গানের প্রতি ভালোবাসা সুমীর ছোটবেলা থেকেই। নিজের গানের প্রথম গুরু বলতে বাবা ও মা। কখনও আনুষ্ঠানিকভাবে গান শেখেননি সুমী। তবে তার একজন গুরু ছিলেন, যিনি তাকে পথ দেখাতেন। তার নাম ওস্তাদ হারুন উর রশিদ। পরিবারে নিয়মিত সংস্কৃতির চর্চা, খেলাধুলা হতো। বাবা-মা দুজনই ছিলেন সংস্কৃতির ভীষণ অনুরাগী। সে থেকেই গানের প্রতি নেশা তৈরি হয়।
সৃষ্টির পরিক্রমায় পৃথিবীতে কিছু কিছু মানুষ আসে নতুন নিয়ম গড়তে। মানুষের জন্য উদাহরণ হতে। সব বাধাকে উপেক্ষা করে পৃথিবীকে সুন্দরের সুরে সাজাতে। আমরা গর্বিত যে, আমাদেরও তেমন একজন আছেন। যিনি একাধারে গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক ও গায়িকা। তিনি তারুণ্যের আইকন, দেশে-বিদেশের তুমুল জনপ্রিয় চিরকুট ব্যান্ডের শারমীন সুলতানা সুমী। গান নিয়েই যার দর্শন, জীবনযাত্রা, স্বপ্নকথা, গাইতে গাইতেই যার বেড়ে ওঠা। এক সময় ক্যাম্পাসে বন্ধুদের আড্ডা-আসরে সুরের ঝাঁপি খুলে বসত মেয়েটি, গানই যেন তার হৃদস্পন্দন। নিজের স্বপ্ন সমমনা আরও কয়েকজনের হৃদয়ে প্রবাহিত করে তিনি গড়েছিলেন নিজের ব্যান্ড, অনেক যত্নে মানুষের বার্তা হতে নিজেই রেখেছিলেন ‘চিরকুট’ নামটি।
২০ বছর ধরে সদস্যদের নিয়ে তার অসম্ভব সাধনা, পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ে সেই সুমী নিজের ব্যান্ড নিয়ে আজ পৌঁছেছেন অনন্য এক উচ্চতায়। সেদিনের সেই চিরকুট এখন বাংলাদেশের গণমানুষের, মাঠ কাঁপানো, বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ফোক রক ব্যান্ড। গানের মধ্য দিয়ে নিরলস তারুণ্য, দেশ, সমাজ ও পরিবেশ রক্ষার আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সীমানা পেরিয়ে বিশ্বমঞ্চেও পৌঁছে দিয়েছেন বাংলা গান। গান ও বিজ্ঞাপন নিয়ে কর্মময় এই জীবনে তিনি আজ যেখানে পৌঁছেছেন, তা যেন সাফল্যকেই দিয়েছে নতুন এক সংজ্ঞা। শুধু নারীদের জন্যই নয়, বরং দেশের সব তরুণ-তরুণীর জন্যই এই মেয়েটি আজ এক অনুপ্রেরণার নাম, রোল মডেল।
শারমিন সুলতানা সুমী। বাংলাদেশের ব্যান্ড মিউজিকে যারা একের পর এক নিজেদের ছাড়িয়ে গড়েছেন নতুন ইতিহাস, তিনি তাদের একজন। পরম মমতায় গড়েছেন ‘চিরকুট’ ব্যান্ড, ২০ বছর ধরে আগলে রেখেছেন যত্নে। তারুণ্যে ভরপুর এই ‘চিরকুট’ নিয়ে সুমী ঘুরে বেড়ান টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া। আমেরিকা থেকে অস্ট্রেলিয়া। এক জীবনে যত গান তিনি গেয়েছেন, লিখেছেন, সুর করেছেনÑ বলতে গেলে তার প্রতিটি লাইনই সাধারণ মানুষের জীবনের নানা বোধ ও অনুভূতির অপ্রকাশিত কবিতা। তাই সেসব গান প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই লুফে নিয়েছেন শ্রোতারা। কোনোটা প্রেমের, কোনোটা হতাশা কাটিয়ে প্রেরণার, কোনোটা আবার জীবনের অতিবাস্তব চাওয়া না পাওয়ার অনুভবে। এই যে খুব সহজেই অন্যের মনের কথা বলতে পারার মুন্সিয়ানা বা ম্যাজিক; এই বিষয়টাই সুমীকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে একজন সংবেদনশীল মানুষ হিসেবে। বাড়িয়েছে চিরকুটের জনপ্রিয়তা।
শুধু বাংলাদেশ নয়, ‘গ্লোবাল বাংলাদেশি ব্যান্ড’খ্যাত চিরকুট নিয়ে সুমী বাংলা গানকে পৌঁছে দিয়েছেন বিশ্বমঞ্চে। গত বছর গোল্ডেন জুবিলি বাংলাদেশ কনসার্টে নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে কিংবদন্তি ‘স্করপিয়ন্স’-এর সঙ্গে একই মঞ্চে পারফর্ম করেছে চিরকুট, বাংলাদেশি যেকোনো মিউজিশিয়ানের জন্য যা এক বিরল সম্মান। হয়েছেন ইতিহাসের অংশ। তার আগে অংশগ্রহণ করেছেন পৃথিবীর অন্যতম সেরা যুক্তরাষ্ট্রে সাউথ বাই সাউথ ওয়েস্ট মিউজিক ফেস্টিভ্যাল-২০১৬, সাউথ এশিয়ান ব্যান্ড ফেস্টিভ্যাল, ইন্ডিয়ান প্রেসিডন্ট হাউস কনসার্ট, শ্রীলঙ্কায় জাফনা মিউজিক ফেস্টিভ্যাল ২০১৩, নরওয়েতে সিক্স সিটি কোলাবরেশন ট্যুর ২০১৩, পর্তুগালে ওমেক্স ২০২১, ২০২২ সালে অসলো ওয়ার্ল্ড মিউজিক ফেস্টিভ্যালসহ বৈশ্বিক মিউজিকের বড় বড় মিলনমেলায়। এক সঙ্গে গান করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী জোহান অ্যালকভার ও নরওয়ের ব্যান্ড কাসা মুরিলোর সঙ্গে। কণ্ঠে বাংলা গান ও হৃদয়ে বাংলাদেশের মানচিত্র নিয়ে ঘুরেছেন ভারত, শ্রীলঙ্কা, ইউকে, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ে, পর্তুগাল, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, স্পেনসহ নানা দেশ।
সম্প্রতি জলবায়ু ও নদী সংরক্ষণ নিয়ে শুরু করেছেন ‘নদী রক্স’ প্রজেক্ট। তার আইডিয়া ও উদ্যোগে শুরু হওয়া এই অভূতপূর্ব প্রকল্পে নদীর নামে নামে গান তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশের ৭টি নদী নিয়ে গান করেছে দেশের জনপ্রিয় ৭টি ব্যান্ড। ক’দিন আগেই ‘নদী রক্স’ নিয়ে তিনি অংশগ্রহণ করেন সুইডেনের স্টকহোমে ‘ক্রিয়েটিভ ক্লাইমেট লিডারশিপে’। সংগতের শক্তিকে ব্যবহার করে তারুণ্যকে নদীর কাছে নিয়ে যাওয়া, জলবায়ু সচেতনতার এই প্রজেক্ট নিয়ে সহকর্মীদের নিয়ে তিনি যেতে চান আরও বহুদূর।
সুমীর স্কুল ছিল প্রথমে খুলনার দৌলতপুর জুটমিল স্কুল। তারপর খুলনা খালিশপুরের রোটারি স্কুল। উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ছিল খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে অনার্স এবং মাস্টার্স কমপ্লিট করেন। সুমী ছোটবেলা থেকেই ভীষণ মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। তিনি ক্লাস ফাইভ থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত ভালো রেজাল্টের কারণে স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনা শেষ করেন।
পেশা হিসেবে গানের পাশাপাশি বাংলাদেশের বিজ্ঞাপনশিল্পের পেছনের মানুষ হিসেবে ১৫ বছর ধরে সাফল্যময় ক্যারিয়ার গড়ে তুলেছেন তিনি। দেশের বড় বড় সব বিজ্ঞাপনী সংস্থায় দীর্ঘ ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা অর্জন করে এখন নিজেই গড়েছেন নিজের বিজ্ঞাপনী সংস্থা ‘সল্ট ক্রিয়েটিভস’। দায়িত্ব পালন করছেন ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর হিসেবে। দেশের ছোট বড় অসংখ্য ব্র্যান্ডের স্ট্র্যাটেজি এবং ক্রিয়েটিভ সল্যুশন দেন সুমী। সুমীর বলা জীবনের গল্পে যেমন মুগ্ধ হন সবাই, তেমনই ব্র্যান্ডগুলো পায় সফলতা। আর তাই তার প্রতিষ্ঠান ‘সল্ট ক্রিয়েটিভস’ সাফল্যের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের অসংখ্য পুরস্কার।
পাশাপাশি সমান তালে অব্যাহত রেখেছেন সৃষ্টিশীলতার এই যাত্রা। সুমী বহুমুখী প্রতিভার এক অদ্ভুত মিশেল। চিরকুটের শ্রোতাপ্রিয় সব গান সুমীর লেখা এবং বেশির ভাগ গান তারই সুর করা। মিউজিক অ্যালবামের বাজারে যখন খরা চলছিল ঠিক তখনই বের হয় চিরকুটের প্রথম অ্যালবাম ‘চিরকুটনামা’, ২০১০ সালে। মিউজিক অ্যালবামটি চারদিকে বেশ হইচই ফেলে দেয়। এই অ্যালবামের খাজনা, কাটাকুটি, বন্ধু, আমি জানি না, ছোট্ট নদী, ঘরে ফেরাসহ প্রতিটি গানই ছিল অনবদ্য। তার মধ্যে খাজনা গানটিকে চিরকুটের অন্যতম সফল গান হিসেবে মনে করেন সুমী। যা দেশের নানা প্রান্তের সংগীতপ্রেমীদের মুখে মুখে বাজে। ‘খাজনা’ এবং কাটাকুটি গানটি বিশ্বমঞ্চে জনপ্রিয় এমটিভি ইন্ডিয়াতেও প্রচারিত হয়েছিল অসংখ্যবার।
চিরকুটের দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘জাদুর শহর’ প্রকাশ পায় ২০১৩ সালে এবং তৃতীয় অ্যালবাম ‘উধাও’ আসে ২০১৮ সালে। এ দুটি অ্যালবামই সাড়া ফেলে শ্রোতাদের মধ্যে। পাশাপাশি চলচ্চিত্রের গানে এক দারুণ সময় উপহার দিয়ে সবাইকে চমকে দেয় বাংলাদেশের চিরকুট। ২০১৬ সালে ‘আয়নাবাজি’ সিনেমার ‘দুনিয়া’ গানটি দারুণ হিট হয়। এ গান দিয়ে সিনেমার গানের জন্য পরিচালকদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে চলে আসে চিরকুট। এরপর ২০১৭ সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর আলোচিত ‘ডুব’ সিনেমায় ‘আহারে’ গানটির সাফল্য ছিল আকাশচুম্বী। গানটি দুই বাংলার দর্শকদের মুখে মুখে ছড়িয়ে যায়। শুধু তাই না, এই গান দিয়ে ভারতের ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কারে ৩টি ক্যাটাগরিতে নমিনেশন পায় চিরকুট। সে বছর ভারতের শীর্ষ এফএম রেডিও ‘রেডিও মিরচি’তে টানা কয়েক সপ্তাহ শীর্ষ অবস্থানে ছিল গানটি। সুমীর লেখা সুর করা এ বছর মুক্তি পাওয়া ‘ভয়ংকর সুন্দর’ সিনেমার ‘এই শহরের কাকটাও জেনে গেছে’ গানটি প্রেমিকজগতে বেশ সাড়া ফেলে। এ ছাড়া গান তিনি লিখেছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকির পরিচালিত ‘টেলিভিশন’ সিনেমার ‘কানামাছি’, লেজে রাখা পা-সহ আরও গান।
সবশেষ জয়া আহসান অভিনীত ‘বিউটি সার্কাস’ সিনেমার ‘বয়ে যাও নক্ষত্র’ শিরোনামের গানটিও দারুণ জনপ্রিয় হয়। শিগগিরই হয়তো সিনেমার নতুন কোনো গানে আবারও চিরকুটকে নিয়ে রঙ ছড়াবেন সুমী। সুমীর লেখা, সুর করা গানগুলো একটু খেয়াল করে শুনলেই বোঝা যায় সেগুলো দর্শননির্ভর গান। আর তাই বোধহয় এগুলো খুব দ্রুত মানুষের হৃদয়ে গেঁথে যায়।
২০ বছরে চিরকুটের এই দীর্ঘ পথচলায় সুমী নিজ ব্যান্ড দলের সহকর্মীদের নিয়ে যেমন আনন্দে দিগ্বিজয়ী পথ হেঁটেছেন, তেমনি বারবার বিক্ষত হয়েছেন নানা ঘাত-প্রতিঘাতের। যখনই ভাঙা-গড়ার মধ্য দিয়ে তিনি গেছেন, গেছে চিরকুট, আমরা দেখেছি আরও বেশি যত্ন, ভালোবাসা আর ধৈর্য নিয়ে তিনি ব্যান্ডকে আগলে রেখেছেন। কাজ এগিয়ে নিতে। উপরন্তু তার হাসিমুখ ভাটা পড়েনি কোনোদিন। কখনো আত্মবিশ্বাস হারাননি। বরং বারবার ফিরেছেন দ্বিগুণ শক্তি হয়ে। ফিরে এসেছেন আগের চেয়েও পরিণত আর নতুন নতুন রূপে।
গানের নিমগ্নতায় ভক্তদের হৃদয়ের গহীনে আসন পেতে নেওয়া এই ব্যান্ড তারকার জন্ম দেশের দক্ষিণের শহর খুলনা জেলায়। তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপায়। বাবা মরহুম মকবুল হোসেন এবং মাতা মরহুমা শেলি খাতুনের দেওয়া মানবিক হয়ে ওঠার পারিবারিক শিক্ষাকে সুমী তার জীবনচলার দিশা বলে মানেন। সুমীরা পাঁচ বোন, দুই ভাই। সাত ভাইবোনের মধ্যে তিনি ষষ্ঠ। গানের প্রতি ভালোবাসা সুমীর ছোটবেলা থেকেই। নিজের গানের প্রথম গুরু বলতে বাবা ও মা। কখনও আনুষ্ঠানিকভাবে গান শেখেননি সুমী। তবে তার একজন গুরু ছিলেন, যিনি তাঁকে পথ দেখাতেন। তার নাম ওস্তাদ হারুন উর রশিদ। পরিবারে নিয়মিত সংস্কৃতির চর্চা, খেলাধুলা হতো। বাবা-মা দুজনই ছিলেন সংস্কৃতির ভীষণ অনুরাগী। সে থেকেই গানের প্রতি নেশা তৈরি হয়।
চিরকুটে নিজের গান গাওয়া, গান লেখা ও সুর করা নিয়ে সুমী বলেন, এগুলো আলাদা করে দেখি না আমি। সৃষ্টিকর্তা আমার জীবনের যতটুকু যাত্রা বরাদ্দ করেছেন, কথা সুরে তার ছন্দটা ধরার চেষ্টা করি মাত্র। তিনি বলেন, ‘আমি যা লিখি তা আমার অভিজ্ঞতা এবং কল্পনার একটা সংমিশ্রণ। সেটি সাম্প্রতিক বাস্তবতা হোক অথবা অতীতের কোনো ছায়া। যদিও আমি শুধু বর্তমানে বেঁচে থাকি। অতীত আমাকে খুব একটা ভাবায় না। তবে সিনেমার গান লেখার ব্যাপারটি আবার আলাদা। গল্পের চাহিদা অনুযায়ী সিনেমার গানের একটা পথ পরিচালক ঠিক করে দেন। সিনেমার গল্পের সঙ্গে গানের মিল না থাকলে বিষয়টি আসলে জমে না। তাই সিনেমার গল্পকে মাথায় রেখেই গানগুলো লিখে থাকি।’
ব্যক্তিজীবনে অমায়িক, বন্ধুবৎসল, একটু মাথা গরম (তার ভাষায়) স্বাধীনচেতা মানুষ সুমী। তার বেঁচে থাকার দর্শন হলো ‘সহজ জীবন’। তিনি বলেন, চারপাশের এত জটিলতা ভেদ করে ভালোবাসার জন্য একটা জীবন যথেষ্ট না। সেখানে অন্যকিছু নিয়ে কম ভাবতে চান তিনি। যদিও সে পথ এত সহজ না। তবু সব অবহেলা, অনাচারের বিপরীতে ভালোবাসাই একমাত্র মুক্তির পথ বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
কনসার্টে শ্রোতার সঙ্গে চিরকুট তথা সুমীর বন্ধন উল্লেখ করার মতো। তার ভাষ্যমতে, ‘আমাদের শ্রোতার আমাদের ওন করেন। আমি তা টের পাই। এ অদ্ভুত এক যোগাযোগ। এটা পেতে সত্যিই ভাগ্য লাগে। আমি ভীষণ ভাগ্যবান। চিরকুট কৃতজ্ঞ আমাদের সব শ্রোতার কাছে।’
এরপর নিজের কপাল থেকে টিপ খুলে ফেলা এবং নাকের নথ পরা নিয়ে কথা বলেন সুমী। তিনি জানান, কেন টিপ পরা ছেড়ে দিয়েছেন। সুমি বলেন, ‘টিপ পরা ছেড়ে দিয়েছি প্রায় ৭/৮ বছর হবে। টিপ ছিল এই শহরে আমার প্রথম ভালোবাসার বন্ধু। আমি যখন প্রথম এই শহরে আসি তখন সেভাবে আমি কাউকে চিনতাম না। তাই টিপ ছিল আমার কাছের বন্ধু। আমাকে সব সময় সঙ্গ দিত। এরপর আমি নথ পরা শুরু করি। তখন টিপ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। নথ পরার পেছনে একটি ঘটনা আছে। আমরা আমেরিকায় একটি শো করতে যাই। তখন আমার মাথায় আসে যে দেশীয় কিছু সংস্কৃতি তুলে ধরা দরকার। তখন আমি নথ পরে কনসার্ট করার সিদ্ধান্ত নেই। এরপর থেকে সবাই আমকে দেখে বলে বেশ ভালো দেখাচ্ছে। তারপর থেকেই আমার নথ পরা শুরু।’
সবশেষ সুমী তার প্রিয় পরিবার চিরকুট নিয়ে ফের কথা বলেন। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, চিরকুট আসলে আপনার কাছে কি? উত্তরের শুরুতেই সুমী বলেন, ‘চিরকুট আমার জীবন। আমি চিরকুটকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি। ভালো-মন্দ মিলিয়ে এই ব্যান্ডের সঙ্গে যারা জড়িত, তারা সবাই আমার জীবনের সঙ্গে জড়িত। তাই চিরকুট ছাড়া কখনই আমি অন্য কিছু চিন্তা করতে পারিনি আর কোনোদিন পারবও না।’
সুমির কাছে তার ব্যান্ড ‘চিরকুট’ সবকিছুর ঊর্ধ্বে। কারণ সব বাধা পার করে একজন নারী হিসেবে তিনি তার ব্যান্ডটিকে দিনের পর দিন পরম মমতায় সযত্নে লালন-পালন করে চলেছেন। লাখ লাখ শ্রোতার ভালোবাসার প্রতিদানে নতুন নতুন সৃষ্টি নিয়ে আজীবন পাশে থাকতে চান তিনি। সুমীর এই দাপুটে পথচলা সময়ের চিরকুটে ভালোবাসার স্লোগান হয়ে থাকুক। চিরকুট এবং সুমীর জন্য আমাদের পক্ষ থেকে রইল প্রাণঢালা অভিনন্দন আর সাহস!
সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি
প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু
রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯
যোগাযোগ
প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]
বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯, +৮৮০১৮১৫৫৫২৯৯৭ । ই-মেইল: [email protected]
সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]
2023 Protidiner Bangladesh All Rights Reserved. Developed By Protidiner Bangladesh Team.