× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

রাষ্ট্র, মানুষ, স্বপ্ন

রাষ্ট্র, মানুষ, স্বপ্ন

প্রকাশ : ০৯ জানুয়ারি ২০২৩ ২৩:০৯ পিএম

আপডেট : ১৩ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:৪১ পিএম

রাষ্ট্র, মানুষ, স্বপ্ন

একটি রাষ্ট্রের মূল চরিত্র হলো মানুষ। মানুষের চিন্তার ফল একত্র হয়ে রাষ্ট্রের ভালো-মন্দ, উন্নয়ন-সুখ-সৃজনশীলতার একটা আবহ তৈরি করে। তা নিয়ে আমরা একটা মানদণ্ড দাঁড় করানোর চেষ্টা করি। প্রগতি, জনবান্ধব সরকার, জীবনমানের সূচক, সৃজনশীলতা, জননিরাপত্তা- এসব বিষয় মানদণ্ডের নিয়ামক হিসেবে চলে আসে। বাংলাদেশ স্বাধীন হয় ১৯৭১ সালে। বেলুন চেপে ধরলে যে বিস্ফোরণটা ঘটে, বাংলাদেশের মানুষও সেই বিস্ফোরণটা ঘটাল। এত শোষণ, এত নিপীড়ন-নির্যাতনের পর এমনটাই হওয়ার কথা। এর সঙ্গে আমাদের বিশেষ সৌভাগ্য হলো- বঙ্গবন্ধু। তাঁর মতো একজন দূরদর্শী স্বপ্নদ্রষ্টা থাকায় আমাদের স্বাধীনতাপ্রাপ্তি সহজ হয়ে গেল। তাঁর সাহস এবং নেতৃত্বগুণ একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম দেওয়ার পথ তৈরি করল।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্পৃহাকে বিজয়ের দিকে নিয়ে যেতে অনেক সৃজনশীল মানুষও বড় ভূমিকা রেখেছেন। যেখানে বঙ্গবন্ধু শীর্ষ চূড়া, সেখানে আরও অনেকে নিজ নিজ জায়গা থেকে ভূমিকাটুকু পালন করেছেন। এভাবে দেখা যায় যুগে যুগে আপামর মানুষকে স্বপ্ন দেখানোর জন্য কিছু মানুষ থাকেন। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ছবি এঁকে একটি দৃশ্যময় আবহমান বাংলাকে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। লালন লোকমানসে এক বিপুল দার্শনিক প্রতিবিম্ব স্থাপন করেছেন আমাদের সামনে। রবীন্দ্রনাথ বিস্তৃত আমাদের জীবনযাত্রা-চিন্তার প্রায় সব ক্ষেত্রে। এভাবে কিছু মানুষ একটি রাষ্ট্রের, একটি জাতির স্বপ্নের স্তম্ভ তৈরি করে দেয়। 

স্বাধীন হওয়ার পর দেশ গঠনের একটা চ্যালেঞ্জ রাষ্ট্রের সামনে ছিল। সবকিছু ধ্বংসপ্রাপ্তপ্রায়, রক্ত-অগণন মৃত্যুর ভার নিয়ে রাষ্ট্রটি বিজয়ের নিশান ওড়াল। বঙ্গবন্ধু ফিরে এসে সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিটি খাতকে নতুনভাবে নির্মাণের কাজে লেগে গেলেন। কৃষকের জন্য কৃষিযন্ত্র, সারে ঋণের ব্যবস্থা যেমন করলেন, তেমনই ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ, শিক্ষা, শিল্প-স্থাপত্য-সংগীত প্রতিটি খাতকেই প্রাণ দিতে নেমে গেলেন। আমরা দেখলাম জয়নুল আবেদিনকে ডেকে দায়িত্ব দিচ্ছেন চারুকলার, স্থপতি মাযহারুল ইসলামকে বলছেন, বাংলাদেশের স্থাপত্যের একটি মান যেন দাঁড়াতে পারে। এভাবে তিনি দেশ গঠনের অধিনায়ক হিসেবে ভূমিকাটুকু নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে যেতে লাগলেন। আর আমরা দেখতে পেলাম, একঝাঁক প্রতিভাবান-কর্মবীর নবীন বাংলাদেশকে নানাভাবে পূর্ণতা দিতে শুরু করেছে। 

স্বাধীনতার পঞ্চাশ পেরোনো বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এক বিরাট সম্ভাবনার প্রতিভূ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে দেখা যাচ্ছে যাঁর হাত দিয়ে বাংলাদেশের জন্ম হলো, তাঁরই সুযোগ্য কন্যা স্বপ্নদ্রষ্টার ভূমিকাটুকু পালন করছেন। বিপুল-বিক্রমে ক্যানভাসে আঁকছেন এক সমৃদ্ধ বাংলাদেশের রূপরেখা। স্বাধীনতার পঞ্চাশ পেরোনো বাংলাদেশ দেখল- পদ্মা নদী যে ভূমিকে দুই ভাগ করে রেখেছিল তা জোড়া লেগে গেছে। নদীর ওপর সর্পিল এক সেতু উত্তর-দক্ষিণ একাকার করে দিয়েছে। পদ্মা সেতু যে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির বড় প্রতীক হয়ে উঠবে, তা অর্থনীতিবিদরা আগেই বলছিলেন। আর এখন সেতু নির্মাণের ছয় মাস পেরোনোর পর ফলাফল স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এ সেতু দক্ষিণের সঙ্গে সংযোগ ঘটায়, সে অঞ্চলের কৃষক, পণ্য উৎপাদক থেকে শুরু করে অন্য সব মানুষ এ উপকার পেতে শুরু করেছে। এরপর আছে শত বছরের ডেল্টা প্ল্যান। যে বাংলাদেশ এলোমেলো পরিকল্পনার ভেতর দিয়ে এগোচ্ছিল-সে দেশ একশ বছরের একটি পরিকল্পনা করেছে, যেখানে এই বদ্বীপের শত বছরের স্বপ্নযাত্রার রূপরেখা রয়েছে। নগরের ক্ষেত্রে পরিবর্তন ঘটছে। সর্বশেষ ঢাকার বুকে মেট্রোরেল নগরবাসীকে নতুন স্বপ্নের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। 

আবার ফিরে আসা যাক মূল প্রসঙ্গে। একটি রাষ্ট্রের মানুষই তার প্রাণভোমরা। এই মানুষ প্রতিনিয়ত তার উত্তরসূরি, তার পাশের মানুষ, তার সুহৃদের মঙ্গলচিন্তায় মগ্ন। সে মঙ্গলচিন্তা তাকে নানা সৃজনশীলতা দেয়। এই যেমন এক ভাবুক কৃষক হরিপদ তার উত্তরসূরির জন্য রেখে গেছেন আধুনিক ফসলের বীজ। জহির রায়হান একটি বাংলাদেশ বিনির্মাণের সময়টুকু ধরার জন্য, তা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার জন্য প্রাণ বাজি রেখে কাজ করেছেন। এখানে একটা-দুটা প্রসঙ্গ টানা হলেও দৃষ্টি ফেললে দেখা যাবে- কত শত স্বপ্নদ্রষ্টা কী বিপুল মগ্নতায় তার কাজটুকু করে যাচ্ছেন। যে কাজটুকু আবার হয়ে উঠছে একটি জাতির মঙ্গলবার্তা, মঙ্গলকর্ম। এভাবে স্বপ্ন-সম্ভাবনায় ভবিষ্যতের বীজ রোপিত হতে থাকে মানুষের ভেতর দিয়ে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা