× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

২০ মার্চ ১৯৭১

ইয়াহিয়া দিলেন ‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর অনুমোদন

আমিরুল আবেদিন

প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৩ ১৩:১৮ পিএম

ইয়াহিয়া দিলেন ‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর অনুমোদন

২০ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে ইয়াহিয়ার চতুর্থ দফায় বৈঠক হয়। বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার ছয় শীর্ষ সহযোগীÑ সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এএইচএম কামারুজ্জামান, এম মনসুর আলী, খন্দকার মোশতাক আহমদ ও কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন। সোয়া দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের জানান, ‘আলোচনায় কিছু অগ্রগতি হয়েছে। সময় এলে অবশ্যই আমি সব কিছু বলব’। তবে বঙ্গবন্ধু সারা দেশে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। ১৯ মার্চের পর এদিনও জয়দেবপুরে সান্ধ্য আইন জারি ছিল। জয়দেবপুরের ঘটনার প্রতিবাদে সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কালো পতাকা ওড়ানো হয়। চলতে থাকে অসহযোগ আন্দোলন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাবেক নৌসেনাদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির ঘোষণার প্রতি সংহতি জানানো হয়। রাজধানীর পথঘাট মানুষের পদচারণে উত্তপ্ত থাকে। সমাবেশে শপথ পাঠের সময় বঙ্গবন্ধু উপস্থিত ছিলেন। মুক্তিকামী মানুষ বঙ্গবন্ধুর কাছে যায় সিদ্ধান্তের জন্য। বঙ্গবন্ধু সমবেত জনতার উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘মুক্তি পাগল সাড়ে সাত কোটি বাঙালির চূড়ান্ত বিজয়কে পৃথিবীর কোনো শক্তিই রুখতে পারবে না। বাংলাদেশের মানুষের সার্বিক মুক্তি অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’

রাজনৈতিক সংকট মীমাংসার কথা মুখে বললেও ইয়াহিয়া গোপন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্যই ঢাকা এসেছিলেন। এদিন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান তার সামরিক উপদেষ্টা জেনারেল হামিদ খান, পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক প্রশাসক টিক্কা খান, জেনারেল পীরজাদা, জেনারেল ওমর, জেনারেল মিঠঠাসহ সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি গোপন বৈঠকে বসেন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বৈঠক যদি কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না দেয়, তাহলে কী করা হবে, তার পরিকল্পনার জন্যই এই মিটিং আয়োজন করা হয়। ইয়াহিয়া এদিনই ‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর অনুমোদন দেন। মার্চের প্রথম থেকেই বাঙালি নিধনের হীন পরিকল্পনা করছিলেন পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীরা। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে প্রতিদিন ছয়টি থেকে ১৭টি পর্যন্ত পিআইএ ফ্লাইটে করে সৈন্য ও রসদ ঢাকায় আনা হচ্ছিল। কয়েকটি জাহাজ পূর্ণ করে সৈন্য ও অস্ত্রশস্ত্র আনা হচ্ছিল চট্টগ্রাম বন্দরে। অসহযোগ আন্দোলনের শুরুতে বাংলাদেশে পাকিস্তানের স্থলবাহিনীর শক্তি ছিল এক ডিভিশন, ২০ মার্চ তা হয় দুই ডিভিশনের বেশি। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ বিষয়টি লক্ষ করেছিল এবং দেশি-বিদেশি শক্তিদের আহ্বান জানিয়েছিল, অনতিবিলম্বে অস্ত্র ও সামরিক রসদ বহনের বিষয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হোক।

বঙ্গবন্ধুও অনুধাবন করেছিলেন আলোচনা কাঙ্ক্ষিত ফলাফল দেবে না। তাই রাতে এক বিবৃতিতে তিনি জানান, ‘মুক্তি অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বদরবারে এক অনুপ্রেরণাদায়ী দৃষ্টান্ত’। একদিকে বঙ্গবন্ধুর আপস না করার সিদ্ধান্ত, অন্যদিকে বাঙালি নিধনের হীন চক্রান্ত শুরু হয়ে যাওয়া। বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের চূড়ান্ত ঘটনার সিদ্ধান্ত নির্ধারিত হয় আজ।

 


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা