× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সময়ের সেরা তানভীর

রাসেল টি আহমেদ

প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৩ ০০:২৭ এএম

আপডেট : ১৩ জানুয়ারি ২০২৩ ২০:২৯ পিএম

সময়ের সেরা তানভীর

মাত্র চার বছরেরও কম সময়ের প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’। অথচ এরই মধ্যে প্রায় ৭শ কর্মদক্ষ মানুষকে জড়ো করে তাদের সরাসরি নেতৃত্ব দিয়ে প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নেওয়া আমার বিবেচনায় এক মস্ত বড় গুণ। 

আসলাম, দেখলাম, জয় করলাম- এটা তো সবাই চায়। কিন্তু কয়জন পারে? যারা পেরেছে তাদের মধ্যে তানভীর এ মিশুক অন্যতম।

তানভীরের সঙ্গে আমার খুব বেশিদিনের আলাপ নয়। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই আমি তার মাঝে নতুন কিছু সৃষ্টির ক্ষুধা দেখেছি। সত্যিকার অর্থে ভেতরে যদি তাড়না না থাকে, নতুন কিছু সৃষ্টির ক্ষুধা না থাকে, তা হলে ব্যবসা কেন?- কোনো কিছুতেই সাফল্য পাওয়া সম্ভব নয়।

একদিকে তানভীরের নতুন কিছু করার চাহিদা; অন্যদিকে একাগ্রতা ও স্ব-উদ্যমী মনোভাব- এই গুণগুলো মিলেই ‘নগদ’ আজ এমন একটা অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে, তানভীর এবং তার সৃষ্টি একসঙ্গে উঠে এসেছে আজকের অবস্থানে।

তানভীরের সঙ্গে যখন প্রথমবার আলাপ হলো- ঘটনাটা এমন, আমি তাকে কল করেছি- অপর প্রান্ত থেকে সে এমনভাবে ‘রাসেল ভাই, আপনি আমাকে কল করেছেন!’ বলে কথা শুরু করল যেন আমি তার কতদিনের আপন। আমার মধ্যে অন্যরকম একটা অনুভূতি খেলা করেছে তখন। সত্যি বলতে কি, আমি রীতিমতো মুগ্ধ হয়ে গেলাম। এটাই হলো একজন সত্যিকারের নেতার বড় গুণ- মানুষকে আপন করতে পারা। তানভীরের অফিসে বারকয়েক গিয়েছি। সেখানেও আমি কাজের ক্ষেত্রে পরিবেশগত এই বিষয়টা আবিষ্কার করেছি। চারদিকে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করে।

মাত্র চার বছরেরও কম সময়ের প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’। অথচ এরই মধ্যে প্রায় ৭শ কর্মদক্ষ মানুষকে জড়ো করে তাদের সরাসরি নেতৃত্ব দিয়ে প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নেওয়া আমার বিবেচনায় এ এক মস্ত বড় গুণ। কোনো একটা কোম্পানি বড় হওয়ার ক্ষেত্রে পিপল ম্যানেজ যে কত বড় বিষয়, সেটা যারা করে তারাই জানে। আমি এখানে তানভীরের মধ্যে অসম্ভব দক্ষতার স্বাক্ষর দেখতে পাই। তা ছাড়া লাখো কোটি মানুষের জন্যে সম্ভাবনা তৈরির মাধ্যমে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে তানভীর এবং নগদ। 

এখানে আমি আরও একটা বিষয় পরিষ্কার করতে চাই। শুরু থেকেই তানভীর তো বড় প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে লড়াই করে করে নগদকে শক্ত পায়ে দাঁড় করিয়েছে। এত বড় প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে শুরু করে, এত কম সময়ে এতটা জনপ্রিয়তা পাওয়া কিন্তু চাট্টিখানিক কথা নয়। কেউ কেউ হয়তো বলবেন, ডাক বিভাগ বা সরকারকে পাশে পেয়েছে বলেই তার সাফল্য এসেছে। আমি এখানে দ্বিমত করছি। প্রথমত, তানভীরকে আগে এই সুযোগের পথটা খুঁজে বের করতে হয়েছে যে সরকারের সঙ্গে মিলে এই সেবাধর্মী ব্যবসা করা সম্ভব। দ্বিতীয়ত, তানভীর কেবল কাজ করার সুযোগটাই পেয়েছেন। কিন্তু কাজ করে তবেই তো তাকে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করতে হয়েছে। পার্টনারশিপটাকে চালিয়ে নেওয়া, কোটি কোটি গ্রাহকের আস্থা অর্জন- এসব কিন্তু তার নেতৃত্বেই হয়েছে। সরকার বা বাইরের কেউ এসে এসব করে দেয়নি। তা ছাড়া শুরুর থেকেই বিভিন্ন ঝামেলা মোকাবিলা করেই নগদকে এগোতে হয়েছে। দক্ষ হাতে এতসব নিয়ন্ত্রণ করে এগিয়ে যাওয়া কেবল অসম্ভব গুণাবলির অধিকারী মানুষের পক্ষেই সম্ভব।

আমি যদি মার্কেটে অন্যদের সঙ্গে তুলনা করি সে ক্ষেত্রে দেখব, তানভীরের হয়তো তেমন প্রমাণিত ব্যাকগ্রাউন্ড নিয়ে ফিনটেক ব্যবসায় নামেনি। কিন্তু তারপরও নিজের কাজে যে দক্ষতার ছাপ তিনি রেখেছেন, সেটি অনেক বড় বড় ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ছাপিয়ে গেছে। নতুন কিছু করার ক্ষেত্রে তার যে ক্ষুধা, সেটির কারণেও এটি হয়ে থাকতে পারে। তা ছাড়া নতুন সম্পর্ক তৈরি এবং কৌশলগত ব্যবস্থাপনায় তিনি এতটাই দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন যে অনেক কিছু এখানে ছাপিয়ে যায়। স্টেকহোল্ডার রিলেশনে আমি তাকে ১০০ থেকে ১০০ দেব। আর লক্ষ্য অর্জনের যে তীব্র আকাঙ্ক্ষা- সেখানে ১০০তে ২০০ নম্বর দিতে চাই।

নগদকে যেভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তাতে কারও মধ্যেই এ বিষয়ে আর সন্দেহের সুযোগ নেই যে, তানভীরের গড়া এই প্রতিষ্ঠানটি এখন একটি জায়ান্ট। মাত্র সাড়ে তিন-চার বছরের মধ্যে সাত কোটি গ্রাহককে নিবন্ধন করানোটাও তো বিশাল এক কর্মযজ্ঞের ফসল। এ ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন অবশ্যই বড় সহায়তা ভূমিকা রেখেছে। দেশের প্রথম ইলেকট্রনিক কেওয়াইসি চালু বা মোবাইল ফোনের কয়েকটা বাটন (*১৬৭#) ডায়াল করে অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতির উদ্ভাবন নগদকে আসলে অনেকটা পথ এগিয়ে দিয়েছে। ফিনটেক বিশ্বেও এসব উদ্ভাবন সাড়া ফেলেছে। এখানে এটাও বলতে হয় যে, কেবল তরুণদের পক্ষেই প্রচলিত পদ্ধতিকে ভেঙে নতুন কিছু সৃষ্টি করা সম্ভব। আট-দশ পাতার ফর্মকে ছুড়ে ফেলে প্রযুক্তির ক্যারিশমায় অ্যাকাউন্ট খোলানোটা নতুন সৃষ্টির মাধ্যমেই সম্ভব; যেটা তানভীর করে দেখিয়েছে।

তার মধ্যে আমি আরও একটা বিষয় দেখতে পাই- যেকোনো ফোরামেই নগদ এবং নগদের অর্জনের প্রসঙ্গ নিয়ে আসা। কে কীভাবে দেখে জানি না, তবে আমি এটিকে খুবই ইতিবাচক বিবেচনা করি। নিজের ব্র্যান্ডিং যদি নিজে না করি, তা হলে কে করে দেবে সেটা? তা ছাড়া ব্যবসার প্রতি যে ওনারশিপ, সেটাও তো সবার সামনে তানভীরের দেখানোর আছে।

সব মিলে আমার কাছে তানভীর এ মিশুক নিজেই এখন একটা ব্র্যান্ড। নগদ আর তানভীর- দুটো নামই এখন বাংলাদেশে রোল মডেল। দেশের হাজার হাজার তরুণ এখন তানভীরকে অনুসরণ করে। সাফল্যের অহমিকা যেন নিজের ওপর চেপে না বসে, সেটা মাথায় রেখে এগিয়ে যেতে হবে। সামনের দিকেও তাকে পা ফেলতে হবে এটা বিবেচনায় রেখে। মনে রাখতে হবে, গোটা দেশের তরুণ সমাজ তাকিয়ে আছে তার দিকে।

সেই সঙ্গে এটাও বলে রাখা দরকার- চার বছরেরও কম সময়ের মধ্যে এত বড় একটা কোম্পানির জন্ম দিলেও তানভীরের মধ্যে আমি অহমিকা বা দম্ভ বলে কিন্তু কিছু দেখিনি। বরং অনেক ছোট ছোট বিষয়েও আমি তার মধ্যে শেখার আগ্রহ দেখতে পাই- এটা আমাকে চমৎকৃত করে। এর বাইরেও আমি তার মধ্যে আরও কয়েকটা বিশেষ গুণের দেখা পাই। যেমন খুবই সুন্দর করে কথা বলতে পারা, সবার বন্ধুত্ব অর্জন করতে পারা এবং চ্যালেঞ্জ নিতে জানা। সাফল্য পাওয়ার জন্য এই বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এর পরেও বলব, তানভীরকে আরও অনেক দূর যেতে হবে। আগেই যেটা বলেছি, নতুন কিছু সৃষ্টির ক্ষুধা- সেটা আমি তানভীরের মধ্যে আজন্ম দেখে যেতে চাই। তার মধ্যে যেন কখনও ‘সন্তুষ্টি’ ভর না করে। তানভীর যেন নগদ-এর মতো এমন আরও অনেক সফল ব্র্যান্ডের জন্ম দিতে পারে।

এতটা উচ্চতায় ওঠার পরেও তানভীরের কাছে আমার আরও চাওয়া থেকেই যায়। অমি চাই, আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে তানভীর যেন ক্যাশলেস লেনদেন বাংলাদেশে সর্বজনীন করে ফেলতে পারে। আমরা বেসিস থেকেও সেদিকে চেয়ে আছি। দেশকে ক্যাশলেস করতে আরও উদ্ভাবন দরকার। নগদ এবং তানভীরের কাছেও আমাদের প্রত্যাশা, এই খাতে তারাই নেতৃত্ব দেবে। ব্যক্তিগতভাবে আমি চাই, তানভীর ও নগদ মিলে উদাহরণ হয়ে থাকুক।

তানভীরের প্রতি আমার শেষ প্রত্যাশা হলো- জাতিগতভাবে আমরা গবেষণায় বিমুখ। ফলে আমাদের দেশে বিজ্ঞানীও কম। ফিনটেকের মাধ্যমে দেশকে ক্যাশলেস বা স্মার্ট বাংলাদেশ করতে চাইলে এমন কিছু করতে হবে যেন পরবর্তী প্রজন্ম মনে রাখে। সেটা হতে হবে গবেষণাধর্মী এবং প্রয়োজনের নিরিখে। এ ক্ষেত্রে তানভীরের কাছে আমার প্রত্যাশা, পরবর্তী প্রজন্মের জন্যে এমন কিছু একটা করুক- যা যুগের পর যুগ দেশের জন্যে ইতিবাচক ধারা তৈরি করবে। তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে ভিন্নধর্মী এই কাজগুলো তাকে আরও বড় হতে সহায়তা করবে। দেশ ও দেশের মানুষ তাকে মনে রাখবে। সুনাম বৃদ্ধি সঙ্গে সঙ্গে এটি নগদকে ও তার কাজকেও মানুষ হৃদয়ের মণিকোঠায় জায়গা দেবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা