× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পরিপার্শ্ব

আগাছানাশকের ভালোমন্দ

রত্না খাতুন

প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৪:১৪ পিএম

আগাছানাশকের ভালোমন্দ

যেকোনো ফসলের সঙ্গে আগাছার সম্পর্ক প্রাচীন। আগাছা হচ্ছে অনাকাঙ্ক্ষিত, সমস্যা সৃষ্টিকারী বা অনিষ্টকারী উদ্ভিদ; যা বপন বা লাগানো ছাড়াই অতিমাত্রায় নিজে থেকে জন্মায়। আগাছা জলজ, স্থলজ, আরোহী ও উভচর ইত্যাদি শ্রেণির হয়ে থাকে। এরা দ্বিবীজপত্রীভুক্ত। আগাছা সাধারণত প্রতিযোগী, অদম্য স্বভাবের এবং অধিক বংশবিস্তারে সক্ষম। এদের জীবনচক্র স্বল্পমেয়াদের। একই উৎস থেকে উৎসারিত হলেও বিবর্তনের নানা মোড়ে কিছু উদ্ভিদ ফসল আর কিছু আগাছা হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। সম্পর্কটা জিনগত হওয়ায় সহজে কেউ কাউকে ছেড়ে যেতে পারে না। প্রকৃতিতে এ সম্পর্ক অস্বাভাবিক না হলেও ফসলের মাঠে আগাছা বড় শত্রু। আগাছার কারণে ফসলের ক্ষতি হয় এবং উৎপাদনশীলতা কমে। ফলে ফসল আবাদের আগে জমির প্রস্তুতির অন্যতম লক্ষ্য জমি আগাছামুক্ত রাখা। ফসলের বীজ বুনে বা চারা রোপণ করে দিয়ে যেসব পরিচর্যা করতে হয় তা আসলে আগাছা দমনই। ফসলের মাঠ আগাছামুক্ত রাখা কৃষকের কাছে ফসল ফলাবার এক ধরণের চ্যালেঞ্জ। আগাছা নিয়ন্ত্রণ না করলে বাংলাদেশে গড় ৩৭.৩৩% ফসল নষ্ট হয়। খাদ্যশস্য ৩৩.১৬%, দানাশস্য ৪১.২৬%, ডালজাতীয় শস্য ৩১.৮৮%, তেলবীজ ৪০.৮২%, আঁশজাতীয় ফসল ৩৪.২৩% এবং ধান ৪০.২৮% উৎপাদন আগাছার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফসলের মাঠ আগাছামুক্ত রাখার নানা কৌশল আছে।

দেশে কৃষক এখনও রাসায়নিক আগাছানাশক ব্যবহারের ক্ষেত্রে দোকানির ওপর নির্ভরশীল এবং এমনটি টেকসই কৃষি ব্যবস্থাপনার জন্য উপকারী নয়। রাসায়নিক নিরাপত্তাজনিত প্রশিক্ষণ বাড়ানোর বিষয়ে তাই মনোযোগী হয়ে উঠতে হবে। পাশাপাশি ফসলি জমিতে ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। বর্ষাকালে আগাছা থেকে বাঁচতে হলে দ্রুত ফলন হয় এমন ফসলের চাষ বাড়ানোর বিষয়ে উৎসাহ বাড়াতে হবে। মৌসুম অনুযায়ী সব সময় চাষাবাদ করা উচিত। মৌসুম না থাকলেও জমি ফেলে রাখা উচিত নয়। তাতে আগাছা বাড়ার সুযোগ পায়। খুরপি দিয়ে আগাছা পরিষ্কার, জমি ভালো রাখার অন্যতম প্রাচীন উপায়। লাঙল, হুইল, উইডার, কালটিভেটর যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষতিকর আগাছা মাটিতে মিশিয়ে দেওয়াও এক রকম পদ্ধতি। একই জমিতে একই গোত্রীয় ফসল বারবার চাষ না করে আলাদা পরিবারভুক্ত ফসল চাষ করলে জমিতে আগাছার বৃদ্ধিও হ্রাস পায়। তাই শস্য আবর্তন খুবই জরুরি। প্রতি বছর একই জমিতে টমেটো, মরিচ, বেগুন জাতীয় সবজি চাষ না করে শিম্বী গোত্রীয় ফসল চাষ করা যেতে পারে। কিছু কিছু শাকজাতীয় স্বল্পমেয়াদি সবজির বীজ যেমন লালশাক, পুঁইশাক, পালংশাক, কলমি, মেথি ঘন করে বুনলে জমিতে আগাছার বিস্তার অনেকটা প্রতিরোধ করা যায়। কম সময় ব্যবধানে ও অগভীরভাবে জমি কর্ষণ করলে বা লাঙল দিলে বার্ষিক আগাছাগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। জমিতে মূল ফসলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সাথি ফসল চাষ করলে অনেকাংশে আগাছা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। যেমন বেগুন, টম্যাটো, বাঁধাকপি যেগুলোর সারি ও গাছ প্রতি ব্যবধান বেশি, সেখানে মুলা বা পালং জাতীয় সবজি অন্তর্বর্তী ফসল হিসেবে চাষ করা যাতে পারে। মটরের বীজ বপনের সময় কিছুটা বিলম্বিত করলে বথুয়া বা ক্যানারি ঘাস ইত্যাদি আগাছার থেকে অনেকাংশে রেহাই মেলে। বীজ বপন বা প্রতিস্থাপনের পর থেকেই সবজি ফসলে সুষম পুষ্টি সরবরাহ সম্ভবপর হলেও প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী সময়মতো রোগ-পোকা নিয়ন্ত্রণ করা গেলে গাছের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। স্বাস্থ্যবান চারাগাছ আগাছার বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলে।


  • বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা