× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সম্পাদকীয়

জঙ্গিবাদ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণজাগরণ ঘটুক

সম্পাদক

প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৩ ০৫:৫৮ এএম

জঙ্গিবাদ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণজাগরণ ঘটুক

আমাদের সমাজে নানারকম ব্যাধি ক্রমেই দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। এই ব্যাধিগুলোর অন্যতম জঙ্গিবাদ-দুর্নীতি। সমাজে নানান বিষয়ে পারস্পরিক সম্পর্ক আছে, একই সঙ্গে আছে মিথস্ক্রিয়াও। কিন্তু জঙ্গিবাদ-দুর্নীতি প্রায় ব্র্যাকেট বন্দি হওয়ার প্রেক্ষাপটে সঙ্গতই দুর্ভাবনার কারণও বহুবিধ হয়ে উঠেছে। ১৭ এপ্রিল গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে চতুর্থ ধাপে আরও ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইমামদের প্রতি সময়োপযোগী আহ্বান জানিয়েছেন বলে আমরা মনে করি। ১৮ এপ্রিল প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এর প্রতিবেদনে প্রকাশ, প্রধানমন্ত্রী ইমামদের জুমার নামাজের সময় খুতবায় জঙ্গিবাদ, মাদক, দুর্নীতি এবং নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে আলেম ও ইমামদের কথা বলার আহ্বান জানিয়েছেন। আমরা জানি- আলেম, ওলামা, খতিব, ইমাম কিংবা যেকোনো ধর্মের নেতৃস্থানীয়দের মানুষ শ্রদ্ধা করে এবং তাদের বক্তব্য আমলে নেয়। এই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীর এই আহ্বান গুরুত্বপূর্ণ।

আমরা জানি, জঙ্গিবাদ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের শুন্যসহিষ্ণুতার অঙ্গীকার রয়েছে। অনস্বীকার্য, সরকার জঙ্গিবাদ নির্মূলে নিরলস প্রচেষ্টা চালাচ্ছে এবং এর ইতিবাচক প্রভাব অনেকটাই দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। বিভিন্নভাবে পবিত্র ধর্মের অবমাননা কিংবা ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অনেক নজির অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে আমাদের সামনে রয়েছে। আমরা দেখেছি, গুজব ছড়িয়ে সমাজে ইতোমধ্যে অনেক ক্ষত সৃষ্টি করেছে স্বার্থান্বেষীরা। এও আমাদের অভিজ্ঞতায় আছে, সরকারের দায়িত্বশীল অনেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান সত্ত্বেও অনিয়ম-দুর্নীতিতে তৎপর রয়েছেন। নারীর প্রতি সহিংসতাও সমাজের ঘোরতর ব্যাধি। নানা সূচকে দেশের উন্নয়ন- অগ্রগতিসহ অনেক কিছুই সাফল্যজনক হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে, কিন্তু প্রায় সমান্তরালে অনাকাঙ্ক্ষিত এই বিষয়গুলোও সমাজের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করছে। আমরা জানি, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ এবং পবিত্র ইসলাম অন্য ধর্মের প্রতি সহনশীল হতেই শিক্ষা দেয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, কতিপয় হীনস্বার্থবাদীর কারণে ধর্মের এই অমিয় বাণী পর্যদুস্ত হচ্ছে। সংবিধানে প্রত্যেকের নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করার ভি বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম অঙ্গীকার ছিল, অসাম্প্রদায়িক ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা। সরকার এ লক্ষ্যে কাজ করে চললেও কখনও কখনও প্রকটভাবেই দৃশ্যমান হয়েছে হীনস্বার্থবাদী কিছু রাজনীতিক তা ভণ্ডুল করে দিতে চেয়েছেন। কিন্তু আশার বিষয়, শান্তিপ্রিয় সাধারণ মানুষ এর সব কিছুর বিরুদ্ধেই রুখে দাঁড়িয়েছে।
দুর্নীতি নির্মূলে সরকারের অনমনীয় অবস্থান যেমন জরুরি, ঠিক তেমনি এর জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্যেরও কোনো বিকল্প নেই। রাজনীতির এই শক্তিই সাধারণ মানুষকে নবচেতনায় জাগাতে পারে। দুর্নীতির কারণগুলো সচেতন মানুষ মাত্রেরই যেমন জানা আছে, তেমনি জঙ্গিবাদের উৎসও অনেক ক্ষেত্রেই অজানা নয়। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যেমন শুভবোধসম্পন্ন সবাইকে যূথবদ্ধ হয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে, তেমনি দুর্নীতির বিরুদ্ধেও মানুষকে জেগে উঠতে হবে। একই সঙ্গে প্রচেষ্টা চালাতে হবে, আত্মঘাতী-সমাজঘাতী উগ্রপন্থা থেকে বিপথগামীদের আদর্শিকভাবে সরিয়ে আনার। আমরা জানি, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় এই লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল এবং এর সাফল্যও দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। বাংলাদেশেও আমরা সাধারণ মানুষের মধ্যে জঙ্গিবাদবিরোধী মানসিকতা তৈরি হতে দেখেছি। এমন নজিরও আছে, নিহত জঙ্গিদের কোনো কোনো পরিবার তাদের লাশ গ্রহণে অনাগ্রহ প্রকাশ করায় তাদের কবর দেওয়া হয়েছে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে। আমরা মনে করি, সামাজিক ও পারিবারিকভাবে সমাজবিরোধী, মানবতাবিরোধী, অশুভ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে এও আশাব্যঞ্জক জাগরণ। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা ক-কদম ইতোমধ্যে এগোতে পারলাম- এর চেয়েও বড় প্রশ্ন হচ্ছে, এই ব্যাধির বিরুদ্ধে গণজাগরণ কতটা ঘটেছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের শূন্যসহিষ্ণুতার যে অঙ্গীকার রয়েছে, এর বাস্তবায়নে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকটি আইনি সংস্থার সম্মিলিত প্রয়াসের কোনো বিকল্প নেই। আমরা এও মনে করি, কেবল দুর্নীতির ডাল-পালা কাটলে হবে না, শিকড় উপড়ে ফেলার পথ ধরতে হবে। সাম্প্রতিককালে জঙ্গি সংগঠনগুলোর আপাতদৃষ্ট সাফল্য না থাকলেও তারা যে নিস্ক্রিয় নেই, এই সত্য অস্বীকার করার অবকাশও কম। জঙ্গি দমনে সরকারের সাফল্য আছে বটে, কিন্তু তাতে আত্মতৃপ্তির সুযোগ নেই। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যেমন সতর্ক-সজাগ দৃষ্টি রাখার পাশাপাশি প্রয়োজনের নিরিখে সাঁড়াশি অভিযান চালানোর বিষয়টি আমলে রাখতে হবে, তেমনি দুর্নীতির বিরুদ্ধেও সরকারের দায়িত্বশীল প্রত্যেকটি সংস্থার মনোভাব থাকতে হবে চিরুনি অভিযানের। সরকার, রাজনৈতিক- সামাজিক শক্তি এই ত্রয়ীর মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে একাট্টা হতে হবে। সরকারকে যদি শুভবোধসম্পন্ন সবাই সহযোগিতা করেন এবং এসব ব্যাপারে রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে প্রত্যাশিত ফল মিলবেই।
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা