× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পাহাড়ে নজরদারি আরও বাড়ান

সম্পাদক

প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৩ ১১:২৩ এএম

আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২৩ ১১:২৮ এএম

পাহাড়ে নজরদারি আরও বাড়ান

কক্সবাজারের টেকনাফের গহিন পাহাড়ের আড়ালকে সমাজবিরোধী অপশক্তি যেন নিরাপদ আস্তানা মনে করছে। একই সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার পাহাড়ের বিভিন্ন অংশও যেন জঙ্গিসহ সন্ত্রাসীদের নির্ভয় আস্তানায় পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার দুর্গম পাহাড়েও জঙ্গি আস্তানার সন্ধান একই সাক্ষ্য দেয়। আমরা জানি, কক্সবাজারের টেকনাফ এবং পার্বত্য চট্টগামের গহিন পাহাড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চলছে। বান্দরবানের পাহাড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় সেনাসদস্যের প্রাণহানির ঘটনা দূর অতীতের নয়। ১৮ আগস্ট সন্ধ্যার পর থেকে ১৯ আগস্ট ভোর পর্যন্ত টেকনাফের রঙ্গিখালী পশ্চিমের গহিন পাহাড়ে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামসহ ৬ জনকে আটক করে। ২০ আগস্ট প্রতিদিনের বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রতিবেদনে র‌্যাবের বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের আস্তানা ও অস্ত্র তৈরির নতুন কারখানার সন্ধান মেলে।

কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে প্রায়ই অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহারে হতাহতের খবর সংবাদমাধ্যমে উঠে আসছে। তা ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য পৈশাচিক নির্যাতন চালায় এও সংবাদমাধ্যমের সাম্প্রতিক খবর। চাহিদামতো মুক্তিপণ না পাওয়ায় ইতোমধ্যে কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে এই তথ্যও মিলেছে আটককৃত সন্ত্রাসীদের জবানিতেই। টেকনাফ, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনী নজরদারি কঠোর করেছে এবং এ ব্যাপারে তারা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। কুলাউড়ার দুর্গম পাহাড় থেকে জঙ্গিগোষ্ঠীর অনেককে আটক করার মধ্য দিয়ে তা প্রতিভাত হয়। টেকনাফের গহিন পাহাড় থেকে সর্বশেষ উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও কারাখানার সন্ধান এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে একই সঙ্গে এই বার্তাও পাওয়া গেল, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর অভিযানের পরও সন্ত্রাসীরা নিষ্ক্রিয় নয়। টেকনাফের পাহাড়ে অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধানের খবরটি ইতিবাচক হলেও বিষয়টি যে চাঞ্চল্যকর তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা ইতিবাচক বলছি এই অর্থে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সতর্ক অনুসন্ধানী নজর যদি না থাকত, তাহলে দুর্গম পাহাড়ের আড়ালে অবৈধ অস্ত্রের কারখানার সন্ধান মিলত না। আর চাঞ্চল্যকর বলছি এ কারণে, সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর কঠোর নজরদারির বিষয়টি অজ্ঞাত না হওয়া সত্ত্বেও তারা তাদের গোপন অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছে।

আমরা প্রত্যাশা করি, র‌্যাবসহ অন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সদস্যরা যেভাবে অস্ত্র কারখানার সন্ধান, অস্ত্র উদ্ধার ও সশস্ত্র সন্ত্রাসী-জঙ্গিদের আটকে সফলতা দেখিয়েছেন, একইভাবে নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করতেও তারা সফল হবেন। সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী আমরা অজ্ঞাত নই যে, কক্সবাজারের টেকনাফ অঞ্চলে রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির ঘিরে গড়ে উঠেছে নতুন নতুন অপরাধী চক্র। তাদের অনেকেই মাদক ও আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেÑ এও সংবাদমাধ্যমেরই পুরোনো খবর। জঙ্গি কিংবা উগ্রবাদীদের দমনে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দৃশ্যমান সাফল্য কম নয় বটে, কিন্তু সম্প্রতি সমতল ছেড়ে দেশের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকাকে তারা বেছে নিয়ে আস্তানা গেড়ে জানান দিচ্ছে, উগ্রবাদী কার্যক্রমে ভাটা পড়লেও তা বন্ধ হয়নি। টেকনাফের রোহিঙ্গা শিবির ঘিরে গড়ে ওঠা অপরাধী চক্রের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ফল আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে দীর্ঘস্থায়ী এবং বহুমাত্রিক বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এসব সন্ত্রাসীকে যেমন গ্রেপ্তার করতে হবে, তেমনি এর নেপথ্যে কেউ কলকাঠি নাড়ছে কিনাÑ তাও খতিয়ে দেখতে হবে। কারণ ইতোমধ্যে সংবাদমাধ্যমেই জানা গেছে, রোহিঙ্গা শিবিরের সন্ত্রাসীদের সঙ্গে ওই অঞ্চলের পাহাড়ি এলাকার সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের যোগসূত্র রয়েছে। কক্সবাজারের টেকনাফের গহিন পাহাড়ে নতুন করে অস্ত্র তৈরির কারখানা ও সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের যে আস্তানার সন্ধান পেল র‌্যাবের সঙ্গে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থী বিপথগামীদের কোনো যোগসূত্র আছে কিনাÑ এ ব্যাপারে অনুসন্ধান জরুরি বলে আমরা মনে করি।

পাহাড়ে কিংবা অন্য কোনো নির্জন অঞ্চলে এমন আরও আস্তানা রয়েছে কিনাÑ এ জন্যও গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানোর তাগিদ আমরা দিই। গোয়েন্দা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সফলতার জন্য আমরা তাদের সাধুবাদ জানাই, তবে একই সঙ্গে এ কথাও স্মরণ করিয়ে দিতে চাইÑ এসব ব্যাপারে আত্মতুষ্টির কোনো অবকাশ নেই। আমাদের অভিজ্ঞতায় আছে, নির্বাচন বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসে সমাজবিরোধী চক্রও ততই সক্রিয় হয়ে ওঠে। সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ডের নতুন ক্ষেত্রের সম্প্রতি সন্ধান যেহেতু মিলছে পাহাড়ি অঞ্চলেই তুলনামূলক বেশি; সেহেতু টেকনাফ, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সব পাহাড়ি এলাকায় অনুসন্ধান অব্যাহত রাখা জরুরি।

 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা