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৪ ১১:১২ এএম
ঈদে ঘরে ফেরার আনন্দ মাটি করে দিতে পারে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় মহাসড়কগুলোর বিভিন্ন স্পটে লেগে যাওয়া যানজট। এবার কমপক্ষে ১৫৫টি স্থানে যানজট ও দুর্ঘটনায় ব্যাপক ভোগান্তির আশঙ্কা করা হচ্ছে। মহাসড়কের দুই পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ হাটবাজার, টোলপ্লাজায় ধীরগতি, বাস-ট্রাকের স্ট্যান্ড এবং যত্রতত্র ইজিবাইক ও অটোরিকশায় যাত্রী ওঠানামার কারণে ঈদের সময় তীব্র যানজট দেখা দিতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
হাইওয়ে পুলিশ ও সরকারের একাধিক সংস্থার যৌথ পর্যবেক্ষণে দেশের জাতীয় মহাসড়কগুলোর ১৫৫টি যানজটের স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশের প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি মো. শাহাবুদ্দীন খান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে চিহ্নিত এলাকাগুলোতে যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগের তিন দিন ও পরের তিন দিন মহাসড়কে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরি চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য, পচনশীল দ্রব্য, গার্মেন্টসামগ্রী, ওষুধ, সার এবং জ্বালানি সরবরাহকারী যানবাহন এর আওতামুক্ত থাকবে। ঈদের দিনসহ আগের সাত দিন এবং পরের পাঁচ দিন সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো সার্বক্ষণিক খোলা রাখতে বলা হয়েছে। গার্মেন্টসহ অন্যান্য শিল্প-কলকারখানার শ্রমিকদের একত্রে ছুটি না দিয়ে ধাপে ধাপে ছুটি দেওয়ার বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। জাতীয় মহাসড়কগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ কাজ ঈদের সাত দিন আগেই সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। চিহ্নিত ১৫৫টি যানজট স্পট ঈদের আগে ও পরে নিবিড় মনিটরিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে। ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানÑ এসব গাড়িতে যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। নির্দিষ্ট ২২টি সড়ক ও মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এদিকে সড়কপথের পাশাপাশি শঙ্কা রয়েছে নৌ ও রেলপথেও। নৌপথে ঈদের আগের পাঁচ দিন থেকে পরের পাঁচ দিন অর্থাৎ মোট ১১ দিন বাল্কহেড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন বন্ধ রাখাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
যানজটের কয়েকটি কারণ
প্রায়ই দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা সেতুর টোলপ্লাজা ও দাউদকান্দিতে টোল আদায়ে ধীরগতির কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। গত কয়েক বছর থেকে এই দুটি টোলপ্লাজায় ঈদে উভয়মুখী যাত্রীদেরই দীর্ঘ সময় যানজটে পড়ে থাকতে দেখা যায়। এ ছাড়া মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে স্বাভাবিক সময়েও টোলপ্লাজার কারণে তীব্র যানজট দেখা যায়।
এদিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর সেতুর নিচে শ্যামবাজার বাসস্ট্যান্ড ও তারাব চৌরাস্তা, রূপসী বাসস্ট্যান্ড, ভুলতা ও গোলাকান্দাইল মোড়ে মহাসড়ক দখল করে লেগুনা, ইজিবাইক ও অটোরিকশায় যাত্রী ওঠানামা করার কারণে যানজট দেখা দেয়। লেগুনা, ইজিবাইকগুলো এলোপাতাড়ি রাস্তার ওপর পার্কিং করে রাখে। যাত্রামুড়া বাজার ও তারাব থেকে ভুলতা পর্যন্ত সড়কের দুই পাশ দখল করে বাস ও ট্রাক পার্কিং করা থাকে। রূপসী, বরপা, ভুলতা ও গোলাকান্দাইল মোড়গুলো রিকশা, ইজিবাইক, অটোরিকশা ও লেগুনার দখলে থাকায় যানজট সৃষ্টি হয়।
ঈদযাত্রায় ভোগান্তি ও শঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ও পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এম শামসুল হক প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, একসঙ্গে অনেক মানুষ সড়কে নেমে এলে সরকারের কোনো ব্যবস্থাপনাই কাজে আসবে না। বড় উৎসবগুলোতে বিশ্বের সব দেশেই এমন সমস্যা তৈরি হয়। টেকসই চলাচল নিশ্চিত করতে হলে ধাপে ধাপে সরকারকে ট্রেনের দিকে গুরুত্ব বাড়াতে হবে। এ ছাড়া এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। দ্রুতগতির ট্রেনের চলাচল যতটা স্বস্তিদায়ক করতে পারে, তা অন্য কোনোভাবে সম্ভব নয়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে ৪৮ স্পট
হাইওয়ে পুলিশ ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার মহাসড়কের ৪৮টি এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ ও সেখানে যানজট হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। এলাকাগুলো হচ্ছেÑ কাঁচপুর ব্রিজের পূর্ব ঢাল, গ্রিনলাইন ইউটার্ন, মদনপুর মোড়, মদনপুরের কেওডালা ইউটার্ন, কনকা ইউটার্ন, মোগড়াপাড়া, মেঘনা টোলপ্লাজা, সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ড, সানারপাড় ইউটার্ন, মৌচাক স্ট্যান্ড, দশতলা ভবন, শিমরাইল বাসস্ট্যান্ড, আদমজী রোড, পাখির মোড়, ওয়াটার পার্ক, ভবের চর বাসস্ট্যান্ড, কলেজ গেট, আনারপুরা, ভাটেরচর নতুন রাস্তা, হাঁস পয়েন্ট, দাউদকান্দি টোলপ্লাজা, বলদাখাল, গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড, চান্দিনা বাসস্ট্যান্ড, মাধাইয়া বাসস্ট্যান্ড, ইলিয়টগঞ্জ, সুয়াগাজী বাজার (উভয়মুখী), সদর দক্ষিণ থানার সামনের কাটা, নূরজাহান হোটেলের সামনের কাটা, কোটবাড়ী ইউটার্নের উভয় পাশে, জাগুরঝুলি কাটা, আলেখার চর কাটা, ক্যান্টনমেন্ট মোড় (উভয়মুখী), নাজিরাবাজার ইউটার্ন, নিমসার বাজার ইউটার্ন, চৌদ্দগ্রাম বাজার, বিসিক মোড়, লালপোল, বাড়বকুণ্ড বাজার, ছোট কুমিরা, কেডিএস মোড়, ভাটিয়ারী পয়েন্ট, ফুটলিং, ফৌজদারহাট, সীতাকুণ্ড বাসস্ট্যান্ড বা বড় দারোগারহাট স্কেল, মিরসরাই থানাধীন মিঠাছড়া বাজার, নিজামপুর বাজার, বড়তাকিয়া বাজার ও জোরারগঞ্জ থানাধীন বারৈয়ারহাট বাজার।
ঢাকা-সিরাজগঞ্জ-রংপুর মহাসড়কে ৫২ এলাকা
উত্তরবঙ্গগামী যানবাহন চলাচলের জন্য ৫২ এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এলাকাগুলো হচ্ছেÑ বাইপাইল মোড়, চন্দ্রা মোড়, গোড়াই মিলগেট, এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব গোলচত্বর, বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম গোলচত্বর, ফেন্সি গেটের পূর্ব অংশ, ফেন্সি গেট সার্ভিস লেন, মুলিবাড়ি আন্ডারপাসের পূর্বে, কড্ডা ফ্লাইওভারের পশ্চিমে, কোনাবাড়ী আন্ডারপাসের পূর্বে, হাটিকুমরুল পাঁচলিয়া বাসস্ট্যান্ড, হাটিকুমরুল ধোপাকান্দি ব্রিজ, হাটিকুমরুল গোলচত্বর, হাটিকুমরুল বাজার, ঘুরকা বেলতলা, ভূঁইয়াগাতী বাসস্ট্যান্ড, হোটেল হাইওয়ে অভিভিলা, ঘোলমাইল, সিরাজগঞ্জ বাইপাস, জমজম দইঘর, বগুড়া বাজার থেকে সীমাবাড়ি কলেজ, পেন্টাগন হোটেল, ফুড ভিলেজ হোটেল, হাটিকুমরুল গোলচত্বর থেকে হাটিকুমরুল ইউনিয়ন পরিষদ, দাদপুর জামাই রোড, নিউ পাপিয়া হোটেল থেকে চাচা ভাতিজা হোটেল পর্যন্ত, জোড়া ব্রিজ, চান্দাইকোনো গরুর হাট, ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক কাচিকাটা টোলপ্লাজা, বনপাড়া বাইপাস, বনপাড়া বাজার, রাজশাহী-নাটোর মহাসড়কে বানেশ্বর বাজার, ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে ঘোগা বটতলা থেকে মোনায়েম কনস্ট্রাকশন, ছনকা বাজার, শেরপুর মডেল মসজিদের সামনে, নয়ামাইল বাজার, মাঝিরা বাজার, ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে বগুড়া জেলার শাজাহানপুর থানাধীন বনানী বাসস্ট্যান্ড, শাকপালা, বগুড়া জেলার সদর থানাধীন জিয়া মেডিকেল কলেজ গেটের সামনে, তিন মাথা লেভেলক্রসিং, চার মাথা ফ্লাইওভার ব্রিজের নিচে, বারোপুর বাসস্ট্যান্ড, মাটিডালি বিমানবন্দর মোড়, টিএমএসএসের সামনে, শিবগঞ্জ থানাধীন মহাস্থান বাসস্ট্যান্ড ফ্লাইওভারের নিচে, মোকামতলা বাসস্ট্যান্ড ফ্লাইওভারের নিচে, মায়ামনি চৌরাস্তা মোড় থেকে গোবিন্দগঞ্জ ব্র্যাক অফিস, গাইবান্ধা, পলাশবাড়ী উপজেলা পোস্ট অফিস এবং শিল্পী রেস্তোরাঁ থেকে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর পর্যন্ত, পলাশবাড়ী, গাইবান্ধা, পীরগঞ্জ উপজেলা বাসস্টপেজ থেকে সাসেক প্রকল্পের নির্মাণাধীন আন্ডারপাসের উত্তর প্রান্ত পর্যন্ত, বিশমাইল, পীরগঞ্জ, রংপুর, বড়দরগাহ আন্ডারপাস, পীরগঞ্জ, রংপুর, শঠিবাড়ী আন্ডারপাস ও শঠিবাড়ী বাজার এবং বাসস্টপেজ এলাকা, মিঠাপুকুর ও রংপুর।
ঢাকা-সিলেটে ভয় ৪১ এলাকায়
ঢাকা সিলেট মহাসড়কের ৪১ এলাকায় যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এলাকাগুলো হচ্ছে কাঁচপুর মোড় ও পশ্চিম ঢাল, যাত্রামুড়া ব্রিজ, তারাব বাসস্ট্যান্ড, বরাব বাসস্ট্যান্ড, সুলতানা কামাল ব্রিজ, রূপসী বাসস্ট্যান্ড, বরপা বাসস্ট্যান্ড, পাকিস্তানি (এসিএস) গার্মেন্ট, রবিন টেক্স গার্মেন্ট, ভুলতা মোড়, গোলাকান্দাইল মোড়, বান্টি বাজার, পাঁচরুখি, হুনপাড়া, পুরিন্দা বাজার, মাধবদী বাসস্ট্যান্ড, শেখের চর (বাবুরহাট), পাঁচদোনা, সাহেপ্রতাব ও ভেলানগর, ইটাখোলা মোড়, মরজাল বাজার, বারৈচা বাজার, নারায়ণপুর বাজার, দুর্জয় মোড় বাসস্ট্যান্ড (পৌরসভা এলাকা), আশুগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড, সোহাগপুর বাসস্ট্যান্ড, বগইর বাসস্ট্যান্ড, বেড়তলা বাসস্ট্যান্ড, বিশ্বরোড গোলচত্বর, নন্দনপুর বাসস্ট্যান্ড, সুহিলপুর বাসস্ট্যান্ড, বাড়িউরা বাসস্ট্যান্ড, শাহবাজপুর বাসস্ট্যান্ড, চান্দুরা বাসস্ট্যান্ড, ইসলামপুর বাসস্ট্যান্ড, সাতবর্গ বাসস্ট্যান্ড, মাধবপুর বাজার, অলিপুর বাজার, শায়েস্তাগঞ্জ গোলচত্বর, রুস্তমপুর টোলপ্লাজা, শেরপুর টোলপ্লাজা ও গোয়ালাবাজার।
এদিকে ঢাকা-আরিচা সড়কের আমিনবাজার, উলাইল বাসস্ট্যান্ড, সাভার থানা স্ট্যান্ড, সাভার বাসস্ট্যান্ড, সিঅ্যান্ডবি মোড়, নবীনগর বাসস্ট্যান্ড, নয়ারহাট বাসস্ট্যান্ড ও কালামপুর এই ৮টি এলাকাকে যানজটপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কেও ছয়টি এলাকা ঘিরেও রয়েছে যানজটের আশঙ্কা। ভবানীপুর বাজার বাসস্ট্যান্ড, হোতাপাড়া বাসস্ট্যান্ড, বাঘের বাজার বাসস্ট্যান্ড, মাস্টারবাড়ি বাজার, সিড স্টোর বাজার, ভালুকা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এবার যানজট হওয়ার আশঙ্কা করছে পুলিশ।
নৌপথে বন্ধ থাকবে বাল্কহেড-স্পিডবোট
ঈদযাত্রায় নৌপথেও রয়েছে নানা শঙ্কা। অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে। এসব ঝুঁকি মোকাবিলায় নানা পদক্ষেপ নিয়েছে নৌ-পুলিশ। এর মধ্যে রয়েছে ঈদের দিন ও আগে-পরে পাঁচ দিন করে মোট ১১ দিন বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা, লঞ্চ নৌযানে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা থেকে বিরত থাকা, ছোট ও ত্রুটিপূর্ণ লঞ্চে যাত্রী পরিবহনে বিরত থাকা, লঞ্চে যাত্রীসংখ্যার আনুপাতিক হারে লাইফ জ্যাকেট, বয়া প্রভৃতির ব্যবস্থা রাখা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস জেনে নৌযান চালানো, সূর্যাস্তের পর বালুবাহী বাল্কহেড ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখা, ঈদ পূর্ববর্তী পাঁচ দিন, চাঁদাবাজি, চুরিসহ যেকোনো হয়রানি বন্ধে বিশেষ নজরদারি, নৌযান চলাচলের পথে মাছ শিকারের জন্য জাল প্রতিরোধ করা, কাগজপত্রবিহীন কোনো নৌযান না চালানো, ন্যায্যমূল্যে ভাড়া আদায়ে তদারকি, টার্মিনাল ব্যতীত নদীর যেকোনো জায়গায় অন্য কোনো ছোট নৌযান থেকে যাত্রী উঠানো বা নামানো বন্ধ নিশ্চিতকরণ ও সব নৌযানে পর্যাপ্ত ফায়ার ফাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা।
নৌ-পুলিশ প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি মোহা. আবদুল আলীম মাহমুদ রাজধানীর পুলিশ প্লাজায় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নৌপথের আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে মতবিনিময় সভায় বলেন, নৌপথ ব্যবহারকারীদের যাত্রা সহজ ও নিরাপদ করতে নৌ-পুলিশ আগামী ৩ এপ্রিল থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে। ঘরমুখো মানুষের নৌপথে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন রাখতে সব নৌযানের চলাচলের বিষয়ে নৌ-পুলিশের বিশেষ নজরদারি থাকবে।
রেলেও শঙ্কা কাটছে না
রেলপথের যাত্রীরা রয়েছে শিডিউল বিপর্যয়ের আশঙ্কায়। তবে রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রত্যেকটি আসনের বিপরীতে আসনভিত্তিক টিকিট বিক্রি করা হয়। তবে যাত্রার দিন অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনে ২৫ শতাংশ সিটবিহীন টিকিট বিক্রি করা হয়। এবার ঈদযাত্রায় ৩ থেকে ৯ এপ্রিল এবং ১৩ থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত বিশেষ ব্যবস্থায় ট্রেন চলবে।
এসব ট্রেনের ৩৩ হাজার ৫০০ টিকিটের বিপরীতে প্রতিদিন কয়েক মিনিটের মধ্যে লাখ লাখ মানুষ টিকিট কাটতে অনলাইনে হিট করছে। বিনা টিকিটের যাত্রী ঠেকাতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। নানা কারণে ঈদযাত্রায় যাত্রী নিয়ন্ত্রণে রেলের হিমশিম অবস্থা দাঁড়িয়েছে।
রেলওয়ে মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সরদার সাহাদাত আলী জানান, সীমিত আসন থাকায় সবাইকে টিকিট দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে শুধু যাত্রার দিন অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনে ২৫ শতাংশ সিটবিহীন টিকিট বিক্রি করা হবে। যাত্রীসেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা এবারও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি।
ছুটি বাড়ানোর প্রস্তাব যাত্রী কল্যাণ সমিতির
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এবারের ঈদে রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ থেকে এক কোটি ৬০ লাখ মানুষ সড়কপথে বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করবে। বিপুল সংখ্যক যাত্রীর কারণে ৭১৪টি স্থানে যানজট হতে পারে। যার মধ্যে ১৪০টি স্থানে কঠোর নজরদারি দরকার। ১০টি জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের ২১৮টি স্পট যানজট ও দুর্ঘটনার জন্য অতিঝুঁকিপূর্ণ। এসব এলাকাতেই ৬০ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে। যানজট নিয়ন্ত্রণে রাস্তার মোড় পরিষ্কার রাখা, রিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক যাতে মহাসড়কে প্রবেশ করতে না পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া যানজট নিয়ন্ত্রণে ৮ ও ৯ এপ্রিল ঈদের ছুটিতে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেন।