× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

মার্চ ৩ ১৯৭১

এ দিনে তৈরি হয় স্বাধীনতা সংগ্রামের রূপরেখা

আমিরুল আবেদিন

প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৩ ১৪:৩০ পিএম

আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২৩ ১৩:৫২ পিএম

অলঙ্করন : প্রবা

অলঙ্করন : প্রবা

পশ্চিমারা জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করায় পূর্ব পাকিস্তানে অগ্নিগর্ভ পরিবেশ। ২ ও ৩ মার্চ সারা দেশে হরতালের ডাক দেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ৩ মার্চ হরতালের দ্বিতীয় দিন। দেশের মানুষ রাজপথের মিছিলে উত্তপ্ত করে চলেছে চারপাশ। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা স্তব্ধপ্রায়। ৩ মার্চেই স্বাধীনতা সংগ্রামের রূপরেখা তৈরি হচ্ছিল।

পল্টন ময়দানে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ এক ছাত্রসভার আয়োজন করে। ছাত্রসমাজ থেকে জনসাধারণ ঝড়ের বেগে সভায় যোগদান করে। ওই সময় স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের চার নেতা নূরে আলম সিদ্দিকী, শাজাহান সিরাজ, আ স ম আবদুর রব ও আবদুল কুদ্দুস মাখন স্বাধীনতা ও মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার শপথ নেন। এভাবেই এক নতুন সূর্যের আশা, এক নতুন সময়ের প্রত্যাশার সূচনা হয়। তবে এখানেই দিনটির বৈচিত্র্য শেষ হয় না। কারণ সভার আয়োজন আরও বাকি।

ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী ঐতিহাসিক সভায় সভাপতিত্ব করেন। তারপর সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন। অধিকার নয়, এবার স্বাধীনতাই মূল লক্ষ্য। স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার প্রত্যয়। আর নয় আপসের পথ। উপস্থিত সবাই তা বুঝতে পারছিলেন। ইশতেহারে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের সর্বাধিনায়ক হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ঘোষণা করা হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটিকে নির্বাচিত করা হয় জাতীয় সংগীত হিসেবে। স্বাধীন সার্বভৌম দেশের পতাকাও নির্ধারণ করা হয়ে যায়। পতাকা হবে সবুজ জমিনের মাঝে লাল সূর্য, মাঝে সোনালি মানচিত্র। সবুজের দেশে রক্তিম সূর্যের ছটা। ফিরে দেখলে, ওই রক্তিম লালই যেন রক্তক্ষয়ী মার্চের প্রতীক। স্বাধীনতা যে সহজে মিলবে না, রক্ত ঝরাতে হবে তা বোধহয় সবাই বুঝতে পেরেছিলেন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুও। তিনি ভাষণে অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দেন। পল্টনের সেই জনসভায় বঙ্গবন্ধু কর-খাজনা না দেওয়ার ঘোষণা দেন। সামরিক সরকারকে গণপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি তাদের ব্যারাকে ফিরে যেতে বলেন। উপস্থিত সবার উদ্দেশে বলেন, বিশৃঙ্খল আন্দোলনে শুধু মরতেই হবে, দাবি আদায় করা যাবে না। কদিন ধরে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও অরাজকতায় জড়িতদের যেকোনো মূল্যে প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে ৭ মার্চ রমনা রেসকোর্সে চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলেও জানান তিনি। তার আগে ইয়াহিয়া খান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ১২ জন নির্বাচিত সদস্যকে নিয়ে ১০ মার্চ ঢাকায় এক আলোচনা সভার যে প্রস্তাব দেন, তা প্রত্যাখ্যান করেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বলেন, শহীদদের রক্তের ওপর দিয়ে কোনো আলোচনা হতে পারে না। হয় বাঙালিদের গুলি করা বন্ধ করতে হবে, নয়তো সাড়ে সাত কোটি বাঙালিকে তাদের মতো থাকতে দিতে হবে। বঙ্গবন্ধু সেদিন নির্দেশ দেন, ‘আমি যদি নাও থাকি, আন্দোলন যেন না থামে।’

হরতাল চলাকালে জনতার স্বতঃস্ফূর্ত মিছিলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গুলি ও বিভিন্ন ঘটনায় সারা দেশে শতাধিক মানুষের প্রাণ যায় সেদিন। ঢাকা ছাড়াও রংপুর এবং সিলেটে কারফিউ জারি করা হয়। পরদিনের ইত্তেফাকের খবর অনুযায়ী, হরতালে চট্টগ্রামেই নিহত হন ৭৫ জন।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা