× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

অপারেশন জ্যাকপট : অজানা কাহিনী

বন্ডে দস্তখত দিয়ে ট্রেনিং শুরু করেছিলাম

সিরাজুল ইসলাম আবেদ

প্রকাশ : ২৬ মার্চ ২০২৩ ১৪:৪৮ পিএম

আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২৩ ১৪:৫২ পিএম

অপারেশন জ্যাকপটে অংশ নেওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. এনামুল হক।

অপারেশন জ্যাকপটে অংশ নেওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. এনামুল হক।

মুক্তিযুদ্ধে নৌকমান্ডোদের প্রথম অভিযান ‘অপারেশন জ্যাকপট’। ১৯৭১ সালের ১৬ আগস্ট, দিনের প্রথম প্রহরে চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর এবং চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দর- এই চার স্থানে একযোগে অপারেশন চালানো হয়। আত্মঘাতী নৌকমান্ডো দলের সফল এ অপারেশনে পাকিস্তান থেকে আসা অস্ত্রবোঝাই জাহাজসহ বিভিন্ন দেশের খাদ্য ও তেলবাহী ২৬টি জাহাজ ডুবিয়ে দেওয়া হয়।

অপারেশন জ্যাকপটসহ একাধিক অপারেশনে অংশ নেওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা নৌকমান্ডো মো. এনামুল হক দীর্ঘ প্রবাসজীবন থেকে স­­­­­ম্প্রতি দেশে এসেছেন। প্রতিদিনের বাংলাদেশের সঙ্গে মিলিত হন হার্দিক বৈঠকে। 

কথপোকথনে তিনি যেন ফিরে যান মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে। মার্চের ঢাকা, ২৫ মার্চ কালরাত্রি, মুক্তিযুদ্ধ, নৌকমান্ডো গঠন, প্রশিক্ষণ, অপারেশন জ্যাকপট- আরও কত জানা-অজানা কাহিনি।

বাবার চাকরিসূত্রে একসময় কক্সবাজারে থাকতে হয়েছে এনামুল হককে। সে সময় বন্ধুদের সঙ্গে মাঝে-মধ্যেই সাগরে যেতেন সাঁতার কাটতে। তারুণ্যের আনন্দময় সেই অভিজ্ঞতাই মুক্তিযুদ্ধে তাকে নৌকমান্ডো হওয়ার পথ প্রশস্ত করে দেয়। নিশ্চিত মৃত্যুর আশঙ্কা থাকলেও পিছপা হননি বরং বন্ডে স্বাক্ষর করেছেন এই ভেবে যে, ‘দেশ স্বাধীন করতে কিছুটা হলেও অবদান রাখতে পারব।’

দীর্ঘ ৪০ বছর প্রবাসজীবন থেকে এনামুল হকের দেশে ফেরার উদ্দেশ্য- মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতায় লেখা ‘অপারেশন জ্যাকপট : এক নৌকমান্ডোর অহংকার’ বইটির প্রকাশনা। খবর পেয়ে দেখা করার আগ্রহ দেখালে তিনি ২০-২৫ মিনিটের জন্য সময় দেন। ঠিকানা ধরে হাজির হই তার বোনের বাসা, রাজধানীর বাসাবোয়। মুক্তিযুদ্ধ এমনই এক মহাকাব্য, কথায় কথায় কখন ঘণ্টা পেরিয়ে যায় আমরা টেরই পাই না। 

শুরু হয় ১৯৭১-এর আগুনঝরা মার্চ দিয়ে। এনামুল হক বলে যান- ‘আমি তখন জগন্নাথ কলেজের ছাত্র। ছাত্ররাজনীতি করি। পাকিস্তানিদের শোষণ নিপীড়ন খুব কাছে থেকে দেখেছি। ’৭০ সালের নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত হলো আওয়ামী লীগ। কিন্তু ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে শুরু হলো গড়িমসি। এর মধ্যেই ইয়াহিয়া খান অনির্দিষ্টকালের জন্য অ্যাসেম্বলি বন্ধের ঘোষণা করলেন। এই ঘোষণার বিরুদ্ধে বাঙালি এক হয়ে শুরু করে আন্দোলন। খেলোয়াড়, ছাত্রনেতা, বুদ্ধিজীবী, সাধারণ মানুষ সবাই রাজপথে নেমে আসে। বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চ জাতির উদ্দেশে বক্তৃতা দিলেন। উত্তাল পুরো দেশ। সেই সময়ে ইয়াহিয়া তার দল নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনা করতে ঢাকায় আসেন। আলোচনার সিদ্ধান্ত জানতে আমরা প্রতিদিনই গভর্নর হাউস ও ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনে অপেক্ষা করতাম।

২৫শে মার্চ বিকেলে খবর আসে ইয়াহিয়া পশ্চিম পাকিস্তান চলে যাবেন। পাকিস্তানিরা এদেশের অর্থসম্পদ নিয়ে পালাতে পারে, এই আশঙ্কায় ছাত্রলীগের কর্মীরা পালা করে ফার্মগেটে রাস্তা পাহারা দিতে থাকে।

এনামুল হক বলে চলেন, ‘আমার বাসা ছিল ইন্দিরা রোড রাজাবাজারে। সে রাতে পাহারার দায়িত্ব ছিল আমার দলের। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ হঠাৎই শুনতে পাই গুলির আওয়াজ। মুহূর্তেই গুলির আওয়াজ তীব্র হতে থাকে। চারদিকে বারুদের গন্ধ। আব্বা ভয়ে আজান দেওয়া শুরু করলেন। আম্মা মেঝেতে চাদর বিছিয়ে সবাইকে শুয়ে পড়তে বললেন। পরবর্তী তিন দিন চলল কারফিউ। কী হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারি না। কারফিউ তুলে নিলে ঢাকার অবস্থা দেখার জন্য কাউকে কিছু না বলে বেরিয়ে পড়লাম। উদ্দেশ্য পায়ে হেঁটে জগন্নাথ কলেজ। ফার্মগেট পর্যন্ত এসে দেখি একটি রিকশায় একজন ভদ্রলোক একা। জগন্নাথ কলেজের ছাত্র জানার পর আমাকে সঙ্গে নিলেন। দুজন একসঙ্গে রেডিও সেন্টারের সামনে পর্যন্ত এসে দেখলাম মিলিটারি ট্যাঙ্ক। এগিয়ে গেলাম পিজি হাসপাতাল পর্যন্ত। সেখানে রিকশা থেকে নেমে গেলাম। রোকেয়া হলের সামনে এসে দেখলাম মেইন গেটে মেয়েদের শাড়ি, ব্লাউজ, ওড়না ঝুলছে। ওপরে তাকিয়ে দেখি জানালায়ও একই অবস্থা। বুঝতে পারলাম এখানে হামলা করেছে হানাদাররা। জগন্নাথ হলের দিকে এগুতেই দেখি, লোকজন জটলা পাকিয়ে ফিসফিস করে বলাবলি করছে হামলার ভয়াবহতা নিয়ে। ‘ছাত্রদের মেরেছে, কয়েকজনকে জীবন্ত পুঁতে ফেলেছে।’ কয়েকজনকে ভেতরে যেতে দেখে আমিও এগোলাম। মেঝেতে চাকা চাকা রক্ত। দোতলার সিঁড়িতে রক্ত। সাহস হলো না ওপরে যাওয়ার। ওখান থেকে গেলাম ইকবাল হলে। হলের সামনে রক্তের বন্যা বলা যায়। হলটি পরিচিত থাকায় ভেতরে গিয়ে কয়েকজনকে পেলাম। তাদের কাছে শুনলাম পাকিস্তানি বাহিনী প্রতিটি ঘরে যাকে যাকে পেয়েছে তাকেই মেরেছে। সাহস করে ছাদে উঠলাম। দেখি বাচ্চাসহ একটি পরিবারের লাশ পড়ে আছে। সেখান থেকে বেরিয়ে ইংলিশ রোডের দিকে গেলাম। রাস্তার দুপাশে লাশ। দোকানগুলোতে আগুন জ্বলছিল তখনও। একজন আমাকে সামনে যেতে নিষেধ করল। আবার বাসায় ফিরলাম হেঁটে। বাসার সবাইকে বললাম ভয়াবহতার কথা। সেই সময় সিদ্ধান্ত নিলাম ঢাকা ছাড়তে হবে। আমরা গ্রামের বাড়ি নরসিংদী চলে যাব।’ 

এনামুল হকের বর্ণনায় পুরো ঘরে নীরবতা নিয়ে আসে। কালরাত্রির আতঙ্ক যেন আমাদেরও চারপাশে। এবার নীরবতা ভেঙে জানতে চাই তার মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার বিষয়ে। একটু সময় নিয়ে আবার শুরু করেন, ‘মগবাজারে আমাদের দূর সম্পর্কের এক ভাই ছিলেন...। সেই ভাইয়ের সহায়তায় ডেমরা থেকে বাস, নৌকা, অবশেষে পায়ে হেঁটে বাড়ি পৌঁছান। কী করণীয় এই নিয়ে যখন ভাবছেন, তখন ‘হঠাৎ করে খবর পাই বাঙালি আর্মি ভৈরব রক্ষায় পজিশন নিয়েছে।’ এনামুল হকের দুই চোখে আনন্দধারা বয়ে গেল। বলেন, ‘আমরা সেখানে গেলাম। বাঙালি আর্মির সঙ্গে কথা হলো। ফিরে এসে সবাই খুব খুশি। এর মধ্যেই খবর এলো অস্থায়ী সরকারের। গ্রামের খবির, কুদ্দুস, রফিককে নিয়ে মিটিং করলাম। সিদ্ধান্ত হলো ভারতে গিয়ে ট্রেনিং নেব।’ 

মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে নৌকমান্ডো বা অপারেশন জ্যাকপটের সঙ্গে যুক্ত হলেন কীভাবে- প্রশ্ন শুনে প্রসন্ন হাসির রেখা ফুটিয়ে বললেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণের জন্যই গিয়েছিলাম। এক রাতে কয়েকজন ভারতীয় অফিসার এলেন সাদা পোশাকে। হুইসেল বাজিয়ে আমাদের ডাকলেন। প্রশ্ন করলেন তোমাদের মধ্যে কে কে সমুদ্রে সাঁতার কেটেছ। আমি হাত তুললাম। এরপর বললেন, বড় নদীতে কার কার সাঁতার কাটার অভিজ্ঞতা আছে, আরও কয়েকজন হাত তুলল। এভাবে ১৭ জনকে বাছাই করা হলো। পরে সেখান থেকে আরেক ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে আমাদের সঙ্গে এক এক করে কথা বললেন একজন ক্যাপ্টেন। আমাকে তিনি বললেন, এটা সুইসাইডাল স্কোয়াড- এখানে মৃত্যু নিশ্চিত। তখনও আমরা জানি না আমাদের কী করতে হবে। আমাকে ক্যাপ্টেন বললেন, বরং তুমি ক্যাম্পে ফিরে যাও ট্রেনিং নিয়ে দেশের ভেতরে গিয়ে যুদ্ধ করবে। কিন্তু আমি বললাম, মৃত্যু নিশ্চিত জেনেই যুদ্ধে এসেছি। আমি এ কাজই করব। এরপর আমাদের পাঁচজনকে নির্বাচিত করে ভাগীরথী নদীর পাড়ে ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হলো।’

প্রশ্ন করি, আপনারা ছিলেন নৌ-গেরিলা। প্রশিক্ষণও তো আলাদা ছিল? আপনাদের প্রশিক্ষণের ভিন্নতাগুলো জানতে চাই। নিজেকে একটু গুছিয়ে নিয়ে বলেন, বন্ডে দস্তখত দিয়ে ট্রেনিং শুরু করেছিলাম। ভাগীরথী নদীতে বুকে ইট বেঁধে সাঁতরে পার হতাম, শুধুমাত্র ফিন্সের সহযোগিতায় কোনো অক্সিজেন সাপোর্ট ছাড়াই। লিমপেট মাইন কীভাবে বুকে বাঁধতে হবে, কমান্ডো-নাইফের ব্যবহার, জুডো, কারাতে, শরীরচর্চা এ সবই ছিল নৌকমান্ডোদের প্রশিক্ষণের অংশ। বিশেষ প্রশিক্ষণে আমরা শিখি শব্দ না করে কীভাবে সাঁতরাতে হয়, জাহাজে মাইন লাগাতে হয়। দিনে ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা আমাদেরকে সাঁতরাতে হতো।’ 

আবারও প্রশ্ন করি, অপারেশন জ্যাকপটের কথা কখন জানলেন। এনামুল হকের ধীরস্থির উত্তর, ‘অনেক পরে জেনেছি। দেশের টানে ফ্রান্স থেকে পালিয়ে পাকিস্তান নৌবাহিনী ত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন ৮ সাবমেরিনার। তারা হলেন বীরপ্রতীক গাজী মোহাম্মদ রহমতউল্লাহ, সৈয়দ মো. মোশারফ হোসেন, বীরবিক্রম আমানউল্লাহ শেখ, বীরউত্তম বদিউল আলম, বীরউত্তম ও বীরবিক্রম আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী, বীরপ্রতীক আহসানউল্লাহ, শহীদ বীরবিক্রম আব্দুল রকিব মিয়া এবং বীরবিক্রম আবিদুর রহমান। তারা পরামর্শ দিয়েছিলেন নৌকমান্ডো তৈরি করে আমাদের সমুদ্র ও নৌবন্দরে হামলা করার।’ 

আপনি তো মোংলা বন্দর অপারেশনে ছিলেন? সেই অপারেশনের কথা শুনতে চাই। প্রশ্ন শুনে একটু চমকে তাকান। তারপর বলেন, ‘আমাদেরকে চার ভাগে ভাগ করে ৬০ জনকে চট্টগ্রাম, ৬০ জনকে মোংলা, ২০ জনকে চাঁদপুর ও ২০ জনকে পাঠানো হয় নারায়ণগঞ্জে। আমরা সাত দিন নৌকা চালিয়ে সুন্দরবন দিয়ে পৌঁছাই খুলনা। শমসেরনগর এসে মেজর জলিল আমাদের রিসিভ করেন। আহসানউল্লাহ ছিলেন আমাদের কমান্ডার। আগে থেকেই ঠিক করা ছিল দুটি গান বাজবে আকাশবাণীতে। পঙ্কজ মল্লিকের ‘আমি তোমায় যত শুনিয়েছি গান’ আমাদের প্রস্তুতি সংগীত। আরতী মুখোপাধ্যায়ের ‘আমাদের পুতুল আজকে প্রথম যাবে শ্বশুরবাড়ি’ ছিল অ্যাকশনে যাওয়ার সংকেত।

১৩ আগস্ট প্রথম গানটি বাজলে। গান শুনে আমরা সবাই উচ্ছ্বসিত। ১৫ তারিখ ভারতের স্বাধীনতা দিবসে বাজল দ্বিতীয় গান। সবাই মাটি ছুঁয়ে শপথ করে নামলাম সমুদ্রে। পেটে গামছা দিয়ে মাইন বাঁধা। এখানে গাইডের ভুলে আমাদের একটু দেরি হয়ে যায়। ভোরের দিকে আমাদেরকে বলা হলো, ‘যত বেশি পারা যায় জাহাজে মাইন লাগাতে। পানির লেভেল থেকে ৬/৭ ফুট নিচে লাগাতে হবে। যাতে ব্লাস্ট করার পর  ভেতরে পানি ঢুকে জাহাজ তলিয়ে যায়। মাইনে ৪৫ মিনিটের ডিলে করা আছে, এ সময়ের মধ্যে আমাদের সরে যেতে হবে। পরিকল্পনা মতো মাইন লাগিয়ে আমরা সাঁতরে সেইফ জোনে এলাম। সময় মতো একটার পর একটা জাহাজ ব্লাস্ট হতে থাকে। পাকিস্তানিদের অবস্থা তখন দিশেহারা। ওরা বোট থেকে সুন্দরবনের দিকে ফায়ার শুরু করে। আর আমরা ঠিক তার উল্টোদিকে নিরাপদ আশ্রয়ে উঠে পড়েছি।’

অপারেশন জ্যাকপটের পরের অপারেশনগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে নৌকমান্ডো এনামুল হক বলেন, ‘অপারেশন জ্যাকপট শেষে আমরা আরও কয়েকটি অপারেশন করি। অক্টোবরের মাঝামাঝি আশুগঞ্জ, ভৈরব ব্রিজ এলাকায় কিছু মাঝারি ধরনের জাহাজ এবং লালপুরে পাকিস্তানি সেনাদের রসদ বহনকারী একটি জাহাজ ধ্বংস করতে হবে। নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সালেহ আহমদ ভূঁইয়ার নেতৃত্বে আমরা তৈরি হই। কমান্ডার প্রফেসর ড. আলাউদ্দিন, নেভির এস এম ভূইয়াকে পাঠানো হয় অবস্থান বোঝার জন্য। খবর এলো লালপুরে আর্মিদের জন্য খাবারের জাহাজ এসেছে। আমরা পরিকল্পনা মাফিক সেটিও ধ্বংস করি।’ 

‘আমাদের প্রতি নির্দেশ ছিল জাহাজগুলো আক্রমণ করার। কিন্তু ভৈরব ব্রিজ ভাঙা যাবে না। কিন্তু এই ব্রিজ ছিল পাকিস্তানি আর্মিদের রসদ পরিবহনের পথ। স্থানীয় লোকদের নিয়ে আমরা মিটিংয়ে বসলাম। সিদ্ধান্ত হলো ব্রিজ ভাঙার। রাতে প্রায় আধামাইল সাঁতরে আমরা ৫ জন গেলাম ভৈরব ব্রিজের গোড়ায়। গিয়ে দেখি ব্রিজের পিলার তো ইট দিয়ে তৈরি। স্টিলের কোনো অংশ না থাকায় মাইন লাগানো গেল না। উপস্থিত বুদ্ধিতে ডুব দিয়ে নদীর অনেকটা গভীরে গিয়ে পিলারের ধারে মাইন রাখলাম। বিস্ফোরণ হলো, কিন্তু ব্রিজ ভাঙেনি। দুদিন পরে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের খবর পেল। তারা জানাল, তালশহরে জোড়া ব্রিজ ধ্বংস করতে হবে। আমরা সেটিও উড়াই।’ 

একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে শেষ চাওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে এনামুল হক মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, এখন আমরা মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছি কিন্তু তবুও অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছেন, যারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের জন্য কিছু করা প্রয়োজন। এ ছাড়া তিনি যেন মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা ও বাসস্থান নিশ্চিত করেন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা