ফারুক আহমাদ আরিফ
প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:২৭ পিএম
আপডেট : ০৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:২৯ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
দুপুর পৌনে দুইটা। খাঁ খাঁ রোদে পুড়ছে চারপাশ। বইছে গরম বাতাস। গা যেন পুড়ে যাচ্ছে সেই বাতাস লেগে। প্রকৃতির এই তীব্র রোদ ও আগুন-বাতাস থেকে রক্ষা পেতে আমগাছের ছায়ায় দাঁড়িয়েছিলেন রিকশাচালক জয়নাল আবেদীন (ছদ্মনাম)। বুধবার (৩ এপ্রিল) রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় কথা হয় তার সঙ্গে। প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘খুবই গরম কয়েক দিন ধরে। দিনে রিকশা নিয়ে বেরোলে শরীর যেন জ্বলেপুড়ে যায়। কাজ করতে গেলে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তারপরও বের হয়েছি রিকশা নিয়ে।’
ফার্মগেটেই চলমান লেগুনায় কথা হয় সুমাইয়া আক্তার মিমের (ছদ্মনাম) সঙ্গে। রাজধানীর একটি ডেন্টাল হাসপাতালে চাকরি করেন তিনি। গতকাল তিনি নিউমার্কেট থেকে কেনাকাটা করে বাসায় ফিরছিলেন। তিনি বললেন, ‘বাইরে বেরোলে মনে হয়, শরীরে কেউ যেন আগুন দিয়ে ছ্যাঁকা দিচ্ছে।’
শুধু জয়নাল ও মিম নন, প্রত্যেকেরই এখন একই দশা। গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষসহ প্রাণিকুল। ঘরে-বাইরে কোথাও শান্তি নেই। অস্বস্তি লাগছে বৈদ্যুতিক পাখার বাতাসেও। গরমে মানুষের মধ্যে এ অবস্থা কেন অনুভূত হচ্ছে, জানতে চাইলে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা বলেন, ‘এখন চৈত্র মাসের শেষের দিক বা এপ্রিল মাস শুরু। এপ্রিল আমাদের অঞ্চলের সবচেয়ে উষ্ণতম মাস। এখন আর্দ্রতা কম থাকায় বাতাসেও অস্বস্তি লাগে। মানুষের শরীরে গরম বেশি লাগে। এমন গরমে শরীর থেকে তেমন একটা ঘামও বের হয় না। এতে অস্বস্তি আরও বেশি অনুভূত হয়।’
মার্চে গত বছরের চেয়ে তাপমাত্রা বেশি পাঁচ বিভাগে
গত বছরের মার্চের তুলনায় চলতি বছরের মার্চে দেশের ৫টি বিভাগে তাপমাত্রা বেশি ছিল। এর মধ্যে ঢাকায় বেশি ছিল শূন্য দশমিক ৯ ডিগ্রি, চট্টগ্রামে ২ দশমিক ৭, রাজশাহীতে শূন্য দশমিক ৬, বরিশালে শূন্য দশমিক ৩ এবং রংপুরে ২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কয়েকটি বিভাগে তাপমাত্রা এমনকি ২০২২ সালের চেয়েও বেশি ছিল। এর মধ্যে চট্টগ্রামে ২ দশমিক ৭, রংপুরে শূন্য দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
যা বলছেন আবহাওয়াবিদরা
আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশীদ বলেন, ১ এপ্রিল থেকে দেশের বিভিন্ন বিভাগে হঠাৎ করে তাপমাত্রা ৪-৫ ডিগ্রি বেড়ে গেছে। তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি হলে সেটিকে আমরা মৃদু তাপপ্রবাহ বলে থাকি। মার্চ মাসে তুলনামূলকভাবে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা কম ছিল। যখন বাতাস ঘুরে যায় অর্থাৎ উত্তর, উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণের বাতাস শুরু হয়, তখন তাপপ্রবাহ বেড়ে যায়। যা মানুষকে অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। এপ্রিলে এখন পর্যন্ত গড় তাপমাত্রা ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে ১ এপ্রিল থেকে কয়েকটি বিভাগে তাপপ্রবাহ বইছে। এটি অব্যাহত থাকবে। আপতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। গত বছর তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি উঠেছিল। এবার হয়তো সে মাত্রায় উঠবে না। কারণ এল নিনোর প্রভাব কমে এসেছে।
এ সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের ডিন ও ডিপার্টমেন্ট অব ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলেন্সের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘চৈত্র-বৈশাখ মাসে (এপ্রিল) আমাদের দেশে তাপমাত্রা বেশি থাকে। তবে এ বছর যে অবস্থা দেখা দিয়েছে, তার কারণ আর্দ্রতা কম থাকা। জলবায়ু পরিবর্তন তো আছেই, পর্যাপ্ত গাছপালার অভাব ও জলাধারের স্বল্পতার কারণেও এ রকম ঘটছে। তবে বর্তমানে যে অবস্থা বিরাজ করছে তা অস্বাভাবিক কিছু নয়।’
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) তথ্যমতে, তাপপ্রবাহ অনেক ধরনের ঝুঁকি বাড়ায়। এর মধ্যে রয়েছেÑ স্বাস্থ্যসম্পর্কিত ঝুঁকি। এতে মানুষের মৃত্যুহার বেড়ে যায়। আছে অর্থনৈতিক ঝুঁকিও। এতে খরা দেখা দেয়। পানির গুণমান বদলে যায়, দাবানলের কারণে ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়। বিদ্যুতের ঘাটতিতে কৃষির ক্ষতি হয়ে থাকে।
তাপপ্রবাহের ফলে ধান চাষে ক্ষতি
তাপপ্রবাহের কারণে ধান চাষে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারেÑ জানতে চাইলে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালকের দপ্তরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও এগ্রোমেট ল্যাবের সমন্বয়ক জলবায়ু বিশেষজ্ঞ নিয়াজ মো. ফারহাত রহমান বলেন, ‘বর্তমানে বোরো ধান যে পর্যায়ে আছে, তাতে পানির প্রয়োজন। বোরো সেচনির্ভর হলেও বৃষ্টি হলে সেচ কম লাগে। তা ছাড়া হাওরাঞ্চলে সেচের ব্যবস্থা নেই। কয়েক দিন আগে সিলেট অঞ্চলে যে বৃষ্টি এবং শিলাবৃষ্টি হয়েছে, তাতে উপকারই হয়েছে ধানের ক্ষেতের। কারণ অল্প কিছু ধানের ক্ষতি হলেও জমি যে পানি পেয়েছে তাতে উৎপাদন ভালো হবে।’
প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এই জলবায়ু বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘সাধারণভাবে ধানের উৎপাদনের জন্য ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি তাপমাত্রা ভালো।’ এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানাচ্ছে, ‘সামনে তাপপ্রবাহ বাড়বে, যা ধান চাষের জন্য নেতিবাচক খবর। কেননা ধানগাছ ৩৫ ডিগ্রি বা তার বেশি তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে না। বিশেষ করে ফুল থাকার সময় তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রির ওপরে হলে ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ধান চিটা হয়ে যাবে।’
প্রভাব পড়বে দুধ উৎপাদনে
তাপপ্রবাহ হলে পশু পালনের ক্ষেত্রে সৃষ্ট সমস্যা সম্পর্কে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা ও কৃত্রিম প্রজনন বিভাগের প্রধান ড. মো. সফিকুর রহমান বলেন, ‘তাপপ্রবাহ খামারে আমদানি করা গরুর জন্য, বিশেষ করে ফ্রিজিয়ান, জার্সি ও অন্যান্য জাতের গরুর জন্য বেশ ক্ষতিকর। তবে আমাদের দেশীয় পাঁচ জাতের গরুর (রেড চট্টগ্রাম ক্যাটল, মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম, পাবনার শাহীওয়াল ক্যাটল, নর্থ বেঙ্গল গ্রে ও নেত্রকোণা অঞ্চলের হিল ব্ল্যাক) তাপপ্রবাহ সহ্য করার ক্ষমতা বেশি।
তাপমাত্রা বেড়ে গেলে ‘হিট স্ট্রেস’ বলা হয়। যাতে গরু সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায়। এ সময় তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা বেড়ে যায়। হিট স্ট্রেস মাপতে বিজ্ঞানীরা টেম্পারেচার হিউমিডিটি ইনডেস্ক বা টিএইচআই ভ্যালু বের করেছেন। তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি ও আর্দ্রতা ৮০ শতাংশ হলে টিএইচআই হয় ৭৫। টিএইচআই ভ্যালু ৭২ বা ৭৫-এর নিচে থাকলে গরু আরাম পায়। ৭২ থেকে ৭৮ টিএইচআই ভ্যালু হলে সামান্য ধকল শুরু হয়। ৭৮ থেকে ৮৯ হলে ‘মারাত্মক স্ট্রেস’ বলা হয়। টিএইচআই ভ্যালু ৮৯ থেকে ৯৮ হলে ‘অতিমাত্রায় মারাত্মক স্ট্রেস’ বলা হয়। আর টিএইচআই ভ্যালু ৯৯-এর ওপরে উঠলে গরু মারা যায়। এভাবে এগুলোকে ৫টি জোনে ভাগ করা হয়Ñ ৭২-এর নিচে এ গ্রেড, ৭২-৭৮ বি, ৭৮-৮৯ সি, ৮৯-৯৮ ডি এবং ৯৯-এর ওপরে ই গ্রেড।
বি জোনে থাকলে তাপমাত্রা বাড়লে গরুগুলো ছায়াযুক্ত স্থান খোঁজে। এ সময় এগুলোর শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। যদিও দুধ উৎপাদন কমে না। কিন্তু এই অবস্থা এক থেকে ছয় মাস অব্যাহত থাকলে এদের প্রজনন ক্ষমতা কমে যায়। ১০টি বাছুরের প্রজননক্ষম গরু হয়তো দুটির বেশি আর জন্ম দিতে পারবে না। সি জোনের টিএইচআই ভ্যালুতে গরুর মুখ দিয়ে ফেনা ঝরতে থাকবে। খুব দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার প্রবণতা বাড়বে, খাদ্যগ্রহণ কমে যাবে এবং পানিগ্রহণের মাত্রা বেড়ে যাবে। ডি জোনে গরুর অস্থিরতা বাড়বে, দুধের উৎপাদন ও বাচ্চা দেওয়ার ক্ষমতা মারাত্মকভাবে কমে যাবে। আর ই জোনে থাকলে গরু মারা যাবে।
এর প্রতিকার সম্পর্কে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘গরুর ঘরের চারদিকে কোনো দেয়াল দেওয়া যাবে না। যার ফলে বাতাস যাতায়াত করতে পারবে। চালটা উঁচু করে তৈরি করতে হবে। টিএইচআই বেশি হলে ঠাণ্ডা পানি পান করাতে হবে। ফ্লোর পাকা করা যাবে না। আর পাকা করলেও একটি অংশ বালু দিয়ে কাঁচা রাখতে হবে। কেননা গরু বালুতে সবচেয়ে বেশি আরাম পেয়ে থাকে।’
এপ্রিলেও কম হবে বৃষ্টিপাত
গত বছরের চেয়ে গেল মার্চে বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। চলতি এপ্রিল মাসেও বৃষ্টিপাত কম হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এপ্রিল মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে এ কথা জানানো হয়। গত বছরের চেয়ে এ বছরের মার্চ মাসে ঢাকায় কম বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৯ মিলিমিটার, ময়মনসিংহে ৪৯, সিলেটে ৯১, রাজশাহীতে ৩, রংপুরে ৬, খুলনায় ৬২ এবং বরিশালে ১৪ মিলিমিটার। চলতি বছর মার্চে ঢাকায় গড় বৃষ্টিপাত ছিল ৫৫ মিলিমিটার, ময়মনসিংহে ৫৩, চট্টগ্রামে ৪৩, সিলেটে ১১২, রাজশাহীতে ২২, রংপুরে ৫৭, খুলনায় ৩২ এবং বরিশালে ২৭ মিলিমিটার। ২০২৩ সালের মার্চে ঢাকায় ৭৪, ময়মনসিংহে ১০২, চট্টগ্রামে ২৯, সিলেটে ২০৩, রাজশাহীতে ২৫, রংপুরে ৫১, খুলনায় ৯৪ এবং বরিশালে ৪১ মিলিমিটার। তবে ২০২২ সালের মার্চ মাসে শুধু ঢাকায় ১৪ ও সিলেটে ৭৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। বাকি কোনো বিভাগে বৃষ্টিপাত হয়নি।
সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত সিলেটে
দেশে মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয়। এতে মানুষের প্রাণহানিও ঘটে। দেশে বজ্রপাত সবচেয়ে বেশি হয় সিলেট বিভাগে। চলতি বছরের মার্চে সারা দেশে কিংবা সিলেটে কতগুলো বজ্রপাত হয়েছে, তার পূর্ণাঙ্গ হিসাব এখনও পাওয়া যায়নি। আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে, ২০২২ সালের মার্চে সিলেটে তিনটি বজ্রপাত হয়েছে। তা ছাড়া এপ্রিল ও মে মাসে ৮ বিভাগে ৩৬১টি বজ্রপাত হয়েছে। এর মধ্যে সিলেটে হয়েছে ১১১টি। তেমনিভাবে ২০২৩ সালে মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে ৮টি বিভাগে মোট ৪০৬টি বজ্রপাত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয়েছে সিলেট বিভাগে। সেখানে মোট ১১০টি বজ্রপাত হয়।
এ ব্যাপারে আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসকে প্রি-মনসুন বা প্রাক-বর্ষাকাল বলা হয়। এ সময়ে দেশের আকাশে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত সৃষ্টি হয়, যা অনেক সময় প্রতিবেশী দেশে তৈরি হয়ে আমাদের দেশে আসে। কখনও দেশের সীমানাতেই সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, ‘আকাশে বিদ্যুৎ চমকানো দেখার পর যদি ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে শব্দ শোনা যায় তাহলে বুঝতে হবে বজ্রপাতটি সেই ব্যক্তির আশপাশের স্থানের দিকে আসছে। এ ক্ষেত্রে কোনো বড় গাছের নিচে যাওয়া যাবে না, কোনো তার ধরে রাখা যাবে না।’
সিলেট অঞ্চলে এত বেশি বজ্রপাতের কারণ সম্পর্কে সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্ট্রম অ্যাওয়ারনেস ফোরামের সভাপতি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, ‘যে অঞ্চলে হাওর বেশি সেখানে বজ্রপাত বেশি হয়। তাতে মৃত্যুও বেশি হয়ে থাকে। যেখানে বড় গাছ নেই, ফাঁকা প্রান্তর, সেখানে বেশি বজ্রপাত ও হতাহতের সংখ্যা বেশি। এসব স্থানের মাঠে কর্মরত মানুষদের পায়ে স্যান্ডেল না থাকায় ম্যাগনেটিক ফিল্ড তাদের ওপর তৈরি হয়। আর গাছ থাকলে গাছের ওপর তৈরি হয়।’
এর প্রতিকার সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘দ্রুত বর্ধনশীল বৃক্ষ হাওরের রাস্তার পাশে রোপণ করতে হবে। মাল্টিপারপাস শেল্টার সেন্টার ও তার ওপর লাইটনিং অ্যারেস্টার স্থাপন করতে হবে। এতে করে কৃষকরা সংকেত পেয়ে এসব সেন্টারে এসে আশ্রয় নিতে পারবেন।’
অতি তীব্র তাপ প্রবাহ নিয়ে ব্রি’র বিশেষ বুলেটিন
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসকে অবলম্বন করে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) বুধবার রাত ৯টায় বিশেষ বুলেটিন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, ৩ থেকে ৯ এপ্রিল সারা দেশের বেশিরভাগ এলাকায় বিশেষ করে ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের জেলাগুলোয় মাঝারি থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বিরাজ করতে পারে। এর মধ্যে অতি তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলো হলোÑ রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, কুষ্টিয়া, জয়পুরহাট, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, ঝিনাইদহ, ফরিদপুর, নড়াইল, যশোর, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট ও গোপালগঞ্জ।
এ অবস্থায় ধানের জন্য বেশকিছু পরামর্শও দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বলা হয়েছেÑ ধান কাইচ থোড় থেকে শক্ত দানা অবস্থায় থাকলে জমিতে ৫ থেকে ৭ সেন্টিমিটার পানি ধরে রাখতে হবে। এ সময় কোনোভাবেই জমিতে পানির ঘাটতি করা যাবে না; পানি ঘাটতি হলে শীষে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ হতে পারে। রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার আগেই প্রতিকার হিসেবে বিকালে ৮ গ্রাম ট্রুপার ১০ লিটার পানি অথবা ৬ গ্রাম নেটিভো ১০ লিটার পানি ৫ শতাংশ জমিতে ৫ দিনের ব্যবধানে দুবার স্প্রে করতে হবে। ধানে বিএলবি ও বিএলএস রোগ ব্যাপকভাবে দেখা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে ৬০ গ্রাম থিওভিট, ৬০ গ্রাম পটাশ ও ২০ গ্রাম জিংক ১০ লিটার পানিতে সমভাবে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে।