প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:২৮ পিএম
আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:০৭ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
চৈত্রের পর বৈশাখ মাসেও মৃদু, মাঝারি ও তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত আছে। সাধারণত বৈশাখে কালবৈশাখী ঝড় হয়। তবে এ বছর প্রায় পুরোটায় উল্টো আবহাওয়া বিরাজ করছে।
রবিবার (১৪ এপ্রিল) দেশে শুরু হয়েছে বাংলা নববর্ষ। এদিন দেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও রংপুরসহ বিভাগের ৫৬ জেলায় তাপপ্রবাহ ছিল। রবিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় রাঙামাটিতে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা তীব্র তাপপ্রবাহ। সেই তাপপ্রবাহ সোমবারও অব্যাহত আছে।
কোন কোন জেলায় বইছে তাপপ্রবাহ
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলামের দেওয়া সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলার মধ্যে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারিপুর, শরিয়তপুর, গোপালগঞ্জ ও রাজবাড়ী জেলা। চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলার মধ্যে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলা। রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলার রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলা। খুলনা বিভাগের ১০ জেলার মধ্যে যশোর, সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, নড়াইল, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মাগুরা, খুলনা জেলা। বরিশাল বিভাগের ৮ জেলার মধ্যে বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর জেলা। সিলেট বিভাগের ৪ জেলার মধ্যে সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলা এবং রংপুর বিভাগের ৮ জেলার মধ্যে শুধু রংপুর ও নীলফামারী জেলায় বয়ে যাওয়া মৃদু, মাঝারি ও তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
৭ বিভাগে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
রবিবার ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টাঙ্গাইলে ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি, রাজশাহী বিভাগের পাবনার ঈশ্বরদীতে ৩৯ ডিগ্রি, রংপুর বিভাগের দিনাজপুরের সৈয়দপুরে ৩৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি, সিলেটের সুনামগঞ্জের শ্রীমঙ্গলে ৩৭ ডিগ্রি, চট্টগ্রামের রাঙামাটিতে ৪০ ডিগ্রি, খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গায় ৩৮ দশমিক ৮ ও বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এ বছর পহেলা বৈশাখে হয়নি ঝড় ও বৃষ্টিপাত
দেশে সাধারণত বৈশাখের প্রথম দিন কালবৈশাখী ঝড় হয়। ঝড়ের সঙ্গে থাকে বৃষ্টিও। তবে এ বছর পহেলা বৈশাখে দেশের কোথাও বৃষ্টিপাত হয়নি। তা ছাড়া দেশের কোথাও ঝড়ও হয়নি।
এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ২০১৯ থেকে চলতি ২০২৪ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৬ বছরের মধ্যে ৩ বছর পহেলা বৈশাখে ঝড় ও বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাকি ৩ বছর ঝড়ও হয়নি সেইসঙ্গে বৃষ্টিও হয়নি। ২০১৯, ২০২১ ও ২০২২ সালে পহেলা বৈশাখে ঝড় ও বৃষ্টিপাত হয়েছিল। ২০২০, ২০২৩ ও চলতি ২০২৪ সালে ঝড়-বৃষ্টি কিছুই হয়নি। মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে আমাদের দেশে ঝড় ও বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। তা ছাড়া মূল বর্ষা মৌসুম জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ বছর তাপমাত্রা বেশি থাকবে।
সিনপটিক অবস্থা
পশ্চিমা লঘুচাপের বাড়তি অংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তার কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
মঙ্গলবার বৃষ্টিপাতের আভাস
এদিকে আবহাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামীকাল মঙ্গলবার রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা, ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিও হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্য স্থানে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তবে তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে।
তা ছাড়া আগামী বুধবার বৃষ্টিপাতের পরিধি বাড়বে। সেক্ষেত্রে রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা, ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিও হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্য স্থানে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তবে তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে।
এদিকে ১৮ থেকে ২২ এপ্রিলের মধ্যে তাপমাত্রা বাড়তে পারে বলেও জানানো হয়েছে।