× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

প্রজন্মের ভাবনা

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের আত্মহত্যাপ্রবণতা

আফসানা সাথী

প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:১৬ এএম

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের আত্মহত্যাপ্রবণতা

সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আত্মহত্যার খবর অহরহই দেখতে পাওয়া যায়। যান্ত্রিক জীবনে অভ্যস্ত মানুষের আত্মহত্যার প্রবণতা দেখলে জীবনানন্দের সেই প্রশ্নটিই করতে হয়, ‘তবে সে দেখিল কোন ভূত?’ সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যা নিয়ে উদ্বেগ-শঙ্কা-আতঙ্ক কাজ করছে। দিন কয়েক আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজের জয়া কুণ্ডু নামে একজন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। এর কিছুদিন পর আত্মহত্যা করেছেন ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ঋতু কর্মকার নামে আরেক শিক্ষার্থী। নিজ ক্যাম্পাসেরই সহপাঠীর মৃত্যুর এ খবর অন্যদের নাড়া দেবে এমনটাই স্বাভাবিক। তবে শিক্ষার্থীদের এমন আত্মহত্যাপ্রবণ হওয়ার পেছনে দায়ী আসলে কে বা কী? একাডেমিক ব্যর্থতা, প্রেমে ব্যর্থতা, নাকি একেবারেই ভিন্ন কোনো কারণে এ সমস্যা বাড়ছে? অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিজের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে শঙ্কা থেকেই অনেকে আত্মহত্যা করেন।

প্রবল প্রতিযোগিতা পাড়ি দিয়ে একজন শিক্ষার্থী সরকারি ভালো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর বাবা-মা তাকে নিয়ে আরও বড় স্বপ্নে বুক বাঁধেন। এ স্বপ্ন আর বাস্তবতার বিচ্যুতি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার পেছনের অন্যতম কারণএই অভিমত অনেকের। আমাদের সনাতন সমাজব্যবস্থায় সাফল্য ও স্বপ্নের বিষয়টি আরোপিত। এখানে কারও জীবনের লক্ষ্য দেখানোর কাজ অভিভাবকরা করেন না। বরং তাদের ওপর লক্ষ্য আরোপ করা হয়। শিক্ষার্থীদের সরকারি চাকরি পাওয়ার যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা তার পেছনে সমাজের আকাঙ্ক্ষার চাপ রয়েছে। এখন অনেক বাবা-মা সন্তানকে ভালো কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেন। পাশাপাশি এক্সট্রা ক্যারিকুলামের কোনো অ্যাকটিভিটিতে যুক্ত করে দেন, যাতে সন্তান ভবিষ্যতে অস্তিত্বের সংকটে না ভোগে। অভিভাবকদের সনাতন ধারণা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এমনকি সামাজিক পর্যায়েও আত্মহত্যা নিয়ে সচেতনতা ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কাউন্সেলিং চালু করতে হবে।

ঢামেক শিক্ষার্থী জয়া বা ঢাবি শিক্ষার্থী ঋতু কারওই আত্মহত্যার নেপথ্যের কারণ জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তারা উভয়েই জীবন নিয়ে চরম হতাশা থেকে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন, দুজনই সফলতার চূড়ান্ত পর্যায়ে অবস্থান করেও সমাজের চোখে ছিলেন সফলতা থেকে বহু দূরে। এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, সারা দেশে ২০২২ সালে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ৫৩২ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। এর মধ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৮৬ শিক্ষার্থী রয়েছেন। আশার কথা হলো, সরকারের নানা পদক্ষেপের কারণে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে। এর মধ্যে একটি হলো মানসিক স্বাস্থ্য আইন প্রণয়ন। এ ছাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য ‘মানসিক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক ফার্স্ট এইড (পার্ট-১)’ নামে একটি অনলাইন প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। 

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্যনীতি-২০২২-এর গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। প্রতি জেলায় প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য একজন করে মনোবিদ নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা প্রক্রিয়াধীন। ২০২৩ সালে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা’ বইটিতে মনের যত্ন নেওয়ার একটি অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা তরুণ প্রজন্মকে মানসিকভাবে তৈরি হতে সহায়তা করতে পারে। এ ছাড়া আত্মহত্যা ঠেকাতে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মূল্যবোধ ও পারিবারিক সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাতে হবে।

  • শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা